সীমান্তে হত্যা মাদক ও অস্ত্র চোরাচালান রোধ প্রাধান্য পাবে বৈঠকে


ইউএনভি ডেস্ক:

বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ-বিজিবি ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ মহাপরিচালক (ডিজি) পর্যায়ে সীমান্ত সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক বৈঠক আজ শুরু হচ্ছে। বেলা পৌনে ১১টায় পিলখানায় বিজিবি সদর দফতরে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।


চার দিনব্যাপী সীমান্ত সম্মেলনের প্রথম দিন বুধবার আখাউড়া সীমান্তপথে বাংলাদেশে পৌঁছেছে বিএসএফের ডিজি রাকেশ আস্থানার নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল।

বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে বিজিবি ডিজি মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলামের নেতৃতে ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেবে। সীমান্ত সম্মেলনে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সীমান্ত হত্যা, অস্ত্র ও মাদক বিষয়ে প্রাধান্য দেয়া হবে বলে বিজিবি সূত্র জানায়।

বুধবার বেলা পৌনে ১টায় আখাউড়া-আগরতলা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট সীমান্তপথে বাংলাদেশে প্রবেশ করে বিএসএফের ডিজি রাকেশ আস্থানার নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল। জিরোপয়েন্টে বিএসএফ প্রতিনিধি দলকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান বিজিবির উত্তর-পূর্ব রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাকির হোসেন। এ সময় কুমিল্লার সেক্টর কমান্ডার কর্নেল এবিএম মহিউদ্দিন, সরাইল-২৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল ইকবাল হোসেনসহ বিজিবির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বিএসএফ ডিজি সীমান্ত থেকে সড়কপথে এসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সুলতানপুর-৬০ বিজিবি ব্যাটালিয়ন পরিদর্শন করেন। পরে সেখান থেকে বিজিবির হেলিকপ্টারে তাদের ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে অবতরণের পর বিজিবির ডিজি মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম বিএসএফ মহাপরিচালক রাকেশ আস্থানাকে অভ্যর্থনা জানান ও ফুল দিয়ে বরণ করেন। বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম বুধবার বিকালে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।

বিজিবির অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, ডিজি পর্যায়ের সম্মেলনে সীমান্তে হত্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার বিষয়টি প্রাধান্য পাবে। এছাড়া অস্ত্র ও মাদক পাচার বন্ধের বিষয়টিও প্রাধান্য পাবে। বিজিবির একজন কর্মকর্তা বলেন, সীমান্ত হত্যা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

বৈঠকে অবৈধ অস্ত্র, মাদক এবং মানবপাচার বন্ধের ব্যাপারেও আলোচনা হবে। উভয় দেশের সীমান্ত ব্যবস্থাপনা আরও উন্নয়নের জন্য বৈঠকে আলোচনা হবে।

বিজিবির পরিচালক (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফয়জুর রহমান বলেন, সীমান্তে হত্যার যেকোনো ঘটনার পরে ‘আমরা সর্বস্তরে আলোচনা শুরু করি’ এর পরে বাংলাদেশ বরাবরই সীমান্তে সহিংসতায় বেশি গুরুত্ব দেয়। যেখানে উভয়পক্ষ পারস্পরিক স্বার্থের পাশাপাশি দুই সীমান্ত বাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক আরও উন্নয়নের উপায় নিয়ে আলোচনা করবে।

নয়া দিল্লি সূত্র জানিয়েছে, বিএসএফের পক্ষ থেকে আলোচনায় গবাদিপশু পাচার, মুদ্রা ও মানবপাচার বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় সম্মেলনের যৌথ আলোচনার দলিল স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে ডিজি পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলন শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

সম্মেলনে বাংলাদেশের পক্ষে ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দলে বিজিবির অতিরিক্ত মহাপরিচালকরা ও বিজিবি সদর দফতরের সংশ্লিষ্ট স্টাফ অফিসাররা ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, যৌথ নদী কমিশন এবং ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রতিনিধিত্ব করবেন।

ছয় সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধি দলে বিএসএফ সদর দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং ভারতের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।

এর আগে ছয় দিনব্যাপী সীমান্ত সম্মেলনের পূর্বনির্ধারিত সময়সূচি আনুযায়ী ১৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পিলখানা বিজিবি সদর দফতরে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বিএসএফ প্রতিনিধি দল না আসতে পারায় বৈঠকটি স্থগিত হয়।

৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকা টু নয়াদিল্লি-কলকাতা টু ঢাকা সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ থাকায় বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলনে যোগদানের জন্য বিএসএফ প্রতিনিধি দল তাদের নিজস্ব এয়ার ক্রাফট নিয়ে ঢাকায় আসার সিদ্ধান্ত ছিল।

কিন্তু চূড়ান্ত সময়ে বিএসএফের এয়ার ক্রাফটের কারিগরি সমস্যার কারণে বিএসএফ প্রতিনিধি দল রোববার ঢাকায় আসতে পারেনি বলে সম্মেলন স্থগিত হয়। পরে আবার ১৬ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৈঠকের নতুন সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়।


শর্টলিংকঃ