উচ্চ মাধ্যমিকেও ভালো করলেন অদম্য রকি


আমানুল হক আমান, বাঘা:
দুই হাতের কবজি দিয়ে লিখে এইচএসসি পরীক্ষায় সেই রকি আহম্মেদ জিপিএ ৪.২৫ পেয়েছে। গতকাল বুধবার (১৭ জুলাই) প্রকাশিত ফলাফলে তিনি জিপিএ ৪.২৫ অর্জন করে। রকি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌরসভার গোচর গ্রামের আকছেদ আলীর ছেলে। তার পুরো নাম মেহেদী হাসান রকি।


চলতি বছরের এপ্রিল মাসে অনুষ্ঠিত হওয়া আড়ানী আলহাজ্ব এরশাদ আলী ডিগ্রী মহিলা কলেজ কেন্দ্রের ৩০২ নম্বর কক্ষের এইচএসসি পরীক্ষা দেয় রকি। রকি প্রতিবন্ধী হয়েও জীবন থেমে নেই। সে শিক্ষা গ্রহন করে প্রসাশনিক কর্মকর্তা হতে চায়। মেহেদী হাসান রকি জন্মগত প্রতিবন্ধী। কিন্তু তার বাবা-মায়ের প্রচেষ্টায় প্রতিবন্ধী হয়েও সে সকল কাজে সফলভাবে গড়ে উঠছে। রকির দু’টি হাত থাকলেও সাধারণ মানুষের চেয়ে অনেকাংশে ছোট এবং আঙ্গুল বিহীন।

তার আঙ্গুল বিহীন ছোট হাত দ্বারা সব ধরনের কাজ করতে সক্ষম হয়। রকি আড়ানী মনোমোহীনি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ২০১৭ সালে এসএসসি পাশ করে আড়ানী ডিগ্রী কলেজে মানবিক বিভাগে ভর্তি হয়। সে দ্বিতীয় শ্রেণী হতে একাদশ শ্রেণি পর্যন্ত লেখা-পড়ায় ভাল রেজাল্ট করে আসছে। রকি পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে জিপিএ-৫ পেয়েছিল।

এ বিষয়ে আড়ানী ডিগ্রী কলেজের উপাধ্যক্ষ শেখ সামসুদ্দিন বলেন, রকি প্রতিবন্ধী হলেও তার মেধা অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীদের চেয়ে অনেক বেশি। তার হাতের লেখাও ভাল। রকি লেখা পড়ার পাশাপাশি সব ধরনের খেলাধুলা, বাই-সাইকেল চালানো ছাড়াও অন্যান্য কাজ নিজে করতে পারে তার পঙ্গু হাত দিয়ে।
মেহেদী হাসান রকি বলেন, আমি অতি দরিদ্র পরিবারের ছেলে তাই আমি চাই লেখা-পড়া শিখে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হয়ে পিতা মাতার দরিদ্র সংসারকে স্ব-নির্ভর করে গড়ে তুলব। আমি সকলের কাছে এই দোয়া কামনা করছি।

রকির পিতা আকছেদ আলী বলেন, আমার চার সদস্যের পরিবার এরমধ্যে রকি বড় ছেলে। আমার পিতা আব্দুল জলিল উদ্দিনের কাছে থেকে দুই বিঘা জমি পেয়েছি। এই জমিতে কাজ করে যা আয় হয় তা দিয়ে কোন রকম সংসার চলে। এছাড়া ছেলের লেখা-পড়ার খরচ চালাতে কষ্ট হয়। এখন এইচএসসি পাশ করলো। ভালো কলেজে ভর্তি করারমতো আমার সামর্থ নেই। কি করবো ভেবে পাচ্ছিনা।

রকির মাতা ছবিলা বেগম বলেন, আমার আরেকটি আরফিন আফতান রাহাত নামের পুত্র সন্তান রয়েছে। তাকে নিয়ে কোন রকম দিন পার করছি।
গ্রহণ করা হয়েছে।


শর্টলিংকঃ