৪৫ নৌকা প্রার্থীর কপাল পুড়ছে সোহেল সানি


ইউএনভি ডেস্ক:

আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের শরিকদের মধ্যে কত সংখ্যক আসনের ভিত্তিতে সমঝোতা হচ্ছে? অর্থাৎ শেষমেশ কতজন নৌকার প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে সরে আসতে হবে? এখন এ প্রশ্নটাই ঘুরপাক খাচ্ছে সংশ্লিষ্ট দলগুলোর নেতা-কর্মীদের মধ্যে। বড় ধরনের কোনো নাটকীয়তা না ঘটলে জাতীয় পার্টি ও শরিক দলগুলোকে আওয়ামী লীগ ৪৫টি আসন ছেড়ে দিতে পারে।

এ ক্ষেত্রে ৩৫টি আসন পেতে পারে জাতীয় পার্টি। ওয়ার্কার্স পার্টি দুটি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) একটি, তরীকত ফেডারেশন একটি, আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর জাতীয় পার্টি (জেপি) দুটি এবং অন্য দু-একটি দলকে এক থেকে দুটি আসন ছাড় দেওয়ার আলোচনা রয়েছে।

এ ছাড়া নির্বাচনে অংশ নেওয়া কল্যাণ পার্টিকে একটি, বিএনএফ এবং তৃণমূল বিএনপিকে দুটি আসন ছাড় দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এসব আসন ছেড়ে দেওয়ার ফলে যারা নৌকা পেয়েছেন তাদের কপাল পুড়বে। এর সংখ্যা দাঁড়াতে পারে ৪৫।
বর্তমান একাদশ সংসদে ১৪ দলের শরিকদের মধ্যে প্রতিনিধিত্ব আছে ওয়ার্কার্স পার্টির তিনটি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) তিনটি এবং তরিকত ফেডারেশন ও জাতীয় পার্টির (জেপি) একটি করে।

আটটি আসন রয়েছে তাদের। আওয়ামী লীগ এবং অন্যান্য দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আসন ভাগাভাগি মোটামুটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। এদিকে শুরু থেকেই আওয়ামী লীগ বলে আসছে- তারা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায়। প্রায় ২৯টি দল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।

বিএনপি না থাকায় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে অনেক হিসাব-নিকাশ করতে হচ্ছে আওয়ামী লীগকে। কোন দল বিরোধী দল হিসেবে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করবে, সে হিসাবটাও মাথায় রাখছেন তারা। আসন বণ্টন নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় ১৪ দলীয় জোটের শরিকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনাও হয়েছে। এই শরিক দলগুলোকে পাঁচ-ছয়টি আসন দেওয়া হতে পারে।

যেসব আসনে তাদের প্রার্থী করা হবে, সেখানে নৌকার প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করবেন।

মনোনয়ন বোর্ডের এক প্রবীণ সদস্য বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, জাতীয় পার্টির সঙ্গেও আলোচনা চলছে। তাদের সঙ্গে সমঝোতা হলে, সংশ্লিষ্ট আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করবেন, না ডামি ক্যান্ডিডেট হিসেবে থাকবেন, তা আলোচনার ভিত্তিতে সমাধান হবে। এখন চলছে চূড়ান্ত দেন-দরবার। সে ক্ষেত্রে ৪৫-৪৬টি আসন আমাদের ছাড় দিতে হতে পারে। আওয়ামী লীগ ৩০০ আসনের মধ্যে দুটি ফাঁকা রেখে ২৯৮ আসনে দলীয় মনোনয়ন দিলে শরিকদের মধ্যে টানাপড়েন শুরু হয়। যদিও ইতোমধ্যে ছয়টি আসনে নৌকার প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এদিকে আওয়ামী লীগ সূত্র থেকে জানা গেছে, ১৪ দলীয় জোটের শরিকদের পাঁচটি আসনে ছাড় দেবে- এমন আভাস দেওয়া হয়েছে দলের পক্ষ থেকে।
এই পাঁচটির মধ্যে কুষ্টিয়া-২ আসনে প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লীগ। এ আসনে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুই যে লড়বেন- কোনো সন্দেহ নেই। ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বরিশাল-২ এবং বরিশাল-৩ আসন থেকে। মেনন অবশ্য বরিশাল-২ আসনে স্থির থাকতে চান বলে জানা গেছে। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মোহাম্মদ শাহে আলমের স্থলে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুসকে নৌকা দেওয়া হয়। তালুকদার মো. ইউনুস বরিশাল-১ আসনে নবম এবং বরিশাল-২ আসনে দশম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হয়েছিলেন। ঢাকা-৮ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেননের স্থলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম নৌকার প্রার্থী। স্বভাবতই মেননকে বরিশাল থেকে প্রার্থী হতে হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে বরিশাল-২ আসনে তাকে নৌকা দেওয়া হলে তালুকদার মো. ইউনুসকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে হবে। মেনন ইতোমধ্যেই বলেছেন, নৌকা প্রতীকটি এখন ১৪ দলের হয়ে উঠেছে। কুষ্টিয়া-২ আসনের সংসদ সদস্য জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুও বলেছেন, নৌকা প্রতীক এখন একটি বাস্তবতা।

এদিকে জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু লড়তে চান পিরোজপুর-২ আসন থেকে। কিন্তু এ আসনে দলীয় নেতা কানাই লাল বিশ্বাসকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। সূত্র বলছে, শেষ পর্যন্ত এ আসনের ক্ষেত্রেও আওয়ামী লীগকে উদারতা দেখাতে হচ্ছে। তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি চান চট্টগ্রাম-২ আসন। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী খাদিজাতুল আনোয়ার। তাকেও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে হতে পারে। নৌকা চান বাসদ আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খানও।

জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার ফেনী-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য। তিনি আবারও নৌকায় চড়তে চান। কিন্তু এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম। শিরিন আখতারকে নৌকা দিতে নারাজ আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। শিরিন আখতারকে সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য করা যেতে পারে, বলছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। এ ছাড়া কক্সবাজার-১ আসনে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের মনোনয়পত্র বৈধ হয়েছে। এ আসনটিতে সমঝোতা হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানা যায়। এদিকে বর্তমান একাদশ জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সংখ্যা ২৩। দ্বাদশ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচন করলেও আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ৩৫টি আসনে ছাড় পেতে চাচ্ছে। এতে এসব আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করলেও তাদের ডামি ক্যান্ডিডেট হিসেবে রাখা হতে পারে। যদিও ফাঁকা রাখা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন। এ আসনে জাতীয় পার্টির বর্তমান এমপি এ কে এম সেলিম ওসমানকেই দেওয়া হবে। বর্তমানে জাতীয় পার্টির ২৩টি আসনের মধ্যে অন্তত ২২ জন নৌকার মাঝিকে সমঝোতার বলি হতে হবে।

আওয়ামী লীগ মনোনীত এসব প্রার্থী হলেন- ঢাকা-৪ সানজিদা খানম, ঢাকা-৬ মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, নারায়ণগঞ্জ-৩ আবদুল্লাহ আল-কায়সার, সুনামগঞ্জ-৪ মোহম্মদ সাদিক, ফেনী-৩ মো. আবুল বাশার, চট্টগ্রাম-৫ মোহাম্মদ আবদুস সালাম, ঠাকুরগাঁও-৩ মো. ইমদাদুল হক, নীলফামারী-৩ মো. গোলাম মোস্তফা, নীলফামারী-৪ মো. জাকির হোসেন বাবুল, লালমনিরহাট-৩ মো. মতিয়ার রহমান, রংপুর-১ মো. রেজাউল করিম রাজু, রংপুর-৩ তুষার কান্তি মন্ডল, কুড়িগ্রাম-২ মো. জাফর আলী, গাইবান্ধা-১ আফরোজা বারী, বগুড়া-২ তৌহিদুর রহমান মানিক, বগুড়া-৩ মো. সিরাজুল ইসলাম খান রাজু, সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) ফিরোজ আহমেদ স্বপন, সাতক্ষীরা-২ (সদর) আসাদুজ্জামান বাবু, বরিশাল-৪ শাম্মী আহমেদ, বরিশাল-৬ আবদুল হাফিজ মল্লিক, পিরোজপুর-৩ মো. আশরাফুর রহমান, ময়মনসিংহ-৪ মোহাম্মদ মোহিত উর রহমান, ময়মনসিংহ-৮ মো. আবদুছ ছাত্তার, কিশোরগঞ্জ-৩ মো. নাসিরুল ইসলাম খান প্রমুখ। উল্লিখিত আওয়ামী লীগ নেতাদের নৌকার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে হবে।

আর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করলেও তাদের ডামি ক্যান্ডিডেট হিসেবে থাকতে হবে। বর্তমান সংসদে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা হলেন- রংপুর-১ মো. মসিউর রহমান রাঙ্গা, রংপুর-৩ রাহগির আল মাহি এরশাদ (সাদ এরশাদ), কুড়িগ্রাম-২ পনিরউদ্দিন আহমেদ, গাইবান্ধা-১ শামীম হায়দার পাটোয়ারি, বগুড়া-২ শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ, বগুড়া-৩ মো. নুরুল ইসলাম তালুকদার, ঠাকুরগাঁও-৩ হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, নীলফামারী-৩ রানা মোহাম্মদ সোহেল, নীলফামারী-৪ আহসান আদেলুর রহমান, লালমনিরহাট-৩ গোলাম মোহাম্মদ কাদের, বরিশাল-৪ গোলাম কিবরিয়া টিপু, বরিশাল-৬ নাসরিন জাহান রত্না, পিরোজপুর-৩ মো. রুস্তুম আলী ফরাজী, ময়মনসিংহ-৪ রওশন এরশাদ, ময়মনসিংহ-৮ ফখরুল ইমাম, কিশোরগঞ্জ-৩ মো. মুজিবুল হক, ঢাকা-৪ সৈয়দ আবু হোসেন, ঢাকা-৬ কাজী ফিরোজ রশিদ, নারায়ণগঞ্জ-৩ লিয়াকত হোসেন খোকা, নারায়ণগঞ্জ-৫ এ কে এম সেলিম ওসমান, সুনামগঞ্জ-৪ পীর ফজলুর রহমান, ফেনী-৩ মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৫ আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ স্বপন। আসনটিতে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ দিদার বখতকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।

সাতক্ষীরা-২ (সদর আসন) থেকে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান (পদত্যাগ) আসাদুজ্জামান বাবু। এ আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হয়েছেন সাতক্ষীরা জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক, ব্যবসায়ী ও ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব আশরাফুজ্জামান আশু। জাতীয় পার্টির সঙ্গে প্রকাশ্যে না হলেও গোপনে আসন সমঝোতা নিয়ে আলাপ-আলোচনা অব্যাহত রেখেছে আওয়ামী লীগ। জাতীয় পার্টি এবার নির্বাচনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। জাতীয় পার্টি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে না থাকে তাহলে এ নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতার সংকটে পড়বে। এটা ভালো মতোই বুঝতে পেরেছে জাতীয় পার্টি। আর তাই তাদের আবদারের শেষ নেই। প্রকাশ্যে তারা বলছে, তারা সরকারের সঙ্গে কোনো সমঝোতা বা আসন ভাগাভাগির মধ্যে নেই। নিজেদের শক্তিতে তারা নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু গোপন আলাপ-আলোচনায় তারা অন্তত ৩০টি আসনে ছাড় চাইছে আওয়ামী লীগের কাছে।

জাতীয় পার্টির শর্ত হলো- যেসব আসনে জাতীয় পার্টিকে ছাড়তে হবে সেসব আসনে নৌকা প্রতীকের কোনো প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। শুধু তাই নয়, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে যারা শক্তিশালী তাদেরও বসিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বসানোর ব্যাপারে আওয়ামী লীগ এখন পর্যন্ত কোনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। আওয়ামী লীগ ২০টি আসন জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিতে রাজি। কিন্তু জাতীয় পার্টি চায় আরও বেশি। তবে যেসব আসন নিয়ে জাতীয় পার্টির সবচেয়ে বেশি আগ্রহ তার মধ্যে পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবং যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান সালমা ইসলামের দুটি আসন অন্যতম। সালমা ইসলাম জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবং নারী কোটায় এমপি। তিনি ঢাকা-১ এবং ঢাকা-১৭ আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হয়েছেন। এরই মধ্যে তিনি মনোনয়নও জমা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে দুটি আসন ছেড়ে দিতে চায়। ঢাকা-৪ এবং ঢাকা-৬। এ দুটি আসনের একটিতে অর্থাৎ ঢাকা-৪ এ আওয়ামী লীগের প্রার্থী সানজিদা খানম। যদি জাতীয় পার্টির সঙ্গে সমঝোতা হয় তাহলে তিনি বসে যাবেন। ঢাকা-৬ সাঈদ খোকন। জাতীয় পার্টির সঙ্গে সমঝোতা হলে তারও প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবে আওয়ামী লীগ।

সে ক্ষেত্রে এ আসনে লড়বেন জাতীয় পার্টির সাবেক মন্ত্রী কাজী ফিরোজ রশীদ। তিনি বর্তমানে এ আসনের সংসদ সদস্য। জাতীয় পার্টি ঢাকা-১ অথবা ঢাকা-১৭ যে কোনো একটি আসন আওয়ামী লীগের কাছ থেকে চায়। যেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বসে যেতে হবে। ঢাকা-১ এ আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তিনি আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং নীতিনির্ধারকও বটে। ঢাকা-১৭ আসনে মোহাম্মদ আলী আরাফাত আওয়ামী লীগের প্রার্থী। তিনি চিত্রনায়ক ফারুকের মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে চমক দেখান। আওয়ামী লীগ দুজনের একজনকে ছাড়তে চায় না।

কিন্তু জাতীয় পার্টি এখন অনড় অবস্থানে রয়েছে। তাদের বক্তব্য ঢাকা-১ অথবা ঢাকা-১৭ যে কোনো একটি আসন ছেড়ে দিতে হবে। এর বাইরেও ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঁঠালিয়া) আসনে আওয়ামী লীগের আলোচিত প্রার্থী বিএনপির সাবেক নেতা মেজর (অব.) শাহজাহান ওমরের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইকালে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সালাহ উদ্দীন আহমদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) আসনে বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মামুনুর রশিদ কিরণের। বরিশাল-৪ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শাম্মী আহমেদ এবং কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনে নাসিরুল ইসলাম খান আওলাদেরও মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন আগামী ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর আর ভোট গ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি।


শর্টলিংকঃ