‘আমার কাছে হত্যাকারী একজন হত্যাকারীই,সন্ত্রাসী কেবল সন্ত্রাসীই’


সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর শের-ই–বাংলা হল থেকে আবরার ফাহাদ নামে একজন শিক্ষার্থীদের মরদেহ উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ফেসবুকের একটি স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

এদিকে পুলিশি তথ্যমতে তাকে পিটিয়ে হত্যার কথা ধারণা করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়। উক্ত হত্যার ঘটনায় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঘটনায় জড়িত সকলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইতোমধ্যেই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে হলের ১৯ ছাত্রলীগ নেতাকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, চলছে জিজ্ঞাসাবাদ।

এই ঘটনায় সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন নিহত শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ, মা রোকেয়া বেগম এবং ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ। এসময় বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির উপায় খুঁজতে আইনমন্ত্রীকে নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির উপায় খোঁজার জন্য আমি ইতিমধ্যে আইন মন্ত্রীকে নির্দেশনা দিয়েছি।’

শেখ হাসিনা আবরারের বাবা-মাকে বলেন, ঘটনা ঘটার পর কে কোন দলের তা দেখা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা কোন দলের তা আমি জানতে চাই না। আমার কাছে হত্যাকারী একজন হত্যাকারীই, সন্ত্রাসী কেবল সন্ত্রাসীই।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা যা হারিয়েছেন, তাতে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা আমার কাছে নেই। আমার দিকে দেখুন, এক রাতে আমি সবকিছু হারিয়েছি। নিকট আত্মীয় হারানোর ব্যথা আমি বুঝি।’

হত্যাকারীরা মানুষ নয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা কীভাবে তাকে হত্যা করতে পারে, যার সাথে তারা পড়াশোনা করছিল?’ ঘটনার পর পরই পুলিশকে সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তবে বুয়েটের কিছু শিক্ষার্থী ফুটেজ সংগ্রহে কেন বাধা দিচ্ছিল তা আমার কাছে পরিষ্কার নয়।’

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, বৈঠক কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনের পরই তাঁকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন আবরারের মা। এ সময় প্রধানমন্ত্রীও তাঁকে জড়িয়ে ধরে নির্ধারিত আসনে বসার পরিবর্তে সেখানেই বসে যান। এসময় আবরারের হত্যাকারীদের আটকে তড়িৎ ব্যবস্থা নেয়ায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আবরারের মা রোকেয়া খাতুন বলেন, “আপনি মায়ের আসনে থেকে ঘটনার পর হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে যে কঠোর ভূমিকা নিয়েছেন সে জন্য আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমার নেই।”


শর্টলিংকঃ