ঈশ্বরদীতে ট্রেনে হামলা: সাজাপ্রাপ্ত ৮ জনের আত্মসমর্পণ


কলিট তালুকদার, পাবনা:
১৯৯৪ সালে পাবনার ঈশ্বরদীতে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা ও আওয়ামীলীগ সভানেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে বহনকারী ট্রেনে গুলি-বোমা হামলা মামলার রায়ে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক ৮ আসামী আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। পরে তাদের জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত।  রোববার দুপুরে পাবনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থণা করেন আসামীরা। আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক রুস্তম আলী তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।


আসামীদের মধ্যে পাঁচজন যাবজ্জীবন ও তিনজন দশ বছর কারাদন্ডপ্রাপ্ত। এ নিয়ে সাজাপ্রাপ্ত মোট ৪০ জন আসামী জেলহাজতে রয়েছে। এ মামলায় এখনও পলাতক রয়েছে সাতজন। আর মারা গেছে পাঁচজন। পলাতকদের মধ্যে ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত জাকারিয়া পিন্টু এখনও পলাতক।

আত্মসমর্পণকারী আসামীরা হলেন, যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত ঈশ^রদীর পশ্চিমটেংরী পিয়ারাখালী গ্রামের আছির উদ্দিনের ছেলে আমিরুল ইসলাম ওরফে আমিন, পশ্চিমটেংরী ব্লাকপাড়া এলাকার মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে রবি, একই এলাকার মৃত পিয়ার আলীর ছেলে আজাদ হোসেন ওরফে খোকন, ব্লাকপাড়া পিয়ারাখালী এলাকার জালাল গার্ডের ছেলে মামুন, যুক্তিতলা গ্রামের মৃত জয়েন উদ্দিনের ছেলে আবুল কালাম এবং দশ বছর কারাদন্ডপ্রাপ্ত চরমিরকামারী গ্রামের মৃত জামাত আলী সরকারের ছেলে চাঁদ আলী, পশ্চিমটেংরী বাবুপাড়া এলাকার মহসিন রিয়াজীর ছেলে রনো, চরসাহাপুর গ্রামের মতিয়ার রহমান সরদারের ছেলে হুমায়ুন কবির ওরফে দুলাল।

এদের মধ্যে মৃত পিয়ার আলীর ছেলে আজাদ হোসেন ওরফে খোকন অন্য একটি মামলায় পুর্বে থেকে জেলহাজতে রয়েছেন। তিনিও এ মামলার যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত দুই নাম্বার আসামী।রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যঅডভোকেট আখতারুজ্জামান মুক্তা জানান, দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা রায়ের সার্টিফাই নকল কপি তুলে নির্ধারিত একমাসের মধ্যে উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারবেন।

আসামীপক্ষের আইনজীবি অ্যাডভোকেট মাসুদ খন্দকার জানান, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা আদালতের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। আসামীদের পক্ষে খুব শিগগির উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।উল্লেখ্য, ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দলীয় কর্মসূচিতে ট্রেনবহর নিয়ে খুলনা থেকে যাওয়ার পথে ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশনে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা বহনকারী ট্রেনে গুলি ও বোমা হামলা চালানো হয়।

গত ৩ জুলাই বুধবার দুপুরে এ মামলার রায় ঘোষনা করেন আদালতের বিচারক। রায়ে নয় জনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদন্ড পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিন বছর করে সশ্রম কারাদন্ড ২৫ জনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড তিন লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো দুই বছর করে সশ্রম কারাদন্ড ও ১৩ জনকে দশ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড ও এক লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছর করে সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেন।


শর্টলিংকঃ