এমপি হারুনের ৬ মাসের জামিন


শুল্কমুক্ত কোটায় আমদানি করা গাড়ি বিক্রির অভিযোগে দুদকের করা মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড প্রাপ্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিএনপিদলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদকে ছয় মাসের অন্তবর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।একই সঙ্গে বিচারিক আদালতে ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের সাজা স্থগিত করেছেন আদালত। সেই সঙ্গে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. শওকত হোসেনের একক বেঞ্চ তার জামিন মঞ্জুর করে এ আদেশ দেন।

আদালতে এদিন সাংসদ হারুনুর রশীদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও আইনজীবী সৈয়দ মিজানুর রহমান। সঙ্গে ছিলেন সাংসদ হারুনুর রশীদের স্ত্রী ও আইনজীবী সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়া। উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। অন্যদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, এক বছর তিন মাস জেল খাটার কারণে শুল্ক ফাঁকির অভিযোগে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সংসদ সদস্য ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুনুর রশীদকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি আপিল আবেদন শুনানির জন্য গ্রহণ করে ছয় মাসের জামিন দিয়েছেন। জরিমানার দণ্ড স্থগিত করে বিচারিক আদালতের নথি তলব করেছেন। আমরা এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করবো।

এর আগে গত ২১ অক্টোবর শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানি বিক্রির মাধ্যমে শুল্ক ফাঁকির অভিযোগে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সংসদ সদস্য ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুনুর রশীদকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের রায় দিয়ে কারাগারে পাঠান আদালত। পাশাপাশি তাকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ রায় দেন।

এ মামলায় আরও দুজনকে সাজা দেয়া হয়েছে। তারা হলেন- চ্যানেল নাইনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও ব্যবসায়ী এনায়েতুর রহমান ও গাড়ি ব্যবসায়ী ইশতিয়াক সাদেক। পলাতক আসামি এনায়েতুর রহমান বাপ্পীকে (এমডি, চ্যানেল ৯) ৪০৯ ও ১০৯ ধারায় দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ইশতিয়াক সাদেককে তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ৪০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।

রায় ঘোষণার পর এমপি হারুনকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়। এছাড়া পলাতক দুই আসামির বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করেন আদালত। এরপর হাইকোর্টে আপিল করেন হারুনুর রশীদের স্ত্রী অ্যাডভোকেট সৈয়দা আশিফা আশরাফি পাপিয়া।

চারদলীয় জোট সরকারের সময় ২০০৫ সালে যুক্তরাজ্য থেকে একটি হামার ব্র্যান্ডের গাড়ি শুল্কমুক্তভাবে ক্রয় করেন এমপি হারুন। গাড়িটি তিনি পরে আরেক আসামি ইশতিয়াক সাদেকের কাছে ৯৮ লাখ টাকায় বিক্রি করেন। এরপর সাদেক গাড়িটি চ্যানেল নাইনের এমডি বাপ্পির কাছে বিক্রি করেন।

নিয়ম অনুযায়ী শুল্কমুক্ত গাড়ি তিন বছরের মধ্যে বিক্রি করলে শুল্ক দিতে হয়, কিন্তু এমপি হারুন শুল্ক না দিয়ে বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, সংসদ সদস্য থাকাবস্থায় শুল্কমুক্ত গাড়ি এনে তা বিক্রির ঘটনায় হারুনুর রশীদসহ তিনজনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলা হয় ২০০৭ সালের ১৭ মার্চ। মামলার বাদী পুলিশের উপ-পরিদর্শক ইউনুস আলী। মামলাটি তদন্ত করে হারুনুর রশীদসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ওই বছরের ১৮ জুলাই আদালতে চার্জশিট দেন দুদকের সহকারী পরিচালক মোনায়েম হোসেন। আদালত অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে হারুনুর রশীদসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ২০ আগস্ট বিচার শুরু করেন আদালত।


শর্টলিংকঃ