খেজুর গুড় কারিগরদের প্রতারণায় চিনির চাহিদা বাড়ে ৬ গুন


আবু হাসাদ, পুঠিয়া:

রাজশাহীর পুঠিয়ায় কার্তিকের মাঝামাঝি থেকে মাঘ মাস পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন মাস চিনি বিক্রি বৃদ্ধি পায় অন্য সময়ের চেয়ে ৬ গুন বেশী। শীত মৌসুমে চিনির এই চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ী ডিলারের পাশাপাশি এক ডজন সাব ডিলারের আর্বিভাব ঘটে।

সচেতন মহল বলছেন, দীর্ঘদিন থেকে এই এলাকার খেজুর গুড়ের সুনাম রয়েছে দেশে-বিদেশে। কিছু অসাধু গুড় তৈরির কারিগররা বেশী লাভের আশায় খেজুরের রসে চিনি মিশিয়ে ভেজাল গুড় তৈরি করে তা বাজারজাত করেন। এতে করে সাধারণ ক্রেতারা প্রতারণার পাশাপাশি তাদের স্বাস্থ্য ঝুকির আশঙ্কা থাকে।

জানা গেছে, দেশে বেসরকারী একাধিক চিনি আমদানী ও প্রস্তুত কারকদের পরিবেশক হিসাবে পুঠিয়াতে রয়েছেন ৩ জন ডিলার। তাদের সাব ডিলার হিসাবে রয়েছেন ৩ জন ব্যবসায়ি। অপরদিকে প্রতি শীত মৌসুমের শুধমাত্র তিন মাসের জন্য অস্থায়ী ভাবে নতুন করে আরো ৪জন চিনির ডিলার ও ১০জন সাব ডিলার তাদের ব্যবসা শুরু করেন। বছরের ৯ মাস এই উপজেলা জুড়ে দৈনিক প্রায় ১৬ টন চিনির চাহিদা থাকে। আর শীত মৌসুমের তিন মাস সেই চাহিদা বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় দৈনিক প্রায় ৮০ টনে।

কমল সরকার নামে একজন ডিলার বলেন, এই অঞ্চলে শীত মৌসুমে চিনির চাহিদা বেড়ে যায় কয়েক গুন। যার কারণে দেশের অনেক চিনি তৈরির কারখানার মালিকরা চুক্তি মোতাবেক অস্থায়ী ডিলার দেন। আমরা স্থায়ী ভাবে তিনজন চিনির ডিলার আছি। আর আমারা চিনি গুলো কয়েকজন সাব ডিলারের মাধ্যমে বিক্রি করে থাকি। শীত মৌসুমে কেনো এতো চিনির চাহিদা বাড়ে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলতে পারবেন না বলে জানান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চিনির মৌসুমী সাব ডিলার বলেন, এখন চিনির চেয়ে খেজুর গুড়ের দাম দ্বিগুন হওয়ায় এই এলাকার প্রতিটি খেজুর গুড় তৈরির কারিগররা নিয়মিত চিনি কিনেন। এদের মধ্যে বেশীর ভাগ গুড় তৈরির কারিগররা খেজুরের রসে গড়ে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৫০ কেজি চিনি ব্যবহার করেন।

ঝলমলিয়া বাজারে খেজুরের গুড় বিক্রি করতে আসা আলী হোসেন নামের একজন বলেন, এবার শীত শুরুর আগেই বেশী লাভের আশায় অনেক গাছিরা খেজুরের গাছের রস আহরণের পুরো প্রক্রিয়া প্রায় শেষ করেছেন। তবে মেঘলা আকাশের কারণে শীত না পড়ায় এখনো তেমন রস আসছে না। তাই গাছিরা এই সামান্য রসের সাথে পর্যাপ্ত পরিমাণ চিনি মিশিয়ে খেজুরের গুড় তৈরি করা শুরু করেছেন।

আবার অনেকেই গত বছরের পুরোনো ‘র’ বা লালি, রং আর চিনির মিশ্রণে পাটালি গুড় তৈরি করছেন। তিনি আরো বলেন, গুড়ের রং ভালো হলে বাহির থেকে আসা পাইকাররা বেশী দামে কিনতে আগ্রহী হয়। তাই গুড়ের রং তৈরি করতে একটিু বেশী পরিমানে সোডা ও হাইড্রোজ দিতে হয়।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ বলেন, খেজুরের গুড়ে চিনি মেশানো বিষয়টি আমার জানা নেই। আপনি অফিসে আসেন স্বাক্ষাতে কথা বলবো।


শর্টলিংকঃ