গোদাগাড়ীর বয়ারমারী স্কুলের ভবন নদীর গর্ভে


শামসুজ্জোহা, গোদাগাড়ী:
বন্যার প্রভাবে পদ্মা নদীতে ভাঙ্গন দেখা দেওয়ায় রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার চর বয়ারমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েরর একটি বিল্ডিং নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বুধবার দিবাগত রাতে পদ্মার পানি কমতে থাকার সাথে সাথে আকস্মিকভাবে পদ্মার ভাঙ্গন দেখা দেই, ফলে বিদ্যালয়ে একটি ভবন নদীর গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এতে ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

গোদাগাড়ী উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৯ সালে স্থাপিত হয়। ২০০০-২০০১ অর্থ বছরে ১৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বিলিন হওয়া পাকা ভবনটি নির্মাণ করা হয়। পরে ২০১৫ সালে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি পিইডিপি-৩ এর আওতায় প্রায় ২ টাকা ব্যয়ে উর্দ্ধমুখী তিন তলা সম্প্রসারণ করা হয়। তবে এই ভবনটিও ঝুকির মধ্যে রয়েছে, যে কোন সময় নদীর ভাঙ্গনে ধ্বংশ হয়ে যেতে পারে।

চর বয়ারমারি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বজলুর রহমান জানান,এই বিদ্যালয়ে ইউনিয়নের হঠাৎপাড়া,হবিপাড়া,আমিনপাড়া,চর বয়ারমারী, আদর্শগ্রামের ২৬৯ জন শিক্ষার্থী লেখা পড়া করেন। দুই ভবনে মোট ৬ টি শ্রেণী কক্ষর মধ্যে ৩ টি শ্রেণী কক্ষ নদীর গর্ভে চলে যাওয়ায় ছেলে মেয়েদের লেখা পড়ার ক্ষতি হয়ে গেল। যে ভবনটি আছে সেটা টিকে কিনা অপেক্ষা মাত্র। এই বিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ না পেলে চর অন্ঞ্চলের কমলমতি শিশুরা শিক্ষা থেকে বন্ঞ্চিত হবে। কয়েক গ্রামের শিশুদের যেতে হবে ৩-৪ কিঃমিঃ দূরে। তাই যত দ্রুত সম্ভব বিদ্যালয়টি স্থান পরিবর্তন করে স্থাপন করা।

চর আষাড়িয়া দহ ইউপি চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ জানান, অব্যাহত ভাঙ্গনের কারণে পদ্মা নদীতে এই ইউনিয়নের দুটি গ্রাম,আবাদী জমি,গৃহপালিত পশুসহ অনেক কিছু নদীর গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। শেষে প্রায় স্কুলের কাছে চলে আসে বন্যার পানি ও ভাঙ্গন। কিন্তু বুধবার দিবাগত গভীর রাতে পদ্মার নদীর পানি কমতে থাকার কারণে ভাঙ্গন দেখা দেয়। মুহূর্তেই মধ্যেই পাকা ভবনটি নদীতে নামিয়ে নিয়ে চলে যায়। এর আগে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ৭৬ টি পরিবারকে ঢেউটিন নগদ অর্থ এবং কয়েকশ বন্যায় কবলিত পরিবারকে চাউল,শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়।

উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার মমতাজ মহল জানান, বিদ্যালয়টি রক্ষায় ব্যবস্থা গ্রহণ করার উপায় ছিল না। কারণ বিদ্যালয়টি পদ্মা তীরের নিকটবর্তী। জিওব্যাগ বা অন্য কোন উপায়ে ভাঙ্গন রোধ করে করার ক্ষমতা আমাদের ছিলনা। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে একাধিক বার পরিদর্শন করে বিদ্যালয়টি রক্ষার সম্ভাবনা না থাকার কারণে আল্লাহর উপর ভরসা করে থাকতে হচ্ছিল। বিদ্যালয়টি বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। অস্বায়ীভাবে ক্লাস করার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গোদাগাড়ী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জানান, বিদ্যালয় ভবনটি ধ্বংশ হওয়ার বিষটি শুনে ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এর পূর্বে চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে বিভিন্ন ধরনের ত্রান বিতরণ করেছি। এবং যে গ্রামের মানুষের ঘর বাড়ী নদীর গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে তাদের জন্য একটি আদর্শ গ্রাম তৈরীর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করছি। অস্থায়ীভাবে শিক্ষার্থীদের ক্লাসের ব্যবস্থা করে পরে ভবনের ব্যবস্থা করা হবে।


শর্টলিংকঃ