চামড়া সংগ্রহ কম হওয়া সত্ত্বেও দামে বিপর্যয় কেন?


ইউএনভি ডেস্ক:

নরসিংদীর বাসিন্দা হারুনুর রশিদ গতকাল ঈদের দিন সন্ধ্যায় ঢাকার পোস্তায় প্রায় ১১০০ পিস কাঁচা গরুর চামড়া নিয়ে আসেন বিক্রির জন্য।এবারের চামড়ার সংগ্রহ অন্যান্য বছরগুলোর তুলনায় কম হওয়ায় ভেবেছিলেন ভালো লাভ তুলতে পারবেন।

কিন্তু পোস্তার চিত্র ওই আগের মতোই। চামড়া কম আসায় দাম বেশি দেয়া তো দূরের কথা বরং গত বছরের চাইতেও এবার আরও কম দাম রাখা হচ্ছে।সরকার গত বছর কোরবানির পশুর চামড়ার যে দাম নির্ধারণ করেছিল, এবার তার চাইতে ২০% থেকে ৩০% শতাংশ কমিয়ে দাম ধরা হয়েছে। অথচ সেই দামও পাচ্ছেন না মৌসুমী ব্যবসায়ীরা।

গত সপ্তাহে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চামড়া ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক করে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দেয়।সেখানে, ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ৩৫ থেকে ৪০ টাকা ধরা হয়। আর ঢাকার বাইরে ধরা হয় প্রতি বর্গফুট ২৮ থেকে ৩২ টাকা। সারা দেশে খাসির চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয় প্রতি বর্গফুট ১৩ থেকে ১৫ টাকা।

একটি বড় আকারের গরুর চামড়া গড়ে ৩৫-৪০ বর্গফুট, মাঝারি আকারের গরুর চামড়া গড়ে ২৫-৩০ বর্গফুট এবং ছোট আকারের গরুর চামড়া গড়ে ১৫-২০ বর্গফুট হয়ে থাকে।

সেক্ষেত্রে সরকারের নির্ধারিত দাম অনুযায়ী বড় আকারের গরুর চামড়ার দাম পড়ার কথা ১২শ থেকে ১৬শ টাকা। মাঝারি গরুর চামড়ার দাম ৮০০ থেকে ১১০০ টাকা। এবং ছোট আকারের গরুর চামড়ার দাম ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা হওয়ার কথা।

অথচ সরকার নির্ধারিত দাম অনুযায়ী গরুর যে চামড়ার দাম হওয়ার কথা ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা, সেটার দাম চাওয়া হচ্ছে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা।গতকালকে কম দাম ধরায় হারুনুর রশিদের মতো অনেক মৌসুমি ব্যবসায়ী আজকে পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিলেন, ভেবেছিলেন আজ হয়তো ভালো দাম পাবেন।

কিন্তু আজকের পরিস্থিতি আরও খারাপ। মি. রশিদের কাছে ওই একই চামড়ার দাম আজ চাওয়া হচ্ছে ১৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা। এবং ছাগলের চামড়ার জন্য কেউ কোন দামই দিতে চাইছে না। দিলেও সেটা ৫ টাকা, ১০ টাকার বেশি না।

প্রচণ্ড গরমে চামড়া নষ্ট হতে শুরু করায় এতো চামড়া নিজের কাছে রাখারও অবস্থা নেই। এমন অবস্থায় পোস্তায় আসা অসংখ্য মৌসুমি ব্যবসায়ী তাদের কাছে থাকা কাঁচা চামড়াগুলো ফেলে দেয়া ছাড়া আর কোন উপায় দেখছেন না।

ট্যানারি মালিকদের দাবি করোনাভাইরাসের কারণে চলতি বছর চামড়াজাত পণ্যের অর্ডার কম আসায় এবং রপ্তানি বন্ধ থাকায় প্রচুর কাঁচা চামড়া পড়ে রয়েছে। এজন্য তারা বেশি দাম দিতে চাইছে না।এমন অবস্থায় চামড়ার দরপতন ঠেকাতে ঈদের মাত্র কয়েকদিন আগে ২৯শে জুলাই কাঁচা ও ওয়েট ব্লু চামড়া রপ্তানির অনুমতি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।


শর্টলিংকঃ