জৈব সুরক্ষা বলয় ভাঙলেও পেছাবে না অলিম্পিক


ইউএনভি ডেস্ক:

করোনা ভাইরাস মহামারির ব্যাপক প্রভাব পড়েছে টোকিও অলিম্পিক ভিলেজেও। ভেঙেছে সেখানকার জৈব সুরক্ষা বলয়। গত শনিবার থেকে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত গেমস সংশ্লিষ্ট ৭১ জনের করোনা পজিটিভ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আসর শুরুর তিন দিন আগে যা বেশ চিন্তার। তবুও পিছু হটতে রাজি নয় আয়োজক কমিটি।


মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে টোকিও অলিম্পিক আয়োজক কমিটির প্রধান তোশিরো মুতোর কাছে করোনা পরিস্থিতির অবনতির কারণে অলিম্পিক পেছানো বা বাতিল করা হবে কি না তা সাংবাদিকরা সরাসরি জানতে চান। জবাবে তিনি বাতিল বা পেছানোর প্রায় কোনো সম্ভাবনা নেই বলে ইঙ্গিত দিলেও পরিস্থিতির দিকে নজর রাখার পক্ষে।

কিন্তু তোশিরো মুতোর সঙ্গে একমত নন আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির প্রেসিডেন্ট (আইওসি) টমাস বাখ। তিনি অলিম্পিক আয়োজনের পক্ষেই জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আইওসি কখনোই অ্যাথলেটদের ত্যাগ করবে না। (অলিম্পিক) বাতিল করাই আমাদের জন্য সবচেয়ে সহজ পথ। কিন্তু বাতিল করা আমাদের অভিধানেই নেই। ’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের আত্মবিশ্বাস জোগাতে হবে। এই বিপদ থেকে বের হওয়ার পথ দেখাতে হবে। আমাদের বিশ্বাস তৈরি করতে হবে এবং আশা দেখাতে হবে। তবে আমরা জানি না এটা কতটা কঠিন হবে। কোনো নিশ্চিত পরিকল্পনা নেই। এর আগে এমনকিছু হয়ওনি। ’

টমাস বাখ এসব বলার পেছনে কারণে হিসেবে অলিম্পিক আয়োজন করতে গিয়ে জাপানের প্রায় ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচের কথা উঠে আসছে। এত বিশাল পরিমাণ অর্থ গচ্চা দেওয়ার কোনো ইচ্ছা আয়োজক কমিটির নেই। কিন্তু গত শনিবার অলিম্পিকের গেমস ভিলেজে প্রথম করোনা আক্রান্তের কথা জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। এখন সেই সংখ্যা ৭১-এ পৌঁছে গেছে বলে শোনা যাচ্ছে। এদের অনেকেই আবার অ্যাথলেট।

শুধু অলিম্পিক ভিলেজ নয়, আয়োজক জাপানের রাজধানী টোকিওতেও করোনা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। শনিবার টোকিওতে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৪১০। শেষ তিন মাসের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এক মাসের মধ্যে টোকিওতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার পার করতে পারে! তাছাড়া বিশ্বের যে দেশগুলি করোনা টিকাকরণে পিছিয়ে রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম জাপান। দেশটির মাত্র ৩৩ শতাংশ মানুষ টিকা পেয়েছেন।

করোনা পরিস্থিতির অবনতির মধ্যেই অলিম্পিক আয়োজন নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যেও ক্ষোভ জমছে। প্রতিদিন সেখানে বিক্ষোভ হচ্ছে। এর প্রভাবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে তিনটি পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এতকিছুর পরও পিছু হটার কোনো লক্ষণ নেই আইওসির মধ্যে।

তবে আয়োজক কমিটির প্রধান তোশিরো মুতো বললেন, ‘করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা কি প্রভাব ফেলবে তা আগে থেকেই বলা সম্ভব নয়। ফলে আমরা এটা নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাব। এখন করোনা ভাইরাস শনাক্তের হাত হয়তো বাড়তে বা কমতে পারে, তাই শনাক্ত বাড়লে কি করা যায় তা নিয়ে আমরা পরে চিন্তাভাবনা করব। ’

করোনা মহামারির কারণে এক বছর পেছানোর পর আগামী শুক্রবার থেকে শুরু হবে বিশ্বের সর্ব বৃহৎ এই ক্রীড়া আসর। অলিম্পিকের ১২৪ বছরের আধুনিক ইতিহাসে এই প্রথম আসর পেছানোর ঘটনা ঘটলো। এবার পুরো আসরে কোনো দর্শকের উপস্থিতি থাকবে না। ওদিকে জনরোষের মুখে জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থেকে নাম সরিয়ে নিয়েছে বড় তিন পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু আয়োজকদের টনক নড়ছে না।


শর্টলিংকঃ