তাদের বিষদাঁত ভেঙে দেয়া হবে: মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী


ইউএনভি ডেস্ক:

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে দেয়া ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য প্রত্যাহার করে জাতির কাছে ক্ষমা না চাইলে তাদের বিষদাঁত ভেঙে দেয়া হবে। এ জন্য কী করতে হবে তা আমরা জানি।


তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা অস্ত্র জমা দিয়েছেন, কিন্তু ট্রেনিং জমা দেননি। আমাদের চেতনাকে বিষর্জন দেইনি। অপব্যাখ্যা দিয়ে কতিপয় ব্যক্তি ধর্মের নামে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যে উক্তি করেছেন, তার প্রতিবাদের ভাষা জানা নেই। বিশ্বের অধ্যুষিত মুসলিম দেশগুলোতেও ভাস্কর্য রয়েছে। এমনকি পাকিস্তানেও ভাস্কর্য রয়েছে। শুধু তাই নয়, গাজীপুরসহ সারা দেশে হাজার হাজার ভাস্কর্য রয়েছে, তা নিয়ে তারা কথা না বলে, হঠাৎ করে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে কথা বলছেন। এটা কিসের ইঙ্গিত। এগুলো তারা কার নির্দেশে বলছেন।

মন্ত্রী বলেন, ধর্মের যারা অপব্যাখ্যা দেয়, সেই অপশক্তিকে রুখে দিতে হবে। তাদের জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। ধর্ম তাদের কাছে লিজ দেয়া হয়নি। তাই আলেম সমাজকে কথা বলতে হবে, না হলে মানুষ ধরে নেবে ইসলামে জঙ্গিবাদের কথা আছে। যারা জঙ্গিবাদের কথা বলেন, তারা ইসলামের শত্রু, মানবতার শুত্রু।

বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত নাট্যজন ব্যক্তিত্ব আলী যাকের ও ফুটবল তারকা বাদল রায়ের স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সংগঠন উপদেষ্টা নাট্যজন চিত্তরঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে ও জোটের সাধারণ সম্পাদক এবং মুখপাত্র অরুন সরকার রানার সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন- জোট নেতা ও গায়ক এসডি রুবেল, মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল বাহার মজুমদার টিপু, আওয়ামী লীগ নেতা এমএ করিম, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের সভাপতি লায়ন গনি মিয়া বাবুল, সাংবাদিক রেদুয়ান খন্দকার, সমীরণ রায় ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।

মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে যারা ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছে, এটি সরকারকে খতিয়ে দেখা উচিত। একইসঙ্গে তথ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করব, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যে ভাস্কর্য রয়েছে, সেগুলো টেলিভিশনে দেখানোর জন্য। বঙ্গবন্ধু কোনো যদু-মধু নয়। তিনি বাংলাদেশের স্থপতি। তার ভাস্কর্য নিয়ে তারা বক্তব্য দিয়েছেন, এটা কত বড় ধৃষ্ঠতা। তাদের এজেণ্ডা কী? তাদের উদ্দেশ্য কী? তারা ৭৫’র মতো ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। কিন্তু ৭৫’র আর ২০২০ সাল এক নয়। পদ্মা, মেঘনা ও যমুনায় অনেক পানি গড়িয়েছে। জাতির অস্তিত্ব হুমকির মুখে। মুক্তিযুদ্ধ প্রশ্নবিদ্ধ। সংবিধানের ওপর আঘাত এসেছে। তাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের উত্তারাধিকারীদের আর বসে থাকার সুযোগ নেই।

আলী যাকের ও বাদল রায়কে স্মরণ করে মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী বলেন, আলী যাকের ছিলেন সংস্কৃতিক অঙ্গনের সম্রাট। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে তিনি ইংরেজি সংবাদ পাঠ করতেন। তার বলার ভঙ্গিমায় আমরা আন্দোলিত হতাম। যখন জাতির দুঃসময় ছিল তখন তিনি বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সহসভাপতির দায়িত্ব সাহসিকতার সঙ্গে পালন করেছেন। তিনি ছিলেন অকুতভয় বঙ্গবন্ধুর সৈনিক। বাদল রায় শুধু ফুটবল তারকাই ছিলেন না। তিনি ছিলেন একজন সংগঠক ও সাহসী এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। তিনি বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের ক্রিড়া বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। এই দুইজন ব্যক্তি ছিলেন পাহাড় সমান।


শর্টলিংকঃ