নতুন ফোনগুলোর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত


ইউএনভি ডেস্ক:

প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসে ‌আইফোন ভক্তদের উত্তেজনা বেড়ে যায়। তাই নতুন আইফোন বাজারে আসার আগের রাতে লাইনে দাঁড়িয়ে যান অনেকে।এরকমই একজন হলেন সিডনির বাসিন্দা মেইজেন কুরোশ। পেশায় তিনি আইফোনের সফটওয়্যার ডেভেলপার।

নতুন ফোনগুলোর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

২০১৬ সালে থেকে আইফোন বাজারে আসার প্রথম দিনই তিনি আইফোন কেনেন। হাইপ, রিসেল ভ্যালু ও নতুন ফোন সম্পর্কে অন্যদের জানানোর আগ্রহে আগে আগেই তিনি আইফোন কেনেন।তবে এ বছর যে চিত্রটা পাল্টে যাবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বজুড়ে অ্যাপলের সব স্টোর বন্ধ।

সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব স্টোর খুলবে সে সম্ভাবনাও প্রায় ক্ষীণ।যুক্তরাজ্যের সরকার জানিয়েছে, স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে আরও তিন থেক ছয় মাস সময় লাগবে। অর্থাৎ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ছাড়া এই সময়ে অন্যান্য সব কিছু বন্ধ থাকবে। ফলে নির্ধারিত সময়ে আইফোন ১২ বাজারে আসার তেমন সম্ভাবনা নেই।

শুধু অ্যাপল না, ফোন বাজারে আনতে স্যামসাং ও শাওমিসহ অন্যান্য নির্মাতা কোম্পানিগুলোকেও জটিলতার মুখোমুখি হতে হবে। কারণ ফোনের উৎপাদন কাজও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফোনের যন্ত্রাংশের জন্য অনেক দেশই চীনের উপর নির্ভরশীল।সাপ্লাই চেইন অ্যানালিটিক্স কোম্পানি এললামাসফটের সিইও রজত গৌরব জানিয়েছেন, প্রায় ৭০ শতাংশ ফোনের উৎপাদন হয় চীনে।

দক্ষিণ কোরিয়াও ফোনের যন্ত্রাংশ তৈরি করে থাকে। দুটি দেশেই করোনাভাইরাস আঘাত হানায় সাপ্লাই চেইন ভেঙে পড়েছে।তিনি আরও জানান, স্মার্টফোন খুব জটিল একটি ডিভাইস। এতে যেসব উপাদান ও যন্ত্রাংশ ব্যবহৃত হয় সেগুলো বিশ্বের প্রায় ৪০টি দেশ থেকে আসে। তাই উৎপাদনের প্রতিটি ধাপে জটিলতা দেখা দিচ্ছে।

গবেষণা ফার্ম ফোররেস্টারের বিশ্লেষক ফ্র্যাঙ্ক জিলেট জানিয়েছেন, বাসা থেকেই স্মার্টফোনের ডিজাইন করা সম্ভব। তবে ফোনের গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য ল্যাবের কোনো বিকল্প নেই। কারণ বাসায় ল্যাবের যন্ত্রপাতি থাকে না। এগুলো বিশেষ ধরণের হয়ে থাকে।এছাড়া, স্মার্টফোনের উৎপাদনই শুধু কমেনি, চাহিদাও কমেছে।

গত বছর একই সময়ের তুলনায় চীনে স্মার্টফোনের চাহিদা ৪০ শতাংশ কম বলে জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ডেটা কর্পোরেশন (আইডিসি)। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপেও ফোনে চাহিদা কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে।অ্যাপল, স্যামসাং, ওয়ানপ্লাস ও গুগল বছরের একটি নির্দিষ্ট সময় ফোন বাজারে আনে। ক্রিসমাস মৌসুমে স্মার্টফোনের বেশ চাহিদা থাকে।

সে সময়টা সিংহভাগ অর্থ আয় করে ফোন কোম্পানিগুলো।এ বছর যেগুলো ডিভাইস আসার কথা সেগুলোর কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। তবে ২০২১ সালে ফোন উৎপাদনে সমস্যা দেখা দেবে। সারা বিশ্বে প্লেন যোগাযোগ প্রায় বন্ধ। তাই উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত উপাদান ও যন্ত্রপাতি যথাসময়ে কারখানায় যাবে না। আবার পণ্যের উৎপাদন শেষ করলেও প্লেনে করে অন্যান্য দেশে সেগুলো সরবরাহ করা সম্ভব হবে না।


শর্টলিংকঃ