নিপার সরকারি চাকরি পাওয়াটা গল্পের মতই সত্যি


বিশেষ প্রতিবেদক :

বিকেলে সিরাজগঞ্জ বেড়াতে গিয়ে হঠাৎ ফোন পেয়েই চমকে ওঠেন ইসরাত জাহান নিপা। চাকরির জন্য সকালে যে লিখিত পরীক্ষা দিয়েছিলেন, তার রেজাল্ট বেরিয়েছে। জানানো হলো- উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি। সকাল ৯টায় তার মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষা। অগত্যা রাতেই তিনি বাড়িতে ফেরেন।পরদিন সকালে মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষা দিলেন। এবারো ফল বেরুলো দিনে দিনেই।ডিসি অফিসের ফোনে পেয়েই আত্মহারা নিপা। কারণ, চাকরিটা হয়ে গেছে তার!

নিয়োগপত্র হাতে পাওয়ার পর ইসরাত জাহান নিপা

রাজশাহীর পবা উপজেলার ইসরাত জাহান নিপার সরকারি চাকরি হওয়ার গল্পটা এরকমই সাদামাটা। তবে নিজেও কখনো ভাবেন নি এতো সহজেই সরকারি চাকরিটা পেয়ে যাবেন।  বুধবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে ইউনিয়ন পরিষদের হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদের নিয়োগপত্র দেয়া হয়। একই পদে চাকরি হওয়া ৪১জনের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন জেলা প্রশাসক হামিদুল হক।

রাজশাহীতে বিনা ঘুষ ও কোনো রকমের তদবির ছাড়াই সম্পূর্ণ মেধার ভিত্তিতে ইউনিয়ন পরিষদের হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার পদে নিয়োগ পেলো ৪১জন তরুণ-তরুণী। বুধবার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক অনুষ্ঠানে নিয়োগপত্র তুলে দেন জেলা প্রশাসক হামিদুল হক।

জেলা প্রশাসক ইউনিভার্সাল২৪নিউজকে বলছিলেন, আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের বদ্ধমূল ধারণা রয়েছে- ঘুষ বা তদবির ছাড়া সরকারি কোনো চাকরি হয় না। কিন্তু এ ধারণা আমরা পাল্টে দিতে চাই।  তাই সম্পূর্ণ মেধাভিত্তিতে এবং দরিদ্র পরিবার বিবেচনায় ৪১জন বেকারকে চাকরির জন্য বেছে নেয়া হয়। তারা প্রত্যেকেই মেধাবী। মেধা বাছাইয়ে কোনো ছাড় দেয়া হয় নি। আমরা মনে করি, এদের নিয়োগের স্বচ্ছ্ব  প্রক্রিয়াটা সবাই জানুক। তাই এই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে নিয়োগপত্র হস্তান্তর করা হলো। অনুষ্ঠানে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্তদের দেশপ্রেম ও সততার সাথে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনেরও নির্দেশ দেন তিনি।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়োগপত্র হস্তান্তর অনুষ্ঠান

নিয়োগপত্র হাতে পেয়ে আনন্দিত রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মশিউর রহমান। তিনি প্রতিক্রিয়ায় বলেন,  আমি চাকরির জন্য অনেক পরীক্ষা দিয়েছি। এই চাকরির জন্য যখন ৫০০ টাকা দিয়ে ব্যাংক ড্রাফট করি তখন কষ্টই হয়েছিল। কিন্তু এতো তাৎক্ষণিক মানে আজ পরীক্ষা নিয়ে কালকেই রেজাল্ট! তারপরই চাকরি।  চাকরি পেয়ে গেলাম। এটা কখনোই ভাবি নি।  এজন্য সরকারকে ধন্যবাদ। জেলা প্রশাসকের প্রতি কৃতজ্ঞতা।

স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক পারভেজ রায়হান জানান, ইউনিয়ন পরিষদের হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটরের  ৪১টি পদের বিপরীতে সাড়ে চারশ’ প্রার্থী চাকরির আবেদন করেন।  গত ১৩ মার্চ লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ১০০জন প্রার্থী। পরে মৌখিক ও ব্যবহার পরীক্ষা শেষে নিয়োগের জন্য চুড়ান্ত মনোনীত হন ৪১জন। এদের মধ্যে সাধারণ কোটায় চাকরি হয়েছে ৩৩জনের, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৩জন, আনসার কোটায় ৪জন ও ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠী কোটায় একজন। নিয়োগ পাওয়াদের মধ্যে চারজন নারী। বুধবারই তারা যোগদান করেছেন।


শর্টলিংকঃ