পুঠিয়ায় নামসর্বস্ব সমবায় সমিতি ও এনজিও’র ছড়াছড়ি


আবু হাসাদ, পুঠিয়া: 

কর্তৃপক্ষের তদারকি না থাকায় রাজশাহীর পুঠিয়ায় যত্রতত্র ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠছে নামসর্বস্ব বিভিন্ন এনজিও ও সমবায় সমিতি। এক শ্রেণির লোকজন হাট-বাজার ও জনবসতি গুরুত্বপূণ এলাকায় অফিস খুলে বেশী মুনাফার লোভ দেখিয়ে গ্রাহক তৈরি করছেন।

সংশ্লিষ্ঠরা বলছেন, অধিকাংশ এনজিও ও সমবায় সমিতির বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই। আর ইউনিয়ন ও উপজেলা পরিষদের তালিকায় নাম অন্তর্ভূক্ত করতেও এনজিও গুলোর অনাগ্রহ দেখা যাচ্ছে। এতে করে অনেক ভূয়া এনজিও এবং সমবায় সমিতি গ্রাহকের মোটা অংকের জামানত নিয়ে রাতারাতি এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকায় তালিকাভূক্ত মোট ২৬টি এনজিও তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছেন। অপরদিকে তালিকাভূক্ত সর্বমোট ১৩৮টি সমবায় সমিতি থাকলেও বর্তমানে ৮৭টি সমিতি সক্রিয় ভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আর বাকি গুলো নিস্ক্রিয় হয়ে সুদের ব্যবসার সাথে জড়িয়ে আছে।

বানেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গাজি সুলতান বলেন, উপজেলার মধ্যে বাণিজিক এলাকা হচ্ছে বানেশ্বর হাট। এই হাটকে ঘিরে যত্রতত্র ভাবে গড়ে উঠেছে প্রায় অর্ধশতাধিক এনজিওর অফিস।

আর এক শ্রেণির লোকজন পুরো বাজারের অলিগলিতে নামসর্বস্ব সমবায় সমিতির সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেদারছে সুদের ব্যবসা করছে। এদের মধ্যে অনেক সমিতি খাতা কলমে থাকলেও বাস্তবে তাদের কোনো অস্তিত্ব নেই। আমাদের কাছে শুধুমাত্র ১২/১৩ টি এনজিওর নাম তালিকা রয়েছে। বাকিদের বৈধ কোনো কাগজপত্র আছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে। বিষয়টি উপজেলা পরিষদের আগামী মাসিক সভায় আলোচনা করবেন বলে জানান তিনি।

আবুল হোসেন নামের একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি বলেন, কর্তৃপক্ষের কোনো প্রকার তদারকি না থাকায় উপজেলার গুরুত্বপূণ এলাকায় রাতারাতি বিভিন্ন নামে গড়ে উঠছে এনজিও ও সমবায় সমিতি। ওই প্রতিষ্ঠান গুলোর প্রলোভনে অনেক গ্রাহক মোটা অংকের টাকা জামানত রাখছেন।

গত কয়েক বছরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ষ্টার, জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন সংস্থা, বর্ষা মাঝদিঘা ক্ষুদ্র সমবায় সমিতি লিমিটেডসহ ৫ এনজিও ও কমপক্ষে নামসর্বস্ব একডজন সমবায় সমিতি গ্রাহকদের জমাকৃত লাখ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে।
এনজিও ও সমবায় সমিতির তদারকির বিষয়ে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা সুলতানুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফোনে এ বিষয়ে আমি কোনো আলোচনা করি না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই মোহাম্মদ আনাছ বলেন, আমি এখানে নতুন এসেছি। উপজেলায় মোট কতটি এনজিও তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছেন তা খতিয়ে দেখা হবে। এর মধ্যে কতটি এনজিও ও সমবায় সমিতি আমাদের পরিষদের তালিকার বাহিরে আছে তাদের একটি পরিসংখ্যান জানতে ইউনিয়ন পরিষদকে অবহিত করা হচ্ছে।


শর্টলিংকঃ