পুঠিয়া খাদ্য গুদামের গম ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্র অর্জিত হচ্ছে না


আবু হাসাদ,পুঠিয়া :

রাজশাহীর পুঠিয়ায় চলতি বছর বরাদ্দকৃত গম ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্র অর্জিত হচ্ছে না খাদ্য গুদামের। খাদ্য কর্মকর্তা বলছেন, সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে চাষিরা বাজারে গমের দাম বেশী পাচ্ছেন। আর চাষিদের অভিযোগ, খাদ্য গুদামের হয়রানি ও রাজনৈতিক সিন্ডিকেটের কারণে সব সময় তারা সরকার নির্ধারিত গমের মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়। তবে বাজারে দাম ভালো পাওয়ায় তারা এবার গুদামে গম বিক্রি করতে আগ্রহী নয়।


উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর সরকার নির্ধারিত প্রতিমণ গম ১১শ’ ২০ টাকা দরে ৭১৬ মে.টন ক্রয়ের নির্দেশনা আসে। সে মোতাবেক গত ৭ মে থেকে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে গম ক্রয় করতে বলা হয়েছে। তবে নির্ধারিত সময়ের ২৫ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত গম ক্রয় শুরু করা হয়নি। ধারনা করা হচ্ছে এ বছর খাদ্য গুদাম বরাদ্দকৃত গম ক্রয়ের সম্ভবনা অনেক কম।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় মোট ২ হাজার ৬১০ হেক্টর জমিতে গম চাষ করা হয়। আর উৎপাদন হয়েছে ৯ হাজার ৩৯৬ মে.টন গম। বৈরি আবহাওয়া ও ব্লাষ্ট রোগের কারণে গত কয়েক বছর থেকে উপজেলার একমাত্র বেলপুকুর এলাকায় বেশী গম চাষ হচ্ছে।
ক্ষমতাসিন দলের স্থানীয় একজন রাজনৈতিক নেতা বলেন, সরকারী নিয়ম অনুসারে ধান-গম চাষিরা আর চাউল মিলারদের নিকট থেকে ক্রয়ের নিময় থাকলেও এখানে তা মানা হয় না।

এখানে মিলার ও কৃষকদের বঞ্চিত করে ওই পুরো বরাদ্দ কয়েক লাখ টাকার বিনিময় সরবরাহকারী ব্যবসায়িদের নিকট বেচা হয়। এবার বাজারে প্রতিমণ গমের দাম ১১শ’ থেকে ১১শ’ ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে খাদ্য গুদাম ১১শ’ ২০ টাকা দরে কিনছে। এতে করে গুদামের চেয়ে বাজারে গমের দাম বেশী হওয়ায় সিন্ডিকেট চক্রটি এবার সরবরাহ করছে না।


উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশী গম চাষ হয়েছে বেলপুকুর এলাকায়। ওই এলাকার একাধিক গম চাষিরা অভিযোগ তুলে বলেন, বাজারে দাম কম থাকলে নেতারা সিন্ডিকেট করে খাদ্য গুদামে অতি নিন্মমানের গম-ধান দেয়। আর আমরা গুদামে বিক্রি করতে গেলে কর্মকর্তারা বলেন, গমের আর্দ্রতা কম, দানা ছোট, রং খারাপসহ বিভিন্ন অযুহাতে তা ফেরৎ পাঠিয়ে দেন। এদের মধ্যে প্রভাবশালী বা কিছু বখশিসের বিনিময়ে হাতেগোনা দু’একজন চাষির গম গুদাম নেয়।এতে করে চাষিরা গুদামে ধান-গম বিক্রি করতে আগ্রহী নন।

এ ব্যাপারে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা শেখ মোফাজ্জল হোসেন বলেন, সরকার নির্ধারিত দরের চেয়ে কৃষক বাজারে গমের দাম বেশী পাচ্ছেন। তারা খাদ্য গুদামে গম বিক্রি করতে আগ্রহী নন। যার কারণে এবার এখনো গম ক্রয় উদ্বোধন হয়নি। তবে গম ক্রয়ের এখনো সময় আছে। এর মধ্যে যদি কোনো চাষি গম নিয়ে আসেন আমরা তা কিনে নিব।


শর্টলিংকঃ