বাগমারায় এমপিও’র আগেই স্কুল শিক্ষকের মৃত্যু


বাগমারা প্রতিনিধি:

লেখাপড়া শেখ করে পরিবারের হাল ধরতে বেছে নিলেন শিক্ষকতার মহান পেশা। সেই পেশাই চাকুরী জীবনের কেটে গেল ২০টি বছর। নানা চড়াই উৎরাই আর প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে চালিয়েছেন নিজের পেশাগত দায়িত্ব। চাকুরীর ২০ বছরে হাজারো শিক্ষার্থীকে দিয়েছেন জ্ঞানের আলো।

স্কুল শিক্ষক আনোয়ার হোসেন

চাকুরীর দীর্ঘ সময়ে এমপিও’র আবেদন করেছেন অনেক বার। তাতেও কোন লাভ হয়নি। অবশেষে চাকুরী থাকা অবস্থায় মৃত্যুর কাছে হার মানলেন আনোয়ার হোসেন নামের এক সহকারী শিক্ষক। তিনি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার গনিপুর ইউনিয়নের আক্কেলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠা থেকে কর্মরত আছেন। বিদ্যালয়টি ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়।

প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলে-মেয়েদের মাঝে জ্ঞানের আলো জ্বালাতে এলাকার শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিরা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি তৈরি করেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা লেখাপড়াতেও অনেক ভাল। ভাল মান সম্মত শিক্ষক থাকলেও বেতন ছাড়াই পার করছেন ২ দশক। এমপিও ভুক্ত না থাকলেও বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক নিয়োমিত ক্লাস করেন। তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ইংরেজির ওই শিক্ষক আনোয়ার হোসেন। তার হাতেই মানুষ হয়েছেন হাজারো শিক্ষার্থী। শনিবার ভোর ৪ টার দিকে নিজ বাড়ি গনিপুর ইউনিয়নের আচিনঘাট গ্রামে। পিতার নাম হাতেম আলী। এখনও জীবিত আছেন তিনি।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ভোর রাতে ফজরের নামজ পড়তে তাকে ডাক দেন তার স্ত্রী। বেশ কয়েকবার ডাকাকাকি করেও তার কোন সাড়া পান না। পরে দেখতে পান সে মারা গেছে। খবরটি তৎক্ষনাত এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে লোক জনের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল প্রায় ৫২ বছর। এক স্ত্রী, এক ছেলে সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে মারা যান। একমাত্র ছেলে তন্ময় সামনে বার এসএসসি পরীক্ষা দেবেন। তন্ময় তার পিতার স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগে লেখাপড়া করছেন। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন আনোয়ার হোসেন। বেতন না থাকলেও শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়িয়ে সেই টাকায় সংসারের ব্যয় ভার বহণ করতেন বলে জানা গেছে।

আজ শনিবার বিকেল ৩ টায় ওই শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের জানাযা অনুষ্ঠিত হয় আচিনঘাট ঈদগাহ ময়দানে। হাজার হাজার লোকের সমাগম ঘটে তার জানাযায়। জানাযা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।

 


শর্টলিংকঃ