বাগমারায় মন্দিরে মন্দিরে দুর্গোৎসব


বাগমারা প্রতিনিধি:

রাজশাহীর বাগমারায় মন্দিরে মন্দিরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব। এবার উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভার ৬৯ টি মন্দিরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুর্গা পূজা। এর মধ্যে ব্যক্তিগত উদ্যোগে একটি মন্দিরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে শারদীয় দুর্গা পূজা।


আবহাওয়ার বিচিত্রতা, মারণ ভাইরাস করোনার ভয়াবহতার মধ্যেই প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা এবং মানবজাতির শুভ কামনায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মন্দিরে মন্দিরের পূজার্চনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

সরকারী নির্দেশনা মেনে ছোট পরিসরে চলছে পূজার কার্যক্রম। প্রতি বছরের মতো এবার নেই আইন শৃংখলা বাহিনীর উপস্থিতি। তবে উপজেলার সর্বত্রই টহল জোরদার রেখেছে আইন শৃংখলায় দায়িত্বরত লোকজন। গত বুধবার শ্রী শ্রী শারদীয়া দুর্গাদেবীর পঞ্চমী বিহিত পূজা প্রশস্তা। সায়ংকালে দেবীর বোধনের মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছে দুর্গাপূজা। বৃহস্পতিবার শ্রী শ্রী দুর্গাষষ্ঠী। শারদীয়া দুর্গাদেবীর ষষ্ঠ্যাদি কল্পারম্ভ এবং ষষ্ঠী বিহিত পূজা প্রশস্তা।

এতে সয়ংকালে দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাস ঘটে। শক্রবার অনুষ্ঠিত হয়ে গেল শ্রী শ্রী শারদীয়া দুর্গাবেদীর নবপত্রিকা প্রবেশ, স্থাপন, সপ্তম্যাদি কল্পারম্ভ ও সপ্তমী বিহিত পূজা প্রশস্তা। শনিবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে শ্রী শ্রী শারদীয়া দুর্গাদেবীর মহাষ্টম্যাদি কল্পারম্ভ, কেবল মহাষ্টমী কল্পারম্ভ ও মহাষ্টমী বিহিত পূজা প্রশস্তা সহ বীরাষ্টমীব্রতম ও মহাষ্টমীর ব্রতোপবাস এবং সন্ধিপূজা।

শনিবার বাগমারা উপজেলার শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের শংকরপৈ গ্রামের গ্রামীণ পূজা উদ্যাপন গোষ্ঠীর মন্দিরে গিয়ে দেখা যায় তারা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দুর্গাদেবীর সামনে পূজার্চনা করছেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, শংকরপৈ গ্রামীণ পূজা উদ্যাপন গোষ্ঠীর সভাপতির শ্রী অমল কুমার সরকার, সাধারণ সম্পাদক শ্রী নীরেন্দ্র নাথ প্রামানিক, কোষাধ্যক্ষ গনেশ কুমার সরকার, সাবেক শিক্ষক শ্যামল কুমার সরকার, মচমইল ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ কুমার প্রতীক দাশ রানা প্রমুখ।

শংকরপৈ গ্রামীণ পূজা উদ্যাপন গোষ্ঠীর সভাপতির শ্রী অমল কুমার সরকার বলেন, প্রায় ৩০-৩৫ বছর ধরে তাদের গ্রামে শারদীয় দুর্গাপূজা উদ্যাপন করে আসছেন। এর আগে অন্যস্থানে দুর্গাপূজা করতেন।

ছোট আকারে পূজা করতে গেলে প্রতিমা তৈরিতে প্রায় ৩০-৩৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। স্থানীয় ভাবেই এই ব্যয় বহন করতে হয়। তবে সরকারী ভাবে এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যের নিকট থেকে আর্থিক সহযোগিতা পাওয়া যায়।

এবার মূলত করোনামুক্তি ও ধরিত্রীর কল্যাল কামনায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে শারদীয় দুর্গাপূজা। উপজেলার বেশ কয়েকটি পূজা মুন্দিরে গিয়ে দেখা গেছে বিগত বছরের তুলনায় এবার মন্দিরের সামনে লোক সমাগম কিছুটা কম। করোনার প্রভাবে এমনটা হয়েছে বলে জানাগেছে। তবে প্রতিটা মন্দিরের সামনে রাখা হয়েছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার। এছাড়াও যারা মন্দিরে পূজার্চনায় আসছেন তাদের মুখে মাস্ক দেখা গেছে। বলা চলে সরকারী নির্দেশনা মেনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবারের দুর্গা পূজা।

ভারত উপমহাদেশে সর্বপ্রথম দুর্গাপূজার আবির্ভাব ঘটে রাজশাহীর বাগমারায়। উপজেলার তাহেরপুরের রাজা কংশ নারায়ন রায় বাহাদুর শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু করেন। তখন থেকেই শুরু হয়েছে দুর্গাপূজার প্রচলন।

এ ব্যাপারে উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি প্রদীপ কুমার সিংহ বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এ বছর সকল মন্দিরে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সকলের সার্বিক সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুর্গাপূজা।


শর্টলিংকঃ