বাঘায় ৩ টাকা কেজিতে মিলছে পটল


আমানুল হক আমান, বাঘা (রাজশাহী):
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী হাটে প্রতিমণ ১২০ টাকা দরে পটল বিক্রি হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে হাটে এ দামে পটল বিক্রি করে চাষিরা। আড়ানী হাটে পটলের পর্যাপ্ত আমদানি হলেও চাহিদা মতো ক্রেতা না থাকায় কৃষকরা অল্প দামে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন।

আবার দাম কম হওয়ায় এ দামে বিক্রি করে। বাজারে কম হওয়ায় অনেক কৃষক জমি থেকে পটল উত্তোলন করছে না। জমিতে পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে হতাশায় ভুগছেন কৃষকরা। গতকাল শনিবার আড়ানী হাটে ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা প্রতিমণ দরে পটল বিক্রি হয়েছে। দুই সপ্তাহ আগে আড়ানী হাটে ২২০ টাকা থেকে ২৫০ টাকায় প্রতিমণ পটল বিক্রি হয়েছে।


এ বিষয়ে আড়ানী গোচর গ্রামের কলিম উদ্দিন বলেন, পটলের বাজারদর এমন থাকলে চাষিদের লোকসান গুণতে হবে। প্রতিমণ পটল হাটে আনতে পরিবহন খরচ ২০ টাকা, খাজনা বাবদ দিতে হয় আর ২০ টাকা, জমি থেকে উত্তোলন করেত ২০ টাকা। ফলে ১২০ টাকা দরে বিক্রি করলে কৃষকের বাজার করার মতো টাকা থাকেনা।


শালাই নগর গ্রামের আসাদুল হক বলেন, প্রতি সপ্তাহে আমি ৭ থেকে ৮ মণ পটল বিক্রি করার জন্য হাটে আনি। আগের হাটগুলোতে দাম ভালো পেয়েছি। কিন্তু শনিবার হাটে বাজার দর খুবই কম, ক্রেতাও নেই তেমন।


পটলের দাম না থাকায় এক সময় মনে হলো রাস্তায় ফেলে চলে যায়। এ সময় এক ক্রেতা ১২০ টাকা দরে কিনে নিলো। পরিবহন খরচসহ অন্যান্য খরচ দিয়ে খালি বস্তা নিয়ে বাড়ি চলে আসি।


শাজাদপুর থেকে আসা এক পটলের ব্যাপারি আরিফুল ইসলাম বলেন, সপ্তাহে দু’দিন শনিবার ও মঙ্গলবার আড়ানী হাট থেকে হাট কিনে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যায়। কম দামের মামামাল কিনে মোকামে নিয়ে গেলে রিক্স থাকে। কোন কোন সময়ে ক্যাশ হারিয়ে যায়। দুই সপ্তাহ আগে এ হাটে প্রতিমণ পটল ২২০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা দরে কেনা-বেচা হয়েছে। কয়েক দিনের ব্যবধানে একই পটল বিক্রি হচ্ছে প্রতিমণ ১২০ থেকে ১৫০ টাকা। আমি প্রায় ২৫০ মণ পটল কিনেছি।


আড়ানীর স্থানীয় আরেক ব্যবসায়ী টিটু আহম্মেদ বলেন, কম দামে পটল কিনেও শান্তি নেই। কারণ, ঢাকা-গাজীপুরের আড়তে ঠিকমতো পটল বিক্রি করতে পারছি না। আড়ানী গোচর গ্রামের পটল চাষি সুজন আলী বলেন, আমি এক বিঘা জমিতে পটলের আবাদ করেছি। এ জমিতে মাচা তৈরী করতে প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন প্রতিমণ পটল বিক্রি করতে হচ্ছে ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকায়। ফলে এ বছর পটলের আবাদ করে লোকসান হবে।


বাঘা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, উপজেলায় এবার ২৫ হেক্টর জমিতে পটলের আবাদ হয়েছে। তবে অন্য বছরের চেয়ে এ বছর বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু দাম কম হওয়ায় কৃষকরা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। তবে প্রথম দিকে পটলের ভালো দাম পেয়েছে।


শর্টলিংকঃ