বিল গেটস বলেননি, তবু তার নামেই প্রচার!


ইউএনভি ডেস্ক:

মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস শিশুদের জন্য বাস্তব জীবনের কিছু নিয়ম-কানুন নিয়ে একটি তালিকা তৈরি করেছেন দাবি করে সেগুলো তার নামে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে বিতরণ করা হচ্ছে।তালিকার সেই নিয়ম-কানুনগুলো ২০ বছর আগে প্রথম প্রকাশ হলেও সম্প্রতি এটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। অবশ্য ২০ বছর আগেও বিল গেটস সেসব বলেছেন বলে খবর ছড়ানো হয়েছিল।

বিল গেটসের নামে প্রচার করা শিশুদের জন্য নিয়ম-কানুনের তালিকা তার নয়। ছবি : এএফপি
বিল গেটসের নামে প্রচার করা শিশুদের জন্য নিয়ম-কানুনের তালিকা তার নয়। ছবি : এএফপি

তবে বিল গেটসের পক্ষ থেকে নিয়ম-কানুনের তালিকা তৈরির দাবিকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।এর আগে ২০১৩ সালে এক ফেইসবুক পোস্টে একই দাবি করেন একজন এবং সেটি তখন ৫৯ হাজার বার শেয়ার হয় ফেইসবুকে।স্কুলগুলোতে এমন ১০ থেকে ১৪টি নিয়মের কথা লিখে অনেকেই তা বিতরণও করেছেন। এমনকি সেটার কোনো রাজনৈতিক দিকটিও বিবেচনায় আনা হয়নি প্রচারের সময়।

আর সেগুলো সবই হচ্ছে বিল গেটসের নামে।সেই দাবিতে বলা হয়েছে, বিল গেটস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিয়েছিলেন যেখানে সমসাময়িক শিক্ষাকে বস করার জন্য রাজনৈতিক কিছু বিষয় কাজ করে এমন কথা বলেন। আর এগুলো শিশুদের বিকাশে বাধা দেয় এবং তাদের ব্যর্থতার জন্য দায়ী হয়।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া তালিকাটিতে বিল গেটসের নামে ১১টি বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।অবশ্য এবারই প্রথম দাবিটি করা হয়নি। দাবিটি মূলত ২০ বছর আগের ২০০০ সালের। তখন থেকেই এর বিস্তারিত কিছু প্রকাশ ও প্রচার করা হচ্ছে বিল গেটসের নামে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত লেখক কার্ট ভনেগুটও লেখাটির অপব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

গেটস নয়, তবে কে?

এখন প্রশ্ন উঠেছে, বিল গেটস যদি এই নিয়ম-কানুন তালিকার পিছনের লোক না হো তাহলে প্রকৃত লোক কে? কেনই বা তা প্রচার পেলো গেটসের নামে?তালিকার পেছনের প্রকৃত লোক হলেন মার্কিন লেখক চার্লস জে সাইকস, তার ১৯৯৫ সালে প্রকাশিত ‘ডাম্বিং ডাউন আওয়ার কিডস’ বইতে ‘আমেরিকার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দৃষ্টিনন্দন অভিযোগ’ হিসেবে সেটির বর্ণনা করা হয়েছে।কিন্তু এটি ছিল মিলওয়াকির একটি রেডিও অনুষ্ঠান যা প্রথম জনগণের সামনে নিয়ে আসেন উইসকনসিন। সেখানে স্কুলের বাচ্চাদেরকে শিক্ষা সম্পর্কে কিছু নিয়ম-কানুন বলে দেওয়া হয়। তার প্রথম তালিকা ছিল ১০টি নিয়মের। পরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৪টিতে।সাইকাস অবশ্য ২০০৭ সালেই একটি বইতে ৫০টি নিয়মের কথা বলেন যেগুলো ‘বাচ্চারা স্কুলে শিখবে না’। সেখানেই তিনি তার প্রথম করা তালিকা তুলে ধরেন। পরে সেগুলো শিশুদের জন্য নির্দেশ হিসেবে কাটছাঁট করা হয়। সেখানে তিনি দাবি করেন, যে তালিকা বিল গেটসের নামে প্রচার করা হচ্ছে সেটি আসলেই বিল গেটসের নয়। সেটি সাইকাসের।


শর্টলিংকঃ