বিষাক্ত ট্যাবলেট খেয়ে নারী পুলিশ কর্মকর্তার ‘আত্মহত্যা’


বগুড়া প্র্রতিনধি:

‘রোজিনার পুলিশে চাকরি করাটা তার স্বামী পছন্দ করতেন না। চাকরি ছাড়ার জন্য তাকে মারপিটও করা হতো। তিনি মাঝে মাঝে তার ফেসবুকে হতাশার কথা লিখে শেয়ার করতেন।’

বগুড়ায় মৃত এসআই রোজিনা খাতুন।

বগুড়ায় বিষাক্ত ট্যাবলেট সেবন করে রোজিনা খাতুন (৩১) নামে এক পুলিশ কর্মকর্তা আত্মহত্যা করেছেন। মঙ্গলবার দুপুরে ট্যাবলেট খাওয়ার পর তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নেয়া হয়। রাতে সেখানে চিকিৎসাধীন থেকে রোজিনার মৃত্যু হয়।

নিহত রোজিনা ধুনট থানার পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই)। তিনি নাটোরের সিংড়া উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের নান্নু মিয়ার মেয়ে। পরিবারের সদস্যদের দাবি- পারিবারিক কারণে রোজিনা আত্মহত্যা করেছেন। তবে ধুনট থানার ওসি ইসমাইল হোসেন জানান, এএসআই রোজিনার আত্মহত্যার কারণ এখনও পরিস্কার হওয়া যায় নি।

জানা গেছে, রোজিনা খাতুন ২০০৭ সালে পুলিশ কনস্টেবল পদে যোগ দেন। পরের বছর একই গ্রামের আবদুল লতিফ মোল্লার ছেলে হাসান আলীর সঙ্গে বিয়ে হয়। তিনি স্থানীয় দমদমা কারিগরি স্কুলের সহকারী শিক্ষক। তাদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। এএসআই পদোন্নতি পাওয়ার পর গত বছরের ১৮ জানুয়ারি তিনি ধুনট থানায় যোগদান করেন। থানা ভবনের পাশে একটি বাসা ভাড়া নেন। চাকরির কারণে স্বামী হাসান আলী সিংড়ায় থাকেন।

এদিকে রোজিনা খাতুন মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে বাসায় বিষাক্ত ট্যাবলেট খেয়ে ফেলেন। এ সময় বাড়িতে তার মা ও বাবাও ছিলেন। তাকে প্রথমে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে রাত ৯টার দিকে তিনি মারা যান। ধুনট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মোহাম্মদ সালেহ জানান, রোজিনা বিষাক্ত ট্যাবলেট সেবন করেছিলেন।

রোজিনার বাবা নান্নু মিয়া জানান, পারিবারিক বিষয় নিয়ে স্বামীর সঙ্গে গত ৫-৬ বছর ধরে বিরোধ চলছিল। জামাতা হাসান আলী গত বৃহস্পতিবার এখানে আসেন এবং শনিবার চলে যান। এরপর থেকে রোজিনার মন খারাপ ছিল। সে কারও সঙ্গে সেভাবে কথা বলছিল না।

প্রতিবেশীরা জানান, রোজিনার পুলিশে চাকরি করাটা তার স্বামী পছন্দ করতেন না। চাকরি ছাড়ার জন্য তাকে মারপিটও করা হতো। তিনি মাঝে মাঝে তার ফেসবুকে হতাশার কথা শেয়ার করতেন।

ধুনট থানার ওসি (তদন্ত) ফারুকুল ইসলাম জানান, এএসআই রোজিনার আত্মহত্যার বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। এ ব্যাপারে বগুড়া সদর থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা হয়েছে।


শর্টলিংকঃ