বেলারুশে ন্যাটো এলে সেনা পাঠাবে রাশিয়াও


ইউএনভি ডেস্ক:

বেলারুশে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকা প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এমনকি লুকাশেঙ্কো যদি বাইরের সামরিক হুমকির মুখে পড়েন, তাহলে তাকে নিরাপত্তা সহায়তা দিতেও রাজি হয়েছে রাশিয়া।

রোববার বিবিসি জানায়, প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ড ও লিথুয়ানিয়ায় অবস্থান করছে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটোর সামরিক বহর। সেখান থেকে তার ওপর হুমকি আসতে পারে বলে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সহায়তা চান লুকাশেঙ্কো। কারণ, ৯ আগস্ট প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগে রাজপথ তেতে উঠেছে বিক্ষোভকারীদের আন্দোলনে। এরই মধ্যে অন্তত দু’জন প্রাণ হারিয়েছেন।

লুকাশেঙ্কো বলেন, বাহ্যিক সামরিক হুমকি মোকাবেলায় বেলারুশকে নিরাপত্তা সহায়তা দিতে পুতিন সম্মত হয়েছেন। রুশ প্রেসিডেন্ট সমর্থন দিলেও এ সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভে রাজপথে নামেন হাজার হাজার মানুষ। কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার এবং পুলিশি জিম্মায় একাধিক বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর পর আরও উত্তাল হয়ে উঠে বেলারুশ। শনিবারও দেশটির রাজধানীতে সরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রধান কার্যালয়ের সামনে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন।

এ সময় বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্টবিরোধী বিক্ষোভ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারের দাবি জানান। ২৬ বছর ধরে ক্ষমতা আঁকড়ে রয়েছেন লুকাশেঙ্কো। সরকার পরিবর্তনের আশা করে অ্যান্ড্রে নামে ৩৩ বছর বয়সী এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘আমাদের পুরো জীবনে এই প্রথমবার স্বাধীনতার শ্বাস নিতে পারি। এ অনুভূতি অসাধারণ।’

গত সপ্তাহের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো বিশাল ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন বলে দাবি করার পর বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। তবে এই নির্বাচনে ব্যাপক ভোট কারচুপির মাধ্যমে লুকাশেঙ্কোর জয় নিশ্চিত করা হয়েছে বলে বিরোধীরা দাবি করেছেন। দেশটির কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন বলেছে, ১৯৯৪ সাল থেকে বেলারুশের ক্ষমতায় থাকা লুকাশেঙ্কো এবারের নির্বাচনে ৮০ দশমিক ১ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। তার প্রধান বিরোধী সভেতলানা তিখানোভস্কায়া পেয়েছেন ১০ দশমিক ১২ শতাংশ ভোট।

তিখানোভস্কায়া বলছেন, সুষ্ঠুভাবে গণনা করা হলে তিনি ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হবেন। নির্বাচনে মিথ্যাচারে দায়ী বেলারুশের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে বলে ইইউর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ঘোষণা দিয়েছেন। এর একদিন পর রাশিয়া উত্তাল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বেলারুশকে সামরিক সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রও বেলারুশের নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়নি উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছে। শনিবার এক যৌথ বিবৃতিতে বাল্টিক তিন রাষ্ট্র লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া এবং এস্তোনিয়ার প্রধানমন্ত্রীরা বেলারুশের বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সহিংস ব্যবস্থা এবং বিরোধীদের দমনে রাজনৈতিক নিপীড়নের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

বিরোধীদলীয় নেতা সভেতলানা তিখানোভস্কায়া আগামী শুক্রবার দেশটিতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছেন। এএফপি বলছে, শনিবারের বিক্ষোভে দেশটির সরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের শতাধিক কর্মী যোগ দেন। সোমবার তারা ধর্মঘট পালনের পরিকল্পনা

করছেন বলে জানান। অন্যরা ধর্মঘট পালনের পরিকল্পনায় সমর্থন জানিয়ে একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করেন।


শর্টলিংকঃ