বেসিক ব্যাংকে ১১৭৩ জনের নিয়োগে জালিয়াতি


বেসিক ব্যাংকে নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা, বয়স, লিখিত-মৌখিক পরীক্ষা, নিয়োগ সংক্রান্ত বিধি-বিধান- কোনো কিছুই মানা হয়নি। রাষ্ট্রায়ত্ত এ ব্যাংকে স্থান হয়নি যোগ্য-মেধাবীদের। দুর্নীতি-অনিয়ম করে খেয়াল খুশিমতো নিয়োগ দেয়া হয়েছে, যা অকল্পনীয়।

শেখ আবদুল হাই বাচ্চু বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকার সময় ক্ষমতার চূড়ান্ত অপব্যবহার, নজিরবিহীন অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি করে এক হাজার ১৭৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে, যার প্রমাণ উঠে এসেছে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের (সিএজি) নিরীক্ষা প্রতিবেদনে। সেখানে এ নিয়োগ-দুর্নীতির ঘটনাকে ‘নজিরবিহীন’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বেতন-ভাতার নামে বাড়তি অর্থ আত্মসাতের প্রমাণাদিও তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে।

আইনজীবী তাইতাস হিল্লোল রেমা পরে সাংবাদিকদের বলেন, বেসিক ব্যাংকে নিয়োগ নিয়ে এমন অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনায় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুকে তলবের জন্য নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এছাড়া সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সংশ্লিষ্ট সাতজনকে বিবাদী করা হয়েছে।

গত ২৯ নভেম্বর বেসিক ব্যাংকের নিয়োগে অনিয়ম নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় ও টেলিভিশনে সংবাদ প্রচার হয়। তদন্তের আবেদনে সেসব প্রতিবেদন সংযুক্ত করা হয়েছে।

রোববার (২২ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানির অনুমতি নেয়া হয়। গত ২৯ নভেম্বর ‘যেমন খুশি তেমন নিয়োগ বেসিক ব্যাংকে’ শিরোনামে একটি জাতীয় পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ পায়। প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, বেসিক ব্যাংকে নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা, বয়স, লিখিত-মৌখিক পরীক্ষা, নিয়োগ-সংক্রান্ত বিধি-বিধান কোনো কিছুই মানা হয়নি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগ তদন্ত করলেও নিয়োগ-দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত করছে না। এ ব্যাপারে দুদকের বিশেষ অনুসন্ধান ও তদন্ত বিভাগের পরিচালক কাজী সফিকুল আলম জানান, নিয়োগ-দুর্নীতি সংক্রান্ত সিএজির নিরীক্ষা প্রতিবেদন তাদের হাতে পৌঁছেনি। প্রতিবেদনটি পেলে নিয়োগে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে। নিয়োগ সংক্রান্ত নীতিমালা লঙ্ঘন করে কোনো বিজ্ঞপ্তি ও লিখিত-মৌখিক পরীক্ষা ছাড়াই, এমনকি আবেদনপত্র জমা না দিলেও কিংবা জীবনবৃত্তান্তে স্বাক্ষর না থাকলেও অনেককে বেসিক ব্যাংকে চাকরি দেয়া হয়েছে। উত্তরপত্র অতি মূল্যায়িত করে নম্বর দিয়েও চাকরি দেয়া হয়েছে অদক্ষ, অনভিজ্ঞদের। শিক্ষাগত সনদে একাধিক তৃতীয় শ্রেণি থাকলেও কিংবা চাকরির বয়সসীমা পার হয়ে গেলেও নিয়োগ পেয়েছেন কেউ কেউ।


শর্টলিংকঃ