ভুল তথ্য দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি, মৃত্যুর সংবাদে লাপাত্তা স্বজনরা


ইউএনভি ডেস্ক:
করোনাভাইরাসের উপসর্গ থাকায় লিপি আক্তার (২৩) নামে এক গৃহবধূকে নারায়ণগঞ্জ ৩শ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করে স্বজনরা। পরে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে তার মৃত্যু হয়। কিন্তু মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকেই যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে লিপির স্বজনরা। মরদেহও নিতেও আসেনি কেউ।

ভুল তথ্য দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি, মৃত্যুর সংবাদে লাপাত্তা স্বজনরা

এতে বিপাকে পড়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে স্থানীয় কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকুর তত্ত্বাবধানে মরদেহ দাফনের ব্যবস্থা করে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক)। রোববার (১০ মে) করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত নারায়ণগঞ্জ ৩শ শয্যা হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শনিবার (৯ মে) রাতে হাসপাতালের করোনা ইউনিটের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় লিপি আক্তার নামে এক নারীর মৃত্যু হয়।

গত ২৯ এপ্রিল করোনার উপসর্গ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ ৩শ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। ওইদিন তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য আইইডিসিআরে পাঠালেও ফলাফল পাওয়া যায়নি।

পরে শনিবার রাতে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর আবারও তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য হাসপাতালের ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর খবরটি তার স্বজনদের জানানো হলেও তারা আর কোনো খোঁজ নেননি। ভর্তি ফর্মে সম্পূর্ণ ঠিকানা উল্লেখ না করে কেবল চাষাঢ়া উল্লেখ করা হয়েছে।

তার স্বামীর নাম ফাহিম লেখা রয়েছে। তবে ২৪ ঘণ্টাতেও কেউ হাসপাতালে এসে যোগাযোগ করেননি। এমনকি ভর্তি ফর্মে দেয়া মুঠোফোনের নম্বরটিও গতরাত থেকে বন্ধ। পরে মরদেহ দাফনের ব্যবস্থা করে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. সামসুদ্দোহা সঞ্চয় বলেন, শনিবার রাতে নারায়ণগঞ্জ করোনা হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই রোগী মারা যান। আমরা নিহতের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু তথ্যগত ত্রুটির কারণে তা সম্ভব হয়নি।

শেষে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ও সদর থানার সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করি। সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে মরদেহ দাফনের ব্যবস্থা করা হয়। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু বলেন, রোববার বিকেলে পুলিশের মাধ্যমে মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পারি।

পরে নাসিক মেয়রের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার নির্দেশনা মতে অ্যাম্বুলেন্সে করে মরদেহ মাসদাইরের সিটি করপোরেশনের কেন্দ্রীয় কবরস্থানে পাঠানো হয়। সেখানেই দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বরাতে তিনি আরও বলেন, জেনেছি রোগীর স্বজনরা যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন। প্রতিদিন খাবার দিতে হাসপাতালে আসলেও মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে তারা কেউ আসেননি।

এমনকি যে ফোন নম্বর ভর্তি ফর্মে ছিল সে নম্বরেও যোগাযোগ করা হলে হাসপাতালের লোকজনের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন রোগীর স্বজনরা। তারপর থেকে ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।


শর্টলিংকঃ