‘মতিহারে সক্রিয় ছাত্রনেতারা দেশের নেতৃত্বেও সফল’


রাবি প্রতিনিধি :

রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ও রাকসুর সাবেক ভিপি ফজলে হোসেন বাদশা বলেছেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আমার প্রাণ। মতিহারকে আমি প্রচন্ড ভালোবাসি। আমি বিশ্বাস করি- মতিহারে যারা ঠিকমতো ছাত্র রাজনীতি করতে পারবে, তারা বাংলাদেশের রাজনীতিতেও উঠে দাঁড়াতে সক্ষম হবে।

রাবির আমির আলী হলে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিন সংসদ ও অতিথিবৃন্দ

শনিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ আমীর আলী হলে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। হলের সাবেক চার শিক্ষার্থী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় তাদেরকে এই সংবর্ধনা দেয় হল কর্তৃপক্ষ।

সংবর্ধনাপ্রাপ্তরা হলেন- রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও রাকসুর সাবেক ভিপি ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও রাবি ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আয়েন উদ্দিন এবং ঝিনাইদহ-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. শফিকুল আজম খান চঞ্চল।

এছাড়াও ওই হলের সাবেক শিক্ষার্থী দিনাজপুর-৫ আসনের সাংসদ মো. মোস্তাফিজুর রহমানকে সংবর্ধনা দেওয়ার কথা থাকলেও ব্যক্তিগত কারণে তিনি উপস্থিত হতে পারেন নি।

এমপি বাদশা বলেন, মতিহারের এই সবুজ চত্বর সবুজ নয়। ৬৯’র গণআন্দোলনে আমাদের শিক্ষকরা এখানে রক্ত দিয়েছেন। স্বাধীনতার বাংলাদেশে এসে স্বাধীনতাবিরোধীদের হাতে ফারুক, রিমুসহ অসংখ্য প্রগতিমনা ছাত্রনেতাদের প্রাণ দিতে হয়েছে।

ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, বঙ্গবন্ধু খুব স্পষ্টভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সংবিধানের মধ্যে এনেছেন। সংবিধান দেখলে আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মূলমন্ত্র খুঁজে পাবো। সেখানে রাষ্ট্রের চারটি মূলনীতি রয়েছে। বঙ্গবন্ধু সংসদে দাঁড়িয়ে এই চার মূলনীতি সম্পর্কে বলেছেন- ‘আমার জীবনে যদি চার মূলনীতি বাস্তবায়ন নাও করতে পারি, তা যদি মৃত্যুর পরও বাস্তবায়ন হয়; তবে আমার আত্মা শান্তি পাবে।’

সাংসদ শফিকুল আজম খান চঞ্চল স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘আমি যখন আমির হলের আবাসিক শিক্ষার্থী, তখন আমার রুমে ঘুমাতে পারিনি। সব সময় আমার রুমে শিক্ষার্থীরা থাকতো। সেই সময় বেশির ভাগ রাত বন্ধুদের রুমেই কাটাতাম।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যখন হলে ছিলাম তখন হলের খাবার ছিল দিনে ৬ টাকা, রাতেও ৬ টাকা ছিলো এবং সকালে ছিলো আড়াই টাকা। মাসে ছয় শ টাকা দিতো বাড়ি থেকে। তখন আমাদের জামা কাপড় তেমন বেশি ছিলো না। দুই তিনটা জামা দিয়ে বছর পার করে দিতাম। আর এখন শিক্ষার্থীরা কত আনন্দের সাথে পড়াশোনা করে।’

ছাত্র রাজনীতি সম্পর্কে সাংসদ আয়েন উদ্দিন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার অন্যতম একটি কারণ ছিলো রাজনীতি করা। তবে রাজনীতি করতে এসে কখনো আনন্দ আসে, আবার দুর্বিষহ জীবনও পার করতে হয়েছে। স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। তারপরও দমে যায়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘মিথ্যা রাজনীতি বেশি দিন টিকে না। যারা দলের অস্তিত্ব বিশ্বাস করে না তাদের রাজনীতিও টিকে না।’

অনুষ্ঠানে সংবর্ধক বক্তা ছিলেন রাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. আব্দুস সোবহান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা ও অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক একেএম মোস্তাফিজুর রহমান আল-আরিফ।

এরআগে অনুষ্ঠানের শুরুতে তাদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে উত্তরিয় পরিয়ে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের সভাপতি হল প্রাধ্যক্ষ সহযোগি অধ্যাপক ড. আমিনুল ইসলাম তাদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন।


শর্টলিংকঃ