মহাপরিকল্পনা রিভিউয়েই আরডিএ’র খরচ ১৯ কোটি টাকা


 বিশেষ প্রতিবেদক :

প্রায় ১৯ কোটি টাকা খরচ করে নগরীর মাস্টারপ্ল্যান বা মহাপরিকল্পনা সংশোধন করছে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-আরডিএ। এটি দেশের শ্রেষ্ঠ মাস্টারপ্ল্যান হবে-এমন দাবি আরডিএ’র। তবে  আলাদা মাস্টারপ্ল্যান করতে এরইমধ্যে চীনের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করেছিল সিটি কর্পোরেশনও। কিন্তু পরে আর আগ্রহ দেখায় নি চীনা প্রতিষ্ঠানটি।

আরডিএ সূত্রে জানা গেছে,  আদর্শ নগরায়ণের জন্য ২০ বছর (২০০৪-২০২৪) মেয়াদি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করে আরডিএ। এর জন্য পদ্মা নদীর চরসহ এর আয়তন নির্ধারণ করা হয় ৩৬৫ বর্গকিলোমিটার। আর চর ছাড়া ৩০০ বর্গকিলোমিটার। পরিকল্পনা গ্রহণের সময় নগরের মোট আয়তনের ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ জলাশয় ছিল।

কর্তৃপক্ষের প্রস্তাব ছিল, পরিবেশ সংরক্ষণ, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ঠিক রাখা ও অগ্নিকাণ্ডের সময় প্রয়োজনীয় পানির উৎসস্থল এবং জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য ৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ জলাশয় (পুকুর) সংরক্ষণ করা হবে। কিন্তু দু-একটি ছাড়া সব পুকুরই ব্যক্তিমালিকানাধীন। আরডিএর মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী এই পুকুরগুলোর শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না। আবার তারা নিজেরাও এই পুকুর রক্ষণাবেক্ষণ করছে না। ফলে এই  মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয় নি।

এদিকে, ২০২৪ সালে এই মহাপরিকল্পনার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। বিগত ২০ বছরে দ্রুতই হয়েছে নগরায়ন। তাই এ মাস্টারপ্ল্যানটি রিভিউ করা হচ্ছে আরো ১০ বছরের জন্য। এজন্য খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ১৯ কোটি টাকা। এরইমধ্যে থাইল্যাণ্ডের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে আরডিএ। কাজও প্রায় দেড় বছর আগে শুরু হয়েছে।

অপরদিকে,  অন্তত ২৫বছরের জন্য আলাদা মাস্টারপ্ল্যান করতে চায় সিটি কর্পোরেশন। বসবাসের জন্য শান্তিপূর্ণ শহর গড়তে নতুন মহাপরিকল্পনার কথা বলছেন মেয়র। এজন্য চীনের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকও হয়েছে।

তবে আরডিএ মনে করে, একই শহরের জন্য দুটি  মহাপরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তা নেই। আরডিএ’র অথরাইজড অফিসার আবুল কালাম আাজাদ বলেন,  সিটি কর্পোরেশনের নতুন কোনো পরিকল্পনা থাকলে তা আরডিএকে জানাতে পারে। তাদের প্রস্তাবগুলো আরডিএ’র সংশোধিত মহাপরিকল্পনায় অন্তর্ভূক্ত করা হবে। কিন্তু আলাদা মহাপরিকল্পনার দরকার নেই।

আর সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, সিটি কর্পোরেশনের বর্ধিত এলাকা নিয়েই আমরা মহাপরিকল্পনা করতে চাই। যানজটমুক্ত বসবাসেরর জন্য শান্তিপূর্ণ শহর গড়তে এর বিকল্প নেই। কিন্তু আরডিএ সরকারের বিপুল টাকা খরচ করে মাত্র ১০বছরের জন্য মহাপরিকল্পনা করছে। এর কোনো যৌক্তিকতা নেই। এজন্য তাদেরকে অন্তত ২৫ বছরের জন্য মহাপরিকল্পনার কথা আমি বলেছি। তারা হয়তো সেটি করবে।

তবে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক জানান,  শিগগিরই সিটি কর্পোরেশনের পরিধি বাড়বে। তাই সাজানো গুছানো এই শহরকে নতুন মাত্রা দিতে আমরা নতুন একটি মহাপরিকল্পনার কথা ভেবেছি। এজন্য চীনের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলাপও হয়েছে। কিন্তু পরে তারা আর এগোয় নি।


শর্টলিংকঃ