মোস্তাফিজের পারফরম্যান্সে অসন্তুষ্ট প্রধান নির্বাচক


তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টিতে একটি উইকেটও পাননি বাংলাদেশের সেরা পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। শুধু ভারতের বিপক্ষে এই টি-টোয়েন্টি ম্যাচেই নয়, সাম্প্রতিক সময়ে মোস্তাফিজের বোলিংয়ের ধার যেন একেবারেই ‘নাই’ হয়ে গেছে। তার বলে আগের মত আর ব্যাটসম্যানরা বিভ্রান্ত হন না। বরং, সপাটে ব্যাট চালিয়ে দিতে পারছেন। ভারতে তো পুরোপুরি হাতাশার জন্ম দিলেন।

টেস্ট দলেও রয়েছেন তিনি। তবে, টি-টোয়েন্টিতে তার পারফরম্যান্স নিয়ে বেশ অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা গেলো প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুকে। তিনি বলেছেন, একটি ম্যাচেও সে নিজেকে ভালোভাবে মেলে ধরতে পারেনি। তাকে নিয়ে ভিন্ন চিন্তা-ভাবনা করতে হবে আমাদেরকে।

রোববার রাতে খেলা শেষ হওয়ার পর আজ সকাল গড়িয়ে দুপুর নামতেই ঢাকায় হঠাৎ গুঞ্জন, দেশে ফিরে আসছেন মোস্তাফিজুর রহমান। ঠিক কেন ফিরে আসছেন? ফর্মহীনতা নাকি ইনজুরির কারণে? তা পরিষ্কার করে বলা না হলেও ক্রিকেট পাড়ায় এমন একটা খবর রটে গিয়েছিল কাটার মাস্টার দেশে ফেরত আসছেন।

সকাল গড়িয়ে দুপুরে রাজকোট থেকে ইন্দোরের ফ্লাইট। তাই টিম ম্যানেজমেন্ট, টিম ম্যানেজার সাব্বির রহমান এবং মিডিয়া ম্যানেজার রাবিদ ইমামকে মুঠোফোনে পাবার অবকাশ ছিল না। দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামতেই ম্যানেজার সাব্বির ও মিডিয়া ম্যানেজার রাবিদ জানালেন, কই নাতো? মোস্তাফিজ তো ফিরে যাচ্ছেন না!  তিনি বলেন, ‘না, না। মোস্তাফিজ দলের সাথে দেশে ফিরবে কেন? সে তো আমাদের সাথে নাগপুরে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে প্রথম টেস্টের জন্য ইন্দোরে চলে এসেছে।’

প্রধান নির্বাচকের এমন কথার পর বুঝতে বাকি থাকে না, নাগপুরে ভারতের বিপক্ষে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি খেলে আজ জাতীয় দলের বহরের সাথে দুপুর গড়ানোর আগেই মোস্তাফিজ ইন্দোর চলে গেছেন। সেখানেই আগামী ১৪ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ হবে, তার প্রথম ম্যাচ শুরু।

তবে প্রশ্ন হলো, মোস্তাফিজকে কি টেস্টের জন্য বিবেচনায় আনা হবে? ইন্দোর ও কলকাতায় ভারতের সাথে টেস্ট একাদশে থাকবেন মোস্তাফিজ? প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর কথা শুনে মনে হলো, মোস্তাফিজের টেস্ট খেলার সম্ভাবনা খুব কম। তার পারফরমেন্স এবং ফিটনেসেও মনে হয় টিম ম্যানেজমেন্ট মোটেও সন্তুষ্ট নয়।

কোনোরকম ভনিতা না করেই মিনহাজুল আবেদিন নান্নু পরিষ্কার বলে দিয়েছেন, টি-টোয়েন্টি সিরিজে মোস্তাফিজের পারফরমেন্স মোটেই সন্তোষজনক নয়। একটি ম্যাচেও সে নিজেকে মেলে ধরতে পারেনি।

শফিউল ও আল আমিনের তুলনা করে প্রধান নির্বাচক বলেন, ‘পেস ডিপার্টমেন্টে শফিউল বেশ ভাল বল করেছে। এখন বাংলাদেশের একমাত্র বোলার শফিউল, যে নতুন বলে সুইং করতে পারে। প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের নাড়া দিতে পারে। অনেকদিন পর ফিরে আল অমিনও ভাল বল করেছে; কিন্তু মোস্তাফিজ একদমই হতাশ করেছে। তার বলে ধার একদমই নেই।’

শুধু লাইন ও লেন্থেই সমস্যা নয়। প্রধান নির্বাচকের কথা শুনে মনে হলো, তারা মোস্তাফিজকে নিয়ে অন্যরকম চিন্তা-ভাবনা করছেন। তাইতো তার মুখে এমন কথা, ‘মোস্তাফিজকে নিয়ে আসলে আরও কাজ করতে হবে। তাকে ঘরোয়া ক্রিকেটে আরও মনোনিবেশ করতে হবে। প্রচুর খেলতেও হবে। সেই সাথে নিজের ফিটনেস লেভেলটাও আরও উন্নত করতে হবে।’

প্রসঙ্গতঃ এবার ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে এতটি উইকেটও পাননি মোস্তাফিজ। রান দিয়েছেন প্রচুর।

প্রথম ম্যাচে যেখানে দলের প্রতিটি বোলার ভাল ও সমীহ জাগানিয়া বল করেছেন, সেখানে মোস্তাফিজের ২ ওভারে রান ওঠে ১৫।

রাজকোটে দ্বিতীয় ম্যাচে দিয়েছেন ৩৫ রান। এরপর রোববার নাগপুরে শেষ ম্যাচে ৪ ওভারে ৪২ রান দিয়ে উইকেট পাননি মোস্তাফিজ।


শর্টলিংকঃ