রাবি প্রক্টরের ‘স্বেচ্ছাচারিতায়’ মতিহার হল প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ


রাবি সংবাদদাতা:

প্রক্টর অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আলী আসগরের অভিযোগ- তিনি গত ১ ফেব্রুয়ারি মতিহার হলে চলতি বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া ‘অবৈধ ছাত্র’কে হল প্রাধ্যক্ষের অনুমতি ছাড়াই তুলে দেন। এর আগে ওই দিন বিকেলে অবৈধভাবে হলে ওঠায় ওই ছাত্রকে বের করে দিয়ে বৈধ ছাত্রকে হলে সিট করে দেন প্রাধ্যক্ষ।

তবে প্রক্টরের দাবি- ‘তিনি অবৈধভাবে কোনো ছাত্রকে হলে তুলে দেন নি।’ তবে প্রাধ্যক্ষের দাবি- তাকে না জানিয়ে নিয়মবর্হিভূত এ কাজ করেছেন প্রক্টর

অধ্যাপক ড. মো. আলী আসগর। ফাইল ছবি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে ‘স্বেচ্ছাচারিতা, অনধিকার চর্চা ও ক্ষমতার অপব্যবহার’ এর অভিযোগে এনে প্রাধ্যক্ষের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন মতিহার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আলী আসগর। সোমবার দুপুরে মতিহার হলে সংবাদ সম্মেলন করে পতদ্যাগের ঘোষণা দেন তিনি।

লিখিত বক্তব্যে অধ্যাপক আলী আসগর জানান, প্রক্টরের অনধিকার চর্চা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের ফলে মতিহার হলের ১২০ নম্বর কক্ষে আবাসিকতাপ্রাপ্ত ছাত্রকে হল থেকে বিতাড়িত করে, তার পরিবর্তে সদ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া জনি মিয়াকে অবৈধভাবে অবস্থানের ব্যবস্থা করা তার পক্ষে নৈতিকভাবে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। সেই কারণে তিনি হল প্রাধ্যক্ষের পদ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করছেন।

রাবির মতিহার হলের প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগপত্র।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত ১ ফেব্রুয়ারি বিকেলে হলে গিয়ে জানতে পারি- ১২০ নম্বর কক্ষে হল প্রশাসক কর্তৃক আবাসিকতাপ্রাপ্ত একজন ছাত্রকে বিতাড়িত করে, তার স্থলে শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগে চলতি বছর ভর্তি হওয়া এক নবাগত ছাত্রকে তোলা হয়েছে। কিন্তু মতিহার হল প্রশাসন এখনও পর্যন্ত ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকৃত কোনো ছাত্রকে আবাসিকতা প্রদানের জন্য আবেদন চেয়ে বিজ্ঞপ্তিই দেইনি। সেখানে সিট দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।

রাবির মতিহার হল। ফাইল ছবি।

প্রাধ্যক্ষ আরও বলেন, হলের সার্বিক ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে ওই দিন বিকেলে অবৈধভাবে ১২০ নং কক্ষে অবস্থান করা জনি মিয়াকে হল থেকে বের করে দেয়া হয়। সেখানে বৈধ ছাত্রকে তোলার ব্যবস্থা করি। কিন্তু আমি হল থেকে চলে আসার পর প্রক্টর মহোদয় সেখানে উপস্থিত হয়ে অবৈধ ওই ছাত্রকে হলে তুলে দেন। আমার অনুমতি না নিয়েই তিনে এ কাজ করেন। যা প্রক্টরের সম্পূর্ণ এখতিয়ার বর্হিভূত।

সংবাদ সম্মেলন করে পদত্যাগের ঘোষণা দেন রাবির মতিহার হল প্রাধ্যক্ষ।

প্রাধ্যক্ষ অভিযোগ করেন, ‘অবৈধভাবে হলে ওঠা ছাত্র জনি মিয়ার আচরণও ছিল ঔদ্ধত্তপূর্ণ। সে আমার ও আবাসিক শিক্ষকের সামনে অশালীনভাবে কথা বলে এবং তাকে বের করে দেয়া ঠেকাতে বিভিন্ন জায়গায় মোবাইল ফোনে কথা বলার চেষ্টা করে।’ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মতিহার হলের আবাসিক শিক্ষক রাকিবুল ইসলাম, সুবেদ চন্দ্র দেব শর্মা ও মো. নূরুজ্জামান।

আরও পড়ুন: ‘অবৈধ ছাত্রকে’ হলছাড়া করলেন প্রাধ্যক্ষ, ফের তুললেন প্রক্টর!

তবে প্রাধ্যক্ষের অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে উনি (প্রাধ্যক্ষ) যেসব অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করছেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি উনার বক্তব্যের প্রতিবাদে বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করবো। সেখানে আমার বিস্তারিত বক্তব্য জানাবো।’  ওই দিন জনি মিয়াকে তিনি হলে তুলে দেননি বলেও দাবি করেন।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক  এম.এ বারী বলেন, ‘মতিহার হলের প্রাধ্যক্ষের কোনো পদত্যাগপত্র এখনও আমি হাতে পাই  নি। তবে শুনেছি- উনি পদত্যাগ করতে চান। পদত্যাগপত্র পেলে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

 


শর্টলিংকঃ