রাব্বির বিয়ের স্বপ্ন পুড়লো আগুনে


কলিট তালুকদার, পাবনা:
বনানীর এফ আর টাওয়ারে ভযাবহ অগ্নিকান্ডে নিহতদের মধ্যে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার আর আতাইকুলা ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের আমির হোসেন রাব্বির মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকের ছায়া পুরো গ্রাম জুড়ে। শোকের মাতমে ভারি হয়ে উঠেছে সেখানকার বাতাস। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে দিশেহারা পিতামাতা।

আমির হোসেন রাব্বি

স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে গ্রামের পুরো পরিবেশ। শুক্রবার সকালে রাব্বির মরদেহ বহনকারী এ্যাম্বুলেন্স তার গ্রামের বাড়িতে এসে পৌছালে এক হৃদয় বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার আর আতাইকুলা ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের কৃষিজীবি আইয়ুব আলীর একমাত্র ছেলে আমির হোসেন রাব্বি। তিন ভাইবোনের মধ্যে সে ছিলো সকলের বড় ও এক মাত্র ছেলে সন্তান। পাবনার শহীদ বুলবুল কলেজ থেকে এইচ এস সি ও এডওয়ার্ড কলেজ থেকে এম এ পাশ করে চাকরিতে যোগ দেন ঢাকা বনানীর এফ আর টাওয়ারের ১১ তলার ইকো লাইন বিডি লিমিটেড নামের একটি কোম্পানীতে। খুব শিগগির বিয়ের পিড়িতে বসার কথা ছিল রাব্বির।

গেলো মাসে বাড়িতে এসে পিতামাতার সাথে সময় কাটিয়ে গেছে। বিয়ে করবে বলে নতুন ঘর তুলবে। নতুন ঘর তুলবে বলে বেশ কিছু ইটও কিনে রেখে গেছেন। কথা ছিল আগামী মাসের প্রথম দিকে বাড়িতে আসবে। সে সাধ পূরণ হলো না রাব্বির। বনানীর এফ আর টাওয়ারের ভয়াবহ আগুনে নিহত হওয়ার মধ্য দিয়ে শেষ হয়ে গেছে রাব্বী ও তার পরিবারের স্বপ্ন। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী, বিনয়ী ও সদালাপী হিসেবে গ্রামের মানুষের কাছে অনেক আদরের ছিলো রাব্বি। তার এমন অনাকাংখিত মৃত্যু যেন নাড়া দিয়েছে তার পুরো গ্রামের মানুষকে। একমাত্র সন্তানের এমন মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ রাব্বির পিতা আইয়ুব আলী ও মা রহিমা খাতুন।

আগুনের ঘটনার পর রাব্বির বন্ধু মাসুদ রানা, রাব্বির খোঁজ করে তার কোন খোঁজ না পেয়ে রাত সাড়ে ১১ টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেন মর্গে গিয়ে রাব্বির মরদেহ দেখে সনাক্ত করে বাড়িতে খবর দেয়। খবর পেয়ে রাব্বির চাচা ঢাকা গিয়ে মরদেহ গ্রহন করেন।

রাব্বির চাচা আব্দুর রশিদ জানান, ভাতিজা রাব্বী যে ভবনে থাকে সেখানে অগ্নিকান্ডের খবর জেনে ঢাকা ছুটে যাই। সেখানে রাব্বির বন্ধু মাসুদ রানাকে সাথে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে মরদেহ সনাক্ত করে বাড়িতে নিয়ে আসি।

এদিকে শুক্রবার সকালে আমির হোসেন রাব্বীর বাড়িতে গিয়ে পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন। এ সময় তিনি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষনিক নিহতের পরিবারকে বিশ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। শুক্রবার বাদ জুম্মা রাব্বির নামাজে জানাযা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।


শর্টলিংকঃ