রামেক হাসপাতালে পড়ে থাকা পিসিআর বসছে করোনা ল্যাবে


বিশেষ প্রতিবেদক : 

এই পিসিআর মেশিনটি কয়েক বছর আগে এই হাসপাতালে আনা হয়। কিন্তু গেল তিন বছরে ধরে এটি পড়েছিল। অবকাঠামো ও জনবলের অভাবে দামী ও গুরুত্বপূর্ণ মেশিনটি কোনো কাজে আসে নি। করোনা শনাক্তে পরীক্ষার-নিরীক্ষায় এখন এটি কাজে লাগাতে চায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে এখন মেশিনটি সচল আছে কি না তা যাচাইয়ের পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।

করোনা টেস্টের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আউটডোর প্যাথলজি বিভাগে আরেকটি পলিমার চেইন রিঅ্যাকশন (পিসিআর) মেশিন বসানো হচ্ছে। তবে পড়ে থাকা পিসিআর মেশিনটি কাজে লাগাতে গত ৭ এপ্রিল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. আব্দুল হান্নান মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষকে চিঠি দেন। ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়,  হাসপাতালের বর্হিবিভাগে একটি পিসিআর মেশিন রয়েছে। প্রয়োজনীয় জনবল ও অবকাঠামো না থাকায় মেশিনটি ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই মেশিনটি কোভিড-১৯ করোনা  পরীক্ষার কাজে ভাইরোলজি বিভাগে ব্যবহারের জন্য অনুরোধ করা হয়।

তবে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবাইলজি বিভাগের একজন অধ্যাপক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান,  দ্বিতীয় ল্যাব বসানোর উদ্যোগ ভাল। তবে পড়ে থেকেই পিসিআর মেশিনটির ওয়ারেন্টি পিরিয়ড সম্ভবত শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সেটি ইন্সটল করা হয় নি।  পিসিআর মেশিন ইন্সটল করতে হলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ারকে আনতে হবে। পড়ে থেকে মেশিনটির কোনো পার্টস অকেজো হয়ে গেল কি না সেটিও বড় প্রশ্ন। তাছাড়া তিন বছর আগে পাওয়া এই মেশিনের ইক্যুইপমেন্ট বা যন্ত্রাংশ মার্কেটে অ্যাভিয়েলেবল কি না সেটিও দেখা দরকার।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. আব্দুল হান্নান বলেন, ‘আমি ৬/৭মাস আগে এখানে এসেছি। মেশিনটি এসেছে আনেক আগে। কাজেই এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না’। তিনি প্যাথলজি বিভাগের প্রধান ডা. বিমল বসুর সাথে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।

তবে ডা. বিমল বসু বলছেন, আজকে (সোমবার) ইঞ্জিনিয়াররা ভিজিট করে গেছেন। কাল থেকে কনস্ট্রাকশনের কাজ শুরু হবে। এটি থাকার কথা ভাইরোলজিতে। কিন্তু দেয়া হয় বহির্বিভাগের প্যাথলজিতে দেয়া হয়। জায়গার অভাবে এটি পড়েছিল। এখনো প্যাকেট অবস্থায় আছে। এখন ইন্সটল করা হবে। পিসিআর মেশিনটি ঢাকা সেন্ট্রাল স্টোর থেকে পুশ সিস্টিমে দেয়া হয়েছিল। বিস্তারিত জানতে তিনি হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস মো. খায়রুল আতাতুর্কের সাথে যোগাযোগের জন্য বলেন।  তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হন নি।

এদিকে, পুঠিয়ার একব্যক্তির শরীরে করোনা শনাক্ত হওয়ার পর সোমবার বেলা ১১টায় রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে শীর্ষ কর্মকর্তা এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে বিভাগীয় কমিশনার হুমায়ুন কবির খন্দকার সাংবাদিকদের জানান, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের করোনা ল্যাবের চাপ কমাতে আরেকটি ল্যাব স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে পিসিআর মেশিন সম্পর্কে তার  কোনো ধারণা নেই।

বিভাগীয় কমিশনার আরো বলেন, পরিস্থিতি জটিল হলে সব ধরনের করণীয় ঠিক করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি বেসরকারী হাসপাতাল রাশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অধীনে ন্যস্ত করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসকের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা ঠিক করা হয়েছে। যাতে যে কোনো ধরনের পরিস্থিতি আমরা মোকাবেলা করতে পারি।

উল্লেখ্য, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগে স্থাপিত করোনা ল্যাব পহেলা এপ্রিল থেকে চালু হয়।এখানে প্রতিদিন রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে নামুনা আসছে। তবে ৯৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে।


শর্টলিংকঃ