রেশমের নায্যমূল্য পেয়ে খুশি চাঁপাইনবাবগঞ্জের চাষীরা


নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ:

ফলন ভাল হওয়ায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রেশম গুঠি বস্তায় ভরছেন রেশম চাষি সমরুদ্দিন। এ সময় কথা হয় তার সঙ্গে।

তিনি পারিবারিকভাবেই রেশম চাষের সঙ্গে জড়িত। পরিবার নিয়ে বসবাস করেনে উপজেলার চরধরমপুর গ্রামে। তার দাবি-দীর্ঘদিন ধরে রেশম চাষ করলেও নায্যমূল্য না পাওয়ায় তেমনভাবে লাভের মুখ দেখেননি। তার পরেও ফিরে আসেননি রেশম চাষ থেকে।

পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রাখতে লোকশানের পরেও চাষ করেছেন রেশম । তবে বর্তমানে রেশমের ফলন ভাল ও নায্যমূল্য পাওয়ায় খুশি তিনি ও তার পরিবার। তিনি বলেন,বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডে ডিজি আবদুল হাকিম ও পিডি আবদুল মান্নান যোগদান করার পর থেকে ভোলাহাট উপজেলার ১৬০জন রেশম চাষি রেশমের বাম্পার ফলন ও নায্য মূল্য পেতে শুরু করেছেন। কারন হিসেবে তিনি বলেন,বর্তমানে রেশম বোর্ডের ঊর্দ্দতণ কর্মকতার্রা রেশম চাষীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগসহ সার্বিক সুযোগ সুবিধা দিচ্ছেন।

এছাড়াও বর্তমানে জীবানূমুক্ত ডিম সরবরাহ করেছেন। সে ডিম থেকে এক বছরে ৪টি বন্দ অগ্রণী, চৈয়তা, জৈষ্ঠি ও ভাদরি বন্দে রেশমের বাম্পার ফলন পেয়েছেন চাষিরা। তিনি আরও বলেন,৪টি বন্দে ১শত ডিমে আগে মাত্র ৪০ থেকে ৫০ কেজি ফলন হত।

আর বর্তমানে ফলন পাওয়া যাচ্ছে ১শ ডিমে ৯০-৯৫ কেজি। পূর্বে মণ প্রতি দাম ছিল মাত্র ৮-৯ হাজার টাকা এখন দাম ১৪-১৫ হাজার টাকা মণ। ফলে সব মিলিয়ে রেশম চাষিদের রেশম চাষে আগ্রহ বাড়ছে। পুরাতন ১৬০ জন চাষি রেশমের ফলন ও দাম পেয়ে পরিবারে যেমন স্বচ্ছলতা ফিরে পেয়েছেন তেমনি রেশম চাষে আগ্রহ জাগছে নতুনদের। সমরুদ্দিন জানান, আগ্রহী চাষিদের মাঝে উন্নতমানের তঁুত চারা সরবরাহসহ আর্থিক সহায়তা দিলে রেশম চাষ পূর্বের ঐতিহ্য ফিরে পাবে বাড়বে রেশম চাষিদের পরিবারে স্বচ্ছলতা।

একই কথা জানান,চরধরমপুর গ্রামের রেশম চাষি বজলুর রশিদ, সায়েদা খাতুন, ধরমপুর গ্রামের তোফাজ্জুল হক, বজরাটেক গ্রামের হামিদুলের। তারা বলেন, রেশমের বাম্পার ফলনে তাদের পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরে আসছে। তাদের ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠিয়ে শিক্ষিত করার সুযোগ পাচ্ছেন।

ভোলাহাট রেশম বোর্ড ফার্ম ম্যানেজার মাইনুল ইসলাম জানান, রেশমের বাম্পার ফলনের প্রধান কারন হল- জীবানুমুক্ত ডিম সরবরাহ, নিয়মিত প্রশিক্ষণ প্রদান ও বাড়ীতে গিয়ে পরামর্শ দেয়ার কারণে রেশমের বাম্পার ফলন হয়েছে । রেশম চাষিদের দাবী- এমন সহায়তা বজায় থাকলে দ্রুত ঘুরে  দাঁড়াবে রেশমের পূর্বের ঐতিহ্য।

প্রসঙ্গত,চলতি বছরে ভোলাহা রেশম বোর্ডের নিজস্ব জমিতে রেশম চাষ হয়েছে ৬৭বিঘা ও পুরো উপজেলায় চাষ হয়েছে ২১৭ বিঘা জমিতে।


শর্টলিংকঃ