‘লকডাউনের সুযোগে জঙ্গিরা অনলাইনে ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছে’


ইউএনভি ডেস্ক:

বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে মানুষ স্বাভাবিকভাবে বেশি সময় বাসায় থাকছেন। এখন বাসায় ধর্মীয় সাইটগুলোতে বেশি ভিজিট করছে মানুষ। এই সুযোগ নিয়ে জঙ্গিরা অনলাইনে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে।

লোন উলফ বা একাকী হামলার জন্য তারা উদ্বুদ্ধ করছে। পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা করার জন্য তারা বেশি প্রচারণা চালাচ্ছে। কী কী কায়দায় হামলা করতে হবে, একটি হাতুড়ি হলেও সেটি নিয়ে হামলা করার প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে।

রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলায় নিহতদের শ্রদ্ধা জানানো শেষে বুধবার এ সব কথা বলেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।এ সময় ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন র্যাাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ও বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, এ যাবতকালে আমরা সবচেয়ে বড় যে জঙ্গি হামলার মুখোমুখি হয়েছিলাম সেটি ছিল হলি আর্টিজান হামলা। সেটির চার বছরপূর্তি আজ। আমরা এখানে যে দু’জন সহকর্মীকে হারিয়েছিলাম তাদের প্রতি শ্রদ্ধা। যে সমস্ত দেশি-বিদেশি নাগরিক, নিরীহ মানুষ এই নৃশংসতার বলি হয়েছিলেন তাদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা ও মাগফিরাত কামনা করছি। যারা এ ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন তারা সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে নিহত হন। পুরো ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন ইতিমধ্যে আমরা তাদের সবার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছি। সবার সাজা হয়েছে। তবে সাতজন সাজাপ্রাপ্ত জঙ্গি আপিল করেছে, আপিলের শুনানি এখনও শুরু হয়নি। করোনার পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে হয়তো এই প্রক্রিয়াটি শুরু হবে।

তিনি বলেন, হলি আর্টিজান হামলার ওই ঘটনার পরে বাংলাদেশ পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা যেমন ঢেলে সাজানো হয়েছে। জঙ্গিবাদে যারা জড়িত তাদের সক্ষমতা, ক্ষমতা সম্পর্কেও আমাদের একটা সুস্পষ্ট ধারণা হয়েছে।

ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, হলি আর্টিজান হামলার পর থেকে একের পর এক জঙ্গি আস্তানা গুঁড়িয়ে দিয়েছি। ওদের সক্ষমতা এখন একেবারে সর্বনিম্ন পর্যায়ে। এখন তারা যে সমস্ত ইম্প্রভাইজ বা বোমা বানায় সেগুলোও নিম্নমানের। এ ক্ষেত্রে এক্সপার্ট যারা ছিল তাদের সবাই আমাদের হাতে ধরা পড়েছে। তারা জেলে আছে। অনেকে বিভিন্ন অভিযানে নিহত হয়েছে।

মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, জঙ্গিরা এখন অনলাইনে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালালেও তেমন কোনো মানুষকে এই জঙ্গিবাদের দিকে উদ্বুদ্ধ করতে পারেনি বা সংঘবদ্ধভাবে আবার এ দেশে জঙ্গিবাদের কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য যে সাংগঠনিক ব্যবস্থার প্রয়োজন তা গড়ে তুলতে পেরেছে, সেরকম কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। তবে এটুকু বলতে পারি, ছোটখাটো কিছু সক্ষমতা তাদের থাকতে পারে। কিন্তু বড় ধরনের কিছু করার ঘটনা সক্ষমতা তাদের নেই।

২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসীরা ভয়াবহ হামলা চালায়। এতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ দেশি-বিদেশি ২২ জন নিরীহ নাগরিক নিহত হন।

এই সন্ত্রাসী হামলা প্রতিহত করতে গিয়ে অকালে আত্মত্যাগ করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের দুই কর্মকর্তা সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার রবিউল করিম ও বনানী থানার ওসি সালাহ উদ্দিন খান। তাদের স্মরণে ও হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলায় পুলিশের আত্মত্যাগকে স্মরণ করতে পুরনো গুলশান থানার সামনে ২০১৮ সালের ১ জুলাই ‘দীপ্ত শপথ’ নামে একটি ভাস্কর্য উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার।


শর্টলিংকঃ