শীতের শুরুতেই খেজুরের গুড়ে ভেজালের হিড়িক


আবু হাসাদ কামাল, পুঠিয়া :
শীত মৌসুম শুরু হচ্ছে সবে মাত্র। শীতের আগমনীতে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা জুড়ে স্থানীয় গাছিয়ারা (স্থানীয় ভাষা) খেজুর গাছ গুলোতে রস আহরণে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ, বেশী লাভের আশায় খেজুরের রসে চিনিসহ বিভিন্ন উপকরণ মিশিয়ে ভেজাল গুড় তৈরি করা হচ্ছে।

আর ওই ভেজাল গুড় গুলো স্থানীয় হাট-বাজারের আড়ৎ গুলোতে পুরোদমে কেনা-বেচা চলছে। যার ফলে ওই ভেজাল গুড় খেয়ে সাধারণ ক্রেতারা স্বাস্থ্য ঝুকিতে পড়বেন বলে আশঙ্কা রয়েছে।

জানাগেছে, জেলার সব চেয়ে বেশী খেজুরের গুড় উৎপাদন হয় পুঠিয়া উপজেলায়। তবে কি পরিমান খেজুরের বাগান বা গাছ রয়েছে তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই কৃষি অফিসে। কৃষি অফিস বলছেন, প্রতিবছর যত্রতত্র ভাবে নতুন নতুন খেজুরের গাছের জন্ম হচ্ছে। আবার চাষিরা পুরোনো গাছ গুলো কেটে ফেলছেন।

পুঠিয়া সদর এলাকার গাছিয়া আলমগীর হোসেন বলেন, এখন বাজার গুলোতে যে গুড় গুলো কেনা-বেচা হয় তার মধ্যে দু’একজন বাদে সব গুড়ে ভেজাল আছে। এটা গত কয়েক বছর থেকে শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, চিনির দাম কম ও খেজুরের গুড়ের দাম বেশী হওয়ায় গাছিয়ারা ব্যাপক হারে চিনি মেশাচ্ছেন। এছাড়া আরো কয়েকটি উপকরণ রয়েছে যা গুড় গুলোর দেখতে সৌন্দর্য ও শক্ত রাখে।

এদিকে মৌসুমের শুরুতে খেজুরের গুড়ে ভেজাল দেয়ার অভিযোগে সম্প্রতি বানেশ্বর বাজারে অভিযান চালিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওলিউজ্জামান। অভিযানে তিনি গুড়ে ভেজাল পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি সেখানে এক লাখ ৩৭ হাজার টাকা মূল্যের ৮৩ ঝুড়ি গুড় জব্দ করেন। পরে ভেজাল গুড় ক্রয়-বিক্রয় ও মজুদ রাখার দায়ে বাজারের মেসার্স আমীন ট্রেডাসের মালিক আমির হোসেনকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।

গুড় আড়ৎদার আসলাম হোসেন বলেন, এই অঞ্চলের খেজুরের গুড় দেশ-বিদেশে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আমরা সরাসরি কৃষকদের নিকট থেকে কিনে প্যাকেটজাত করে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠিয়ে থাকি। তবে গুড়ে চাষিরা কি কি ভেজাল মিশ্রণ করেন তা আমরা জানি না। তবে চাহিদা মোতাবেক সৌন্দর্য ও শক্ত গুড় গুলো বেশী কেনা হয়।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওলিউজ্জামান বলেন, যেখানেই ভেজাল গুড় থাকবে সেখানেই অভিযান চলবে। তিনি আরো বলেন, শুধু হাট-বাজার বা আড়ৎ গুলোতেই নয়, ভেজাল প্রতিরোধে প্রয়োজনে গুড় উৎপাদনকারী চাষিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অভিযান চালানো হবে। আর ভেজালকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।


শর্টলিংকঃ