হঠাৎ ঝড়ে আমচাষিদের ‘মাথায় হাত’


নিজস্ব প্রতিবেদক:

ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে ভারী বৃষ্টিপাতে বাম্পার ফলনের আশায় বুক বেঁধেছিলেন রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমচাষিরা। প্রশাসনের নির্দেশে বুধবার (১৫ মে) থেকে গাছ থেকে আম পাড়ার জন্য শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় কাটছিল তাদের।

তবে হঠাৎ সোমবার (১৩ মে) রাতে আধাঘণ্টার ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এ অঞ্চলের আমচাষিরা। যদিও ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ এখনও নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। তবে এমন সময়ের ঝড়ের মাথায় হাত পড়েছে চাষিদের।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক মো. ফরিদুল ইসলাম ইউনিভার্সাল২৪নিউজ -কে জানান, ঝড়ের সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ৪৫/৫০ কিলোমিটার। প্রায় আধাঘণ্টাব্যাপী ঝড় হলেও ৩/৪ মিনিট এই গতিবেগ ছিল। সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এ অঞ্চলে ১০ দশমিক শূন্য ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

খোঁজ নিজে জানা গেছে, রাজশাহীর বানেশ্বর, পুঠিয়া, মোহনপুর, পবা, বাঘা ও চারঘাটে ঝড়ে গাছ থেকে আম ঝরে পড়েছে। এর মধ্যে বানেশ্বর ও পুঠিয়ায় সবচেয়ে বেশি আম পড়ে গেছে। পড়ে যাওয়া আম বাজারজাতকরণের কোনো উপায় নেই। অথচ তিন/চার দিন পরই গাছ থেকে আম নামানোর কথা ছিল।

বানেশ্বর এলাকার আমচাষি ইয়াকুব আলী ইউনিভার্সাল২৪নিউজ-কে বলেন, ‘আমার বাগানে অনেক আম পড়ে গেছে। কিছু গাছের ডালও ভেঙে পড়েছে। কদিন বাদেই আমগুলো পাড়া যেত। এই সময়ে আম পড়ায় খুব ক্ষতি হয়ে গেল।’

মোহনপুরের আমচাষি ফিরোজ আলী বলেন, ‘ঝড়ের পরপরই বাগানে এসেছি। আমার বাগানে গাছ ছোট হওয়ায় খুব বেশি আম পড়েনি। তবে আমার বাগানের পাশেই সিদ্দিকুর নামে আমার চাচাতো ভাইয়ের বাগানে ব্যাপক হারে আম পড়ে গেছে। আশেপাশের অন্য কয়েকটি বাগানেও বেশ আম পড়েছে। এই সময়ে এমন ঝড়ে ক্ষতি হয়ে গেল।’

এদিকে, আমের জেলা হিসেবে পরিচিত চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঝড়ে সদর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি আম পড়েছে। সদর উপজেলায় ঝড়ের গতিবেগও বেশি ছিল। ঝড়ের পর রাতে বাইরে বের হয়ে দেখা গেছে, রাস্তার পাশে গাছ উপড়ে পড়েছে। ছোট ছোট বাগানের আম ব্যাপক হারে পড়ে গেছে।

চাঁপাই সদর উপজেলার শিয়ালা কলোনির বাগান মালিক মুস্তাক জানান, হঠাৎ কয়েক দফা দমকা ঝড় হওয়ার পর বাইরে গিয়ে দেখি, গাছ থেকে অনেক আম পড়ে গেছে। যার ফেটে একদম নষ্ট হয়ে গেছে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামসুল হক বলেন, ‘ঝড়ে আমচাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জেনেছি। কৃষি অধিদফতর আগামীকাল (মঙ্গলবার, ১৪ মে) এ ব্যাপারে খোঁজখবর নেবে। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের তথ্য সংগ্রহ করে সরকারের উচ্চপর্যায়ে প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানান হবে।’


শর্টলিংকঃ