চীনে ইঞ্জিনিয়ারিং কেন পড়বেন, কেন পড়বেন না


মোকাররম আলাভী: 
বাংলাদেশ থেকে এখন অনেক শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য চীনে আসছেন। অন্যদিকে চীনের অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। তবে অনেকে সঠিক তথ্যের অভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এটিই আজকের লেখার মূল প্রতিপাদ্য।

Study in China
শুরুতে আলোচনা করছি কেন পড়বেন না আর নানান সুযোগ-সুবিধাগুলো সম্পর্কে।

কিছু স্কলারশিপ শিক্ষার্থীর সম্পূর্ণ খরচ অর্থাৎ​ টিউশন ফি থেকে শুরু করে বিনা মূল্যে আবাসন প্রদান করে। সঙ্গে দেয় নির্দিষ্ট পরিমাণ মাসিক খরচ। আর কিছু আছে শুধু টিউশন ফি স্কলারশিপ হিসেবে দেয়। আর যদি স্কলারশিপ নাও পান তবে নিজ খরচে পড়ার সুবিধাও রয়েছে।

আন্তর্জাতিকমানের বিশ্ববিদ্যালয় আর ল্যাব সুবিধা। গবেষণারও সুযোগ প্রচুর।

যেকোনো বিভাগ থেকে যেকোনো গ্রেড পয়েন্ট দিয়ে ভর্তি হওয়া যায়। পাস করা বাংলাদেশের চেয়ে তুলনামূলকভাবে সোজা।

আইইএলটিএস অথবা টোফেলের দরকার পড়ে না। তবে এইচএসকে (আইইএলটিএস–টোফেলের মতো চীনা ভাষা নিরীক্ষণ পরীক্ষা) পাস করতে হবে। কিন্তু আবেদন করার জন্য তা বাধ্যতামূলক নয়। স্নাতক হওয়ার আগে পাস করলেই হয়।

কোনো সেশনজট নেই। শিক্ষার সুন্দর পরিবেশ। আছে সমৃদ্ধ লাইব্রেরি ও খেলাধুলার জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা।

জীবনযাত্রার ব্যয় তেমন বেশি নয়। শহর ভেদে ৬ থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে।

চীনের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি পড়াশোনার বাইরেও চোখ খুলে দিবে।

Study in china with scholarship

কেন পড়বেন না সে বিষয়ে আলোকপাত করছি এখন।

চীনে পড়াশোনায় ভালো করতে হলে আপনাকে চীনা ভাষা শিখতেই হবে। আর বলাই বাহুল্য চীনা ভাষা পৃথিবীর কঠিনতম ভাষাগুলোর একটি। আর এখানে ইংরেজিতে পাঠদান করা হলেও অধিকাংশ শিক্ষকের ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা অতি অল্প। যদিও তারা অনেক যোগ্যতাসম্পন্ন। তাই আপনার এগিয়ে যাওয়া অনেকাংশে নির্ভর করবে আপনার খাটুনির ওপর।

চীনের বাজারে চাকরি নেই বললেই চলে। পার্টটাইম জবের সুবিধাও খুব অল্প অথবা নেই বললেই চলে। তাই যাদের চীনে ক্যারিয়ার গড়ার ইচ্ছে, তাদের সামনে অনেক বন্ধুর পথ। তবে ব্যবসার জন্য অনেক সুযোগ-সুবিধা আছে।

অনেকের জন্য আবহাওয়ার বিষয়টিও মাথায় রাখা প্রয়োজন। কিছু কিছু অঞ্চল আছে মাত্রাতিরিক্ত ঠান্ডা। তাই আবেদন করার আগে জেনে নিতে হবে ওই অঞ্চলের আবহাওয়া কেমন।

কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ফেল করলে স্কলারশিপ বাদ দিয়ে দেয়। পাস মার্ক ৬০। তাই জেনে নিতে হবে এই ব্যাপারেও।

এবার আসি আবেদনের বিষয়ে। যা সবচেয়ে ঝামেলাপূর্ণ। ব্যাচেলর ডিগ্রির জন্য মূলত এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করা লাগে। সেশন শুরু হয় মূলত সেপ্টেম্বর আর মার্চে। তবে মার্চ সেশন খুব অল্প বিশ্ববিদ্যালয়েই থাকে। শুরুতে অফার লেটার দেওয়া হয়। এরপর জেডব্লিউ ২০২, যা দিয়ে ভিসা নিতে হয়। মেডিকেল চেকআপ করতে হয় ভিসার জন্য।

অফার লেটারের তথ্যগুলো নিজে অথবা বিশ্বস্ত কাউকে দিয়ে যাচাই করা শ্রেয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় এসব এজেন্ট ভুলভাল তথ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আসে। পরে তারা পড়ে যান উভয়সংকটে। সে জন্য পরিপূর্ণ তথ্য জেনেই আবেদন করা ভালো। এ ক্ষেত্রে অনলাইন মাধ্যমগুলোতে জেনে নিতে পারেন বিস্তারিত তথ্য। ঘাটতে পারেন আপনার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট। সর্বোপরি ক্যারিয়ার আপনার। বুঝেশুনে সিদ্ধান্ত নিন। আর সতর্ক থাকুন যাতে প্রতারিত হতে না হয়।

পরবর্তীতে মেডিকেল শিক্ষা নিয়ে লেখার প্রত্যয় ব্যক্ত করে শেষ করছি। সকলের ক্যারিয়ারের জন্য শুভ কামনা।


শর্টলিংকঃ