একসঙ্গেই পুড়েছিল দুই বান্ধবী


ইউএনভি ডেস্ক:

দুই বান্ধবী পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় নিহত কি-না এই শঙ্কা নিয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি ঘটনাস্থলে এসেছিলেন ফাতেমা তুজ জোহরা বৃষ্টি ও তার বান্ধবী রেনুমা তাবাসসুম দোলার ভাই। অবশেষে তাদের শঙ্কাই সত্য হল। দুজনই চুড়িহাট্টার পাশ দিয়ে রিকশায় যাওয়ার সময় প্রাণ হারান।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে শিল্পকলা একাডেমি থেকে একসঙ্গে কবিতা আবৃতির অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফিরছিলেন দুই বান্ধবী। এরপর থেকে হঠাৎ নিখোঁজ দুজন। দু’দিন ধরে বোনকে খুঁজে না পেয়ে গিয়েছিলেন মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কাছে। ডিবি জানায়, অগ্নিকাণ্ডের দিন রাত সোয়া ১০টায় ফাতেমার মোবাইল সর্বশেষ বেগমবাজারের লোকেশনে ছিল। ডিবির তথ্যে আতঙ্কিত দুই পরিবার।

 

৬ মার্চ সিআইডি ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে বৃষ্টির পরিচয় শনাক্ত করে। সেদিন আরও একজন নারীর মরদেহ শনাক্ত করা হয়েছিল। সবাই ভেবেছিল সেটা হয়তো দোলার। তবে সেটি ছিল নাসরিন জাহান নামে আরেক নারীর। মঙ্গলবার দ্বিতীয় ধাপে পাঁচটি মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করে সিআইডি। এর মধ্যে মিললো দোলার মরদেহ।

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি জানায়, দোলার বাবা দলিলুর রহমান দুলালের ডিএনএ নমুনার সঙ্গে এটি মিলে যাওয়ায় নিশ্চিত হওয়া গেছে যে এটিই তার মরদেহ। মরদেহ হস্তান্তরের জন্য ইতোমধ্যে শনাক্তদের পরিচয় চকবাজার থানা পুলিশের কাছে পাঠানো হয়েছে।

২৫ ফেব্রুয়ারি দোলার মা সুফিয়া বেগম বলেছিলেন, আমার বিশ্বাস ওরা কেউই আগুনে মারা যায়নি।

একসঙ্গে না ফেরার দেশে যাওয়া দুই বান্ধবীর বিষয়ে বৃষ্টির ভাই মোস্তাফিজুর বলেন, বৃষ্টি ও দোলা চতুর্থ শ্রেণি থেকে একসঙ্গে অগ্রণী স্কুলে পড়েছে। এরপর সিটি কলেজে একসঙ্গে এইচএসসি। পরবর্তীতে দোলা মিরপুর বিওপি কলেজ ও বৃষ্টি গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজে ভর্তি হয়। তা সত্ত্বেও তাদের বন্ধুত্বে কমতি হয়নি। এমনকি তাদের পরিবারের সঙ্গেও আমাদের বন্ধুত্ব হয়েছে। ওরা যে এভাবে একসঙ্গে হারিয়ে যাবে কল্পনাও করিনি।

মঙ্গলবার শনাক্ত হওয়া অন্য মরদেহগুলো হাজি ইসমাইল, ফয়সাল সারোওয়ার, মোস্তফা এবং মো. জাফরের।

২০ ফেব্রুয়ারি রাতে পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টার ৬৪ নম্বর হাজী ওয়াহেদ ম্যানশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। সিআইডির তথ্য অনুযায়ী, এ ঘটনায় ঘটনাস্থলে ৬৬ জন মারা গেছে।

পরে আহত ও দগ্ধ অবস্থায় চিকিৎসাধীন চারজন মারা যান। ২২ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ এলাকায় স্বজন দাবিদারদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে সিআইডি।


শর্টলিংকঃ