গাপটিলের সেঞ্চুরিতে অনায়াসে জিতল নিউজিল্যান্ড


ক্রীড়া ডেস্ক :

জয়ের টার্গেট মাত্র ২৩৩ রান। তবে রান তাড়ায় নামা নিউজিল্যান্ড কোন সময়ে তাড়াহুড়ো দেখায়নি। ধীরলয়ে সামনে বাড়ে। অনায়াস ভঙ্গিতেই ম্যাচ জিতে নেয় বড় ব্যবধানে। নেপিয়ারে ম্যাকলিন পার্কে ৮ উইকেটের এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজের সিরিজে স্বাগতিকরা এগিয়ে গেলো ১-০ ব্যবধানে।

ফিফটির পর মিঠুন, তাঁর ব্যাটেই কোনোভাবে বাংলাদেশের রক্ষা! ছবি: এএফপি

মার্টিন গাপটিলের অপরাজিত ১১৭ রানের সেঞ্চুরি, আরেক ওপেনার হেনরি নিকোলসের ৫৩ এবং রস টেইলের হার না মানা ৪৫ রানের সুবাদে হেসেখেলেই ম্যাচ জিতে নেয় নিউজিল্যান্ড।

এই ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটিং নিয়ে একটা সংজ্ঞাই দেয়া যায়- ‘সংকটে পতিত ব্যাটিংকে উদ্ধারের প্রক্রিয়া!’ ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারে তামিম ইকবালকে হারানোর পর বাংলাদেশ সেই যে ব্যাটিং সঙ্কটে পড়ে, ইনিংসের বাকি সময়জুড়ে তখন পুরো দলের একটাই কাজ; সঙ্কট মোচন! মোহাম্মদ মিঠুন, মেহেদি মিরাজ ও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের ব্যাটে সেই সমস্যা কাটিয়ে উঠে ২৩২ রান যোগাড় করে বাংলাদেশ।

এই রান বাংলাদেশকে শুরুর সঙ্কট থেকে উদ্ধার করলেও ম্যাচ জেতানোর মতো নিরাপদ কিছু সঞ্চয় হতে পারেনি! নিউজিল্যান্ডের মতো শক্তিমান দলকে হারাতে এত কম রানের যোগাড়ে কিছু হয় না।

ম্যাকলিন পার্কের উইকেট যে একেবারে মাইন ফিল্ড ছিলো; এমনকিছু না। সমস্যা হলো বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা ইনিংস সাজানোর জন্য একটু বেশি তাড়াহুড়ো দেখিয়ে উইকেট খোয়ান। ফুলার লেন্থে আসা সব বলে শট খেলা নিউজিল্যান্ডের উইকেটে বড় বিপদের কারণ। তামিম ইকবালের আউটই তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ।

কিউইদের শুরুর পেস বোলিংটাই সামাল দিতে পারেনি বাংলাদেশ। তামিম, লিটন দাস ও মুশফিক রহিম-শুরুরদিকের এই তিন ব্যাটসম্যান সিঙ্গেল ডিজিটে আউট। সৌম্য সরকার টি-টুয়েন্টি ষ্টাইলে শুরু করেছিলেন, কিন্তু ইনিংস লম্বা করতে পারলেন না। একটু বেশি মাত্রায় আক্রমনাত্মক হতে গিয়ে উইকেট হারালেন সৌম্য।

সেঞ্চুরি করেছেন গাপটিল। ছবি: এএফপি

৪২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধাক্কা খায় বাংলাদেশের শুরুর ইনিংস। মাহমুদউল্লাহ ও সাব্বির রহমানও সেই সঙ্কট কাটাতে পারেননি। একপ্রান্ত আঁকড়ে মোহাম্মদ মিঠুন লড়াইটা চালিয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ এই ম্যাচের স্কোরকার্ডে বলার মতো রান জমা করতে পারে।

মিঠুনের ৬২ রানের সঙ্গে ভাল সমর্থন দেন মেহেদি হাসান মিরাজ। তবে লড়াইয়ে মিঠুনের যোগ্য সঙ্গী হিসেবে সবচেয়ে বেশি নম্বর পাচ্ছেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৮ বলে ৪১ রান করেন তিনি। মামুলি ব্যাটিংয়ের মতো ম্যাচে বোলিংটাও হলো বাংলাদেশের ভীষণ রকমের দুর্বল! ২২.৩ ওভারে ওপেনিং জুটিতেই নিউজিল্যান্ড তুলে নিলো ১২২ রান। একটু জানিয়ে রাখি, ইনিংসের ঠিক এই সময়টায় বাংলাদেশের স্কোর ছিলো ৯৪ রানে ৬ উইকেট!

এই ম্যাচে দু’দলের মধ্যে ব্যবধানটাও ওখানেই স্পষ্ঠ! ইনজুরি কাটিয়ে অনেকদিন পরে দলে ফেরাটা উদযাপন করলেন ওপেনার মার্টিন গাপটিল সেঞ্চুরির আনন্দে। ম্যাচ জিততে নিউজিল্যান্ড ৪৪.৩ ওভার ব্যয় করলেও কখনোই মনে হয়নি এই ম্যাচে তাদের জয় ছাড়া অন্যকিছু ঘটছে! ঘটেওনি!

সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ: ২৩২/১০ (৪৮.৫ ওভারে, তামিম ৫, লিটন ১, সৌম্য ৩০, মুশফিক ৫, মিঠুন ৬২, মাহমুদুল্লাহ ১৩, সাব্বির ১৩, মেহেদি হাসান ২৬, সাইফুদ্দিন ৪১, মাশরাফি ৯*, মুস্তাফিজুর ০, অতিরিক্ত ২৭, হেনরি ২/৪৮, বোল্ট ৩/৪০, ফার্গুসন ২/৪৪, স্যান্টার ৩/৪৫)।

নিউজিল্যান্ড: ২৩৩/২ (৪৪.৩ ওভারে, গাপটিল ১১৭*, নিকোলস ৫৩, উইলিয়ামসন ১১, টেইলর ৪৫*, মেহেদি ১/৪২, মাহমুদউল্লাহ ১/২৭)।

ফল: নিউজিল্যান্ড ৮ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা: মার্টিন গাপটিল।


শর্টলিংকঃ