দায়িত্ব গ্রহণ করেই ভাতা তুললেন পৌরসভার জনপ্রতিনিধিরা


পুঠিয়া প্রতিনিধি:

সুশাসন বিষয়ক বিশ্লেষক সুব্রত কুমার পাল বলেন, যে পৌরসভায় ৯মাস ধরে বেতন পান না কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, সেখানে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হয়ে মাত্র চারদিনের মাথায় নিজেরদের ভাতা তুলে নেয়া চরম অনৈতিক। এ ধরনের কাজ সুশাসনের পথে বড় বাধাও।

রাজশাহীর পুঠিয়া পৌরসভায় দায়িত্ব নেয়ার মাত্র চার দিনের মাথায় নবনির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা চলতি মাসের অগ্রীম সম্মানি ভাতা তুলে নিয়েছেন। অথচ অস্থায়ী কর্মচারীরা দীর্ঘ ৯মাস ধরে কোনো বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না।

পৌরসভা দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বরাদ্দ না থাকায় সাবেক জনপ্রতিনিধিদের সম্মানি ভাতা বকেয়া পড়েছে ১২ লাখ ১২ হাজার টাকা। স্থায়ী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বকেয়া ৪৮ লাখ ৮০ হাজার ৯৭৪ টাকা ও চুক্তিভিক্তিক ২৮ জন কর্মচারীদের ৯ মাসের বকেয়া রয়েছে ১১ লাখ ৪৯ হাজার ৭৪০ টাকা।

এদিকে গত ৩ ফেব্রুয়ারী নবনির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর মাত্র চার দিনের মাথায় গত ৭ ফেব্রুয়ারী তিনটি ব্যাংক হিসাব থেকে মোট এক লাখ ৩৮ হাজার টাকা তুলে পৌরসভার জনপ্রতিনিধি ও স্থায়ী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চলতি মাসের অগ্রীম বেতন-ভাতা প্রদান করা হয়।

পৌরসভার সদ্য সাবেক মেয়র রবিউল ইসলাম রবি বলেন, অগ্রীম টাকা তুলে নেয়ার কথা আমি শুনেছি। তবে দীর্ঘদিনের বকেয়া ফেলে রেখে কিভাবে অগ্রীম বেতন-ভাতা দেয়া হলো তা আমার বোধগম্য নয়। বকেয়া বেতন-ভাতাই আগে দেয়া উচিত ছিল।

চুক্তিভিক্তিক কর্মচারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বর্তমানে আমরা ২৮ জন চুক্তি ভিক্তিক কর্মচারী হিসাবে কাজ করছি। দীর্ঘ ৯ মাস যাবত পৌরসভা থেকে আমাদের কোনো বেতন-ভাতা দেয়া হয় না। ফলে তারা পরিবার নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। অথচ জনপ্রতিনিধিরা তাদের অগ্রিম ভাতা তুলে নিয়েছেন।

তবে ভাতা পৌরসভার হিসাব রক্ষক বিপ্লব কোনো মন্তব্য করতে রাজি হন নি। তবে সহকারী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম অগ্রীম বেতন-ভাতা উত্তোলনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অগ্রীম বেতন-ভাতা দেয়া না দিতে কোনো বাধা নেই। বকেয়া টাকাও পর্যায়ক্রমে পরিশোধ করা হবে।

এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান পৌরসভায় ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর যোবায়ের ইসলাম।

মোবাইল ফোনে ভাতা উত্তোলনের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে নবনির্বাচিত পৌর মেয়র আল মামুন খান জানান, তিনি কোনো কথা বলতে পারবেন না।


শর্টলিংকঃ