পথশিশুদের টাকা বা খাবার দিলেই কারাদণ্ড


সারাদুনিয়া ডেস্ক:

পথশিশুদের প্রতি মায়া দেখিয়ে অনেকেই খাবার বা টাকা দিয়ে থাকেন হরহামেশাই। নিঃসন্দেহে এটি একটি ভালো কাজ হিসেবেই স্বীকৃত আমাদের সমাজে।

এটি দারুণ মমত্ববোধের পরিচয় দিলেও বিশ্বে এমন একটি জায়গা আছে যেখানে আপনাকে এই কাজের জন্য জেল জরিমানার মুখোমুখি হতে হবে।

ছবি: প্রতীকী

সম্প্রতি উগান্ডাতে এমন একটি আইন পাশ করা হয়েছে। যাতে বলা হয়েছে উগান্ডার রাজধানী কাম্পালায় পথশিশুদের খাবার অথবা টাকা দান করলে তা আইনত দণ্ডনীয় হবে।

কাম্পালা শহরের লর্ড মেয়র এরিয়াস লুকওয়াগোর ভাষ্যমতে, ‘ব্যবসায়িক কাজে এবং যৌন ব্যবসায় পথশিশুদের ব্যবহার করছে একটি চক্র। মূলত তাদের রক্ষা করার উদ্দেশ্যেই এই আইনটি পাশ করা হয়েছে।

উগান্ডার সরকারি হিসাব অনুযায়ী রাজধানী শহরে রাস্তায় ৭ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে বয়স এমন শিশুর সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার। এইসব পথশিশুরা পথের পাশেই দিনযাপন করে বলে জানানো হয়েছে ওই হিসাবে।

নতুন পাশ করা আইনটির ব্যাপারে জানানো হয়েছে, এই আইনটি অমান্য করলে সর্বোচ্চ ৬ মাসের কারাদণ্ড অথবা ১১ ডলার অবধি জরিমানা হতে পারে।

উগান্ডার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে অনেক দরিদ্র শিশুকে ধরে শহরে নিয়ে আসে একটি চক্র। তাদের জোর করে নানা রকম অবৈধ কাজ করতে বাধ্য করা হয়। বিশেষ করে যৌন ব্যবসা এবং ভিক্ষাবৃত্তির মতো কাজে লাগানো হয় এইসব শিশুদের।

এরকম ব্যবসা বন্ধ করতে নতুন এই আইনটি বেশ কাজের হবে বলে মনে করছেন উগান্ডার আইন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে পতিতাবৃত্তির জন্য শহরে বাসা নেওয়া, ভিক্ষা করা এবং শিশু শ্রমের মতো অপরাধগুলো কমে আসবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তবে যারা এই কাজের সাথে জড়িত তারা এ কাজ থেকে সরে আসবেন না বলে জানিয়েছেন। কাম্পালা শহরের ৬০ বছর বয়সী ভিক্ষুক অ্যানি কুতুরেগিয়ে তাদেরই একজন। তিনি বেশি ভিক্ষা পাবার আশায় শিশুদের দিয়ে মানুষের মন গলানোর চেষ্টা করেন।

তিনি জানান, ‘যতদিন গ্রাম থেকে শিশুরা আসবে, আমরা রাস্তায় ভিক্ষা করব। এমনকি আমরা কারাবন্দি হতেও প্রস্তুত।’

কাম্পালার মেয়র লুকওয়াগো এ ব্যাপারে বলেছেন, ‘যেসব মা-বাবার সন্তানদের পথে ভিক্ষারত অবস্থায় পাওয়া যাবে, সেইসব মা বাবাকেও শাস্তির আওতায় আনা হবে। ভিক্ষাবৃত্তি একটি ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। আমরা এটি বন্ধ করতে চাই।’

বর্তমানে শুধুমাত্র রাজধানী কাম্পালাতেই প্রযোজ্য হবে এই আইনটি। সূত্র: বিবিসি


শর্টলিংকঃ