বাগমারায় বিদেশ ফেরত ১৯৫ জন, ৯ শয্যার আইসোলেশন!


বাগমারা প্রতিনিধি:

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার লোকজনের মাঝে বিরাজ করছে করোনা আতঙ্ক। এরই মধ্যে সরকারী নিদের্শনা মোতাবেক বন্ধ করা হয়েছে সকল প্রকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার। লোক সমাগম সীমিত রাখতে সমাবেশ ঘটে এমন কিছুও বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এছাড়াও সম্প্রতি সময়ে যে সকল ব্যক্তিরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বাগমারায় এসেছে তাদের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট এলাকার গঠিত কমিটি দ্বারা নজরদারী করা হচ্ছে। যাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ওই সকল ব্যক্তি অন্যদের মতো চলাফেরা না করে। এতে করে তাদের দ্বারা অন্যরা এই ভাইরাসের শিকার হতে পারে। তাই সকলকে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।

 ৯ শয্যার আইসোলেশন কর্নার
৯ শয্যার আইসোলেশন কর্নার

উপজেলায় স্থানীয় ভাবে কোন ব্যক্তির শরীরে করোনা ভাইরাসের লক্ষণ পাওয়া না গেলেও আতঙ্কে রয়েছে সবাই। নতুন ভাবে যারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে নিজ নিজ এলাকায় এসেছেন তাদের ব্যাপারে সন্দেহ রয়েছে প্রশাসনের।

এদিকে গত ১৫ দিনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থেকে বাগমারার ১৬টি ইউনিয়ন এবং ২টি পৌরসভায় এসেছেন ১৯৫ জন। প্রাপ্ত তথ্যে জানাগেছে, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভায় যারা এসেছে তাদের মধ্যে গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নে ৪, নরদাশে ৬ , দ্বীপপুরে ৪, বড় বিহানালীতে ১০, আউচপাড়ায় ১৬, শ্রীপুরে ৫, বাসুপাড়ায় ৮, কাচারী কোয়ালীপাড়ায় ১, শুভডাঙ্গায় ১৯, মাড়িয়ায় ১৩, গনিপুরে ২৩, ঝিকরায় ১২, গোয়ালকান্দিতে ১৩, হামিরকুৎসায় ৯, যোগীপাড়ায় ১৩, সোনাডাঙ্গায় ৩, ভবানীগঞ্জ পৌর সভায় ৭ এবং তাহেরপুর পৌরসভায় ২৭ জন এসেছে বিদেশ থেকে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদেরকে প্রাথমিক ভাবে নজরদারীতে রাখার জন্য প্রতিটি ইউনিয়ন এবং পৌর সভার করোনা ভাইরাস পর্যবেক্ষণ কমিটিকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। কোন ব্যক্তির শরীরে করোনা ভাইরাসের লক্ষণ দেখা গেলে দ্রুত ইউএনও. স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অথবা থানায় যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে কমিটি গুলোকে।

আরও পড়ুন: ইরানে দশ মিনিটে মারা যাচ্ছে একজন, ঘণ্টায় আক্রান্ত ৫০

বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের বিষয়ে বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ আতাউর রহমান বলেন, আমরা এরই মধ্যে বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের ইউনিয়ন ভিত্তিক তালিকা প্রস্তুত করেছি। সে সকল ব্যক্তিদের সনাক্ত করতে কাজ শুরু করা হয়েছে থানার পক্ষ থেকে। কোন ব্যক্তির শরীরে করোনা ভাইরাসের লক্ষণ পাওয়া গেলে তাৎক্ষনিক ভাবে তাদের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অনদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাঃগোলাম রাব্বানী জানান, জ্বর, সর্দ্দি, কাশি নিয়ে যারা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র আসছে আমরা সতর্কতার সাথে তাদের প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসা প্রদান করছি। এছাড়াও ওই সকল রোগীদের মোবাইলের মাধ্যমে বাসা থেকে চিকিৎসা সেবা নেয়ার জন্য পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সহ রোগীদের করোনা ভাইরাস সনাক্তকরণের কোন উপকরণ না থাকায় সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহের জন্য সংশ্রিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। এদিকে বৃহস্পতিবার থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৯ শয্যা বিশিষ্ট আইসোলেশন কর্ণার খোলা হলেও করোনা রোগীদের চিকিৎসার কোন ব্যবস্থা নেই।

এ প্রসঙ্গে বাগমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরিফ আহম্মেদ জানান, করোনা ভাইরাসের বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে প্রচারপত্র বিতরণ করা হচ্ছে। সে কারণে আতংকিত না হয়ে যারা ইতোমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বাগমারায় এসেছে তাদেরকে ১৪ দিনের জন্য নিজ বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যথায় কেউ যদি তা অমান্য করে বাহিরে চলা ফিরা করে এমন সংবাদ পাওয়া মাত্র তাদের বিরুদ্ধে সরকারের নির্দেশ মতো আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এছাড়াও উপজেলা, ইউনিয়ন এবং পৌরসভায় করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত কমিটিকে সার্বক্ষণিক ভাবে তদারকী কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

 


শর্টলিংকঃ