ব্যবসায়ী পরিচয়ে তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নারীর সাথে প্রতারণা


নিজস্ব প্রতিবেদক :

ব্যবসায়ী পরিচয়ে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা এক নারীর কাছে তিন লাখ টাকা হাতিয়ে এখন চরম প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে রাজশাহীর শেখ ফরিদ নামের একব্যক্তি । তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ওই টাকা আর ফেরত দেবেন না। তার বিরুদ্ধে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় জিডির পর লিগ্যাল নোটিস পাঠিয়েছেন ওই নারী।

ব্যাবসায়ী শেখ ফরিদ
শেখ ফরিদ

প্রতারণার শিকার নারীর নাম ফাহমিদা মাহবুব কেয়া। তিনি রাজশাহী নগরীর রানীবাজার বাটারগলি এলাকার বাসিন্দা। তার বাবার নাম এমএম ওয়ালিউল মাহবুব। আর প্রতারক শেখ ফরিদের বাড়ি নগরীর রাজপাড়া থানাধীন ভেড়িপাড়া এলাকায়। পবা উপজেলায় তার একটি ফিলিং স্টেশন রয়েছে। প্রায় তেলশূণ্য এ ফিলিং স্টেশনের মালিক সেজে ,ব্যবসায়ী পরিচয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে চলেছেন বলে অভিযোগ। এ নিয়ে রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানায় তার বিরুদ্ধে একাধিক ডায়েরি করা হয়েছে।

নগরীর বোয়ালিয়া থানার ওসি নিবারণ চন্দ্র জানান, বিষয়টি সুরাহা করার জন্য তাকে একাধিকবার থানায় তলব করা হলেও শুধু কালক্ষেপন করে চলেছে। অবশেষে থানা থেকে ওই নারীকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ  দেয়া হয়েছে। বাধ্য হয়ে প্রতারণার শিকার ফাহমিদা মাহবুব কেয়া টাকা ফেরত পেতে  শেখ ফরিদের (৪০) বিরুদ্ধে প্রথমে সাধারণ ডায়েরী (জিডি) ও পরে লিগ্যাল নোটিস পাঠিয়েছেন।

গত ১১ ডিসেম্বর রাজশাহীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় জিডি এবং ৫ জানুয়ারিতে নোটারী পাবলিক ও রাজশাহী জর্জ কোর্টের আইনজীবি এ্যাডভোকেট শাহীন কবিরের মাধ্যমে দুইটি পৃথক লিগ্যাল নোটিস পাঠানো হয়। এরপরও সাড়া না দিলে তার দেওয়া তিনলাখ টাকা চেকের বিপরীতে আদালতে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন ফাহমিদা মাহবুব কেয়া।

কেয়া জানান, গত বছরের ৬ জুলাই আনুমানিক দুপুর দেড়টার দিকে পূর্ব পরিচিত শেখ ফরিদকে ব্যবসায়িক কাজের জন্য প্রথমে ২ লাখ টাকা প্রদান করেন কেয়া। এর দুই মাস পরে ১ আগস্ট আরো ১ লাখ টাকা ফরিদকে প্রদান করেন তিনি। এ সময় শেখ ফরিদ তাকে দুইটি চেক প্রদান করেন। চেক দুইটির নম্বর যথাক্রমে ০৯৮৭৪২৬ ও ০৯৮৪৯১৭।

এদিকে দীর্ঘদিন অতিক্রান্ত হওয়ার পরে ব্যবসায়ী শেখ ফরিদের কাছে টাকা ফেরত চান কেয়া। কিন্তু টাকা ফেরত না দিয়ে কালক্ষেপন করতে থাকেন সে। একসময় যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে শেখ ফরিদের দেয়া চেক দুইটি নিয়ে উত্তরা ব্যাংকে নগদায়ন করতে যান কেয়া। কিন্তু ফরিদের এ্যাকাউন্টে কোন টাকা নেই বলে সর্টিফিকেট দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এরপরে ফরিদের সঙ্গে দেখা করে টাকা ফেরত চান তিনি। কিন্তু ফরিদ কোন টাকা নেয়নি এবং ফেরত দিতে পারবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। এছাড়াও তার কাছে পুনরায় টাকা চাইতে নিষেধ করে সে। টাকা চাইলে পাওনাদার কেয়ার বড় ধরণের ক্ষতি করার হুমকি দেয় প্রতারক ফরিদ।

এতে বিপাকে পড়েন কেয়া। তিনি বলেন, চেক ডিজঅনারের মামলার প্রক্রিয়া হিসেবে তারন নামে জিডি করা হলে চতুর শেখ ফরিদ তা বুঝতে পেরে তার দুটি চেক হারিয়ে গেছে বলে উল্টো আদালতে মামলা দায়ের করেন কেয়ার বিরুদ্ধে। অথচ সেখানেই গড়মিল পাকায় শেখ ফরিদ। তার আগেও যে কেয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করে রেখেছিলেন তা না জেনেই নিজে বাচতে মামলা করে কেয়াকে ফাদে ফেলার চেষ্টা করেন। তবে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি এ মামলার শুনানীর তারিখ নির্ধারিত রয়েছে।

এ ব্যাপারে মোবাইল ফোনে যোগযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর শেখ ফরিদ বলেন, এটি আদালতের মাধ্যমে সুরাহা হবে বলেই ফোন কেটে দেন। পরে আর ফোন রিসিভ করেন নি।

আরও পড়ুন ঘড়িগুলো উপহার পেয়েছি: কাদের


শর্টলিংকঃ