যেভাবে কাজ করবে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা


রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার প্রথম চালান তুরস্কের বিমান ঘাঁটিতে পৌঁছানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সঙ্গে সংকট তৈরি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, চারটি উপায়ে কাজ করবে এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাটি।


প্রথমত, এটির দীর্ঘ-পাল্লার নজরদারি রাডার বস্তুকে খুঁজতে শনাক্ত করতে পারে। এরপর তা কমান্ড ভিহিকলের কাছে পাঠিয়ে দেয়। যেটা সম্ভাব্য হামলার লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ করতে পারে।

দ্বিতীয়ত, এস-৪০০ ব্যবস্থাটি লক্ষ্যবস্তুকে শনাক্ত করে এবং কমান্ড ভিহিকল ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের নির্দেশ দেয়।তৃতীয়ত, উৎক্ষেপণ উপাত্ত ক্যারিয়ার রকেটে পাঠানো হলে এটি ভূমি থেকে আকাশে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে।চতুর্থত, লক্ষ্যবস্তুর দিকে ক্ষেপণাস্ত্র যেতে সহায়তা করে সংশ্লিষ্ট রাডার।

নিউ ইয়র্ক টাইমসের খবর বলছে, এস-৪০০ ব্যবস্থায় উন্নত রাডার যোগ করা রয়েছে। অন্যান্য যুদ্ধবিমানসহ স্টেলথ টার্গেট খুঁজে বের করতেই এই ব্যবস্থা। এছাড়া কিছু কিছু ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করতেও এস-৪০০ ব্যবহার করা যাবে।

এদিকে তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারার মুরিটিড বিমান ঘাঁটিতে পৌঁছে গেছে রুশ নির্মিত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ এর প্রথম চালান। তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাতে সিএনএন এমন তথ্য জানিয়েছে।

রুশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনতে তুরস্কের সিদ্ধান্তে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠতার দিকে গেছে। বিপরীতে এটা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্কের জন্য বিপত্তি হয়েও দাঁড়িয়েছে।সিরিয়া সংকটের মতোই দুই দেশের মধ্যকার পরিস্থিতি আরও জটিলতার দিকে যাচ্ছে।

মার্কিন কর্মকর্তারা বহু আগ থেকেই হুশিয়ারি করে আসছিলেন, এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনলে উন্নত এফ-৩৫ স্টেলথ যুদ্ধবিমান আটকে দেয়া হবে। এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মাধ্যমে এফ-৩৫ থেকে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হতে পারে বলে তাদের আশঙ্কা।

এখন আনুষ্ঠানিকভাবে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান প্রকল্প থেকে তুরস্ককে সম্পূর্ণভাবে বাদ দিতে পারে পেন্টাগন। ভবিষ্যতের সামরিক বিমান হিসাবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে এফ-৩৫ জেটকে।

ইতিহাসের সবচেয়ে দামি এই বিমানের প্রাণঘাতী হামলা ছাড়াও বৈচিত্রময় দক্ষতা রয়েছে। স্টেলথ সক্ষমতা, শব্দের চেয়েও বেশি গতিসম্পন্ন, প্রচণ্ড ক্ষিপ্রতা ও সেনসর ফিউশন প্রযুক্তিসম্পন্ন এই বিমান।

তবে রুশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্রয়ের দায়ে তুরস্কের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কা রয়েছে। ইতিমধ্যে এস-৪০০ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে ন্যাটো।চলতি সপ্তাহে ওয়াশিংটন জানিয়েছিল, তুরস্ক এই ব্যবস্থা সংগ্রহ করলে তাদের বাস্তবিক ও নেতিবাচক পরিণতি ভোগ করতে হবে।

এক বিবৃতিতে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১২ জুলাই থেকে দীর্ঘ পাল্লার আঞ্চলিক বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার যন্ত্রাংশ মুরটিড বিমানবন্দরে আসা শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রথম চালানটি এসে গেছে।

রুশ সামরিক-কূটনীতিকদের বরাত দিয়ে তাস জানিয়েছে, এস-৪০০ এর যন্ত্রাংশ বহনকারী আরেকটি বিমান শিগগিরই উড়াল দেবে। এরপর গ্রীষ্ণের শেষ দিকে সমুদ্রপথে ১২০টি গাইডেড মিসাইলের তৃতীয় একটি বহর তুরস্কে পাঠানো হবে।ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন, স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুসারে সবকিছু হচ্ছে। সব ধরনের বাধ্যবাধকতাই মেনে চলা হচ্ছে।


শর্টলিংকঃ