রাজশাহীতে চালু হলো উত্তরাঞ্চলের প্রথম ফরেনসিক ল্যাব


নিজস্ব প্রতিবেদক :
উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার মামলার আলামত পরীক্ষার জন্য দেশের তৃতীয় ফরেনসিক ল্যাবের কার্যক্রম শুরু হলো রাজশাহীতে।সোমবার সকালে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি’র তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই ল্যাবের উদ্বোধন করেন আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পটোয়ারী। এই ল্যাব চালুর ফলে কেবল ডিএনএ এবং সাইবার ক্রাইমের আলামত ছাড়া সকল ধরনের আলামত এখানেই পরীক্ষা করা হবে রাজশাহীতেই।

ফরেনসিক ল্যাব

এসময় আইজিপি বলেন, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের মামলাগুলোর আলামত পরীক্ষার জন্য আর ঢাকায় যেতে হবে না। এই ল্যাব চালুর ফলে কেবল ডিএনএ এবং সাইবার ক্রাইমের আলামত ছাড়া সকল ধরনের আলামত এখানেই পরীক্ষা করা হবে রাজশাহীতেই। বিশেষ করে রাসায়নিক, ব্যালিস্টিকস, হস্তলিপি, ফিঙ্গারপ্রিন্ট, অনু বিশ্লেষণ, ফুটপ্রিন্ট ও জালনোট শনাক্তসহ প্রায় সব ধরনেরই পরীক্ষা ডিজিটালাইজড পদ্ধতিতে নিশ্চিত করা হবে। এই ফরেনসিক ল্যাব পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধির বড় উদাহরণ বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে রাজশাহী সিআইডির  পুলিশ সুপার (এএসপি) শাহরিয়ার রহমান  ইউনিভার্সাল২৪নিউজ-কে বলেন, রাসায়নিক পরীক্ষাগারের মধ্যে রয়েছে সব ধরনের মাদকদ্রব্য, মৃত মানুষ ও পশু-পাখির ভিসেরা, কবর থেকে উত্তোলিত হাড়, চুল, মাটি ও সফট টিস্যু, বিষাক্ত বা চেতনানাশক পদার্থের উপস্থিতি, রক্ত মিশ্রিত আলামতে রক্তের উপস্থিতি, অ্যাসিড মিশ্রিত আলামতে রক্তের উপস্থিতি, বিষ্ফোরক দ্রব্য, দাহ্য পদার্থ, জাল টাকা তৈরিতে ব্যবহৃত কেমিক্যাল, জিএসআরসহ বিভিন্ন আলামতের রাসায়নিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে মতামত দেয়া।

ফরেনসিক ল্যাব

ফিঙ্গারপ্রিন্ট শাখার মধ্যে রয়েছে ক্রাইমসিন থেকে সংগৃহিত দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান আঙ্গুলের ছাপের সঙ্গে সন্দেহভাজনদের আঙ্গুলের ছাপের তুলনামূলক পরীক্ষা করে বিশেষজ্ঞ মতামত দেয়া এবং সংগৃহিত ফিঙ্গারপ্রিন্ট ল্যাটেস্ট প্রিন্ট এএফআইএস ডাটাবেজে সংরক্ষিত ফিঙ্গারপ্রিন্টের সঙ্গে তল্লাশি করে মিল বা অমিল সম্পর্কে মতামত দেয়া।

বিচারাধীন দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলায় বিবাদমান দলিলের লেখা বা স্বাক্ষর জাল, নম্বর ঘষামাজা করে বা রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহার করে অবমোচন করা হলে তা পরীক্ষা করে মতামত  দেবে ল্যাবের হস্তলিপি শাখা।

জালনোট ও মেকি মূদ্রা শাখার কাজ হচ্ছে দেশি-বিদেশি সকল কারেন্সি নোট ও কয়েন বা ধাতব মুদ্রার বিষয়ে ভিডিও স্পেট্রাল কম্পারেটরের মাধ্যমে নোটের দৃশ্য-অদৃশ্যমান বৈশিষ্টগুলো বিশ্লেষণের মাধ্যমে মতামত দেয়া। অপরাধীদের ছবি গ্রহণ, সংরক্ষণ, ফরেনসিক বিভিন্ন শাখার আলামতের বর্ধিত ছবি সরবরাহ করা এবং বিতর্কিত ছবির সঙ্গে নমুনার মিল আছে কি না তা বিশ্লেষণ করে মতামত দেবে ফটোগ্রাফি শাখা।

ফরেনসিক ল্যাব

ব্যালিস্টিক শাখার কাজ হচ্ছে আগ্নেয়াস্ত্র সংশ্লিষ্ট কোনো অপরাধের ঘটনায় উদ্ধারকৃত বা অপরাধে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজ ও ফায়র্ড বুলেট বা এসবের কোনো অংশ বিশেষ পরীক্ষার পর বিশেষজ্ঞ মতামত দেয়া। অনুবীক্ষণ শাখার কাজ হচ্ছে গাড়ির ইঞ্জিন, চেসিস নম্বর, আগ্নেয়াস্ত্রের নম্বর, ট্রেড মার্ক তৈরিকারি দেশের নাম এবং কোনো ধাতব বস্তুর উপর থেকে মুছে ফেলা/বিকৃত করা, ক্রমিক নম্বর সংখ্যা বা যে কোনো চিহ্ন পরীক্ষা করে মতামত দেয়া। পদচিহ্ন শাখার কাজ হচ্ছে পায়ের বা জুতার ছাপ পরীক্ষা করে অপরাধী বা ভুক্তভোগী শনাক্তকরণে বিশেষজ্ঞ মতামত দেয়া।

এছাড়া ক্রামসিন ইউনিট অপরাধের স্থল পরিদর্শন করে বস্তুগত সাক্ষ্য সংগ্রহ, ডকুমেন্টেশন, সংরক্ষণ করে বস্তুগত সাক্ষ্য সংশ্লিষ্ট থানা বা তদন্তকারি কর্মকর্তাকে দিবে।

অনুষ্ঠানে সিআইডি’র প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি একেএম হাফিজ আক্তার ও রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হুমায়ুন কবির উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়তে পারেন আশুলিয়ায় ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে যুবলীগ নেতা গ্রেফতার


শর্টলিংকঃ