সোশ্যাল মিডিয়ায় কঠিন শর্ত ভারত সরকারের


ইউএনভি ডেস্ক: 

ভারতে সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য নতু ডিজিটাল আইন করা হয়েছে। এতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে বনিবনা হচ্ছে না টুইটারসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার। কারণ, ওই শর্তগুলো মানতে গেলে সোশ্যাল মিডিয়ায় বাক স্বাধীনতা খর্ব করা হবে।


ভারত সরকার ইতিমধ্যে তিনটি শর্ত দিয়েছে সংস্থাগুলোকে। এর মধ্যে রয়েছে মেসেজিং অ্যাপের ক্ষেত্রে কোনও ভাইরাল মেসেজ প্রথম কে লিখে ছড়াতে শুরু করেছেন, তার হদিস খুঁজে বের করা, অর্থাৎ মেসেজ ট্রেসিংয়ের সুবিধা আনতে হবে। এ কঠিন শর্ত মেনেই ভারতে সোশ্যাল মিডিয়া পরিচালনা করতে হবে। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।

খবরে বলা হয়, সোশ্যাল মিডিয়া মাধ্যমগুলির জন্য নতুন যে ডিজিটাল নিয়ম করা হয়েছে। নতুন আইনের কারণে সোশ্যাল মিডিয়াতে মানুষের বাকস্বাধীনতা খর্ব হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তবে আইন নিয়ে ভারত সরকারের সঙ্গে সংঘাতের পথে হেঁটেছে টুইটার সহ বেশ কয়েক সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্ট হিসেবে পরিচিত সংস্থা। শেষ পর্যন্ত বাকি সংস্থা সেসব মেনে নিলেও, টুইটার তাদের অবস্থানে অনড়। যা নিয়ে কেন্দ্রও টুইটারকে নোটিশ পাঠিয়ে ‘শেষ সুযোগ’ দেওয়ার কথা বলেছে।

কী ভাবছে ভারত সরকার?

এ ব্যাপারে ভারতের কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ভারত একটি গণতন্ত্র। নিঃসন্দেহে সাধারণ ভারতীয়কে শক্তি জুগিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি। তবে আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট। ভারতে ব্যবসা করতে গেলে সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাগুলিকে দেশের সংবিধান মেনে চলতে হবে। ডিজিটাল সার্বভৌমত্বের সঙ্গে আপস করবে না ভারত।

তিনি বলেন, এই নতুন নিয়মগুলি সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার সম্পর্কিত নয়। সরকার বা প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করতে পারেন। তবে গালিগালাজ বা অশালীন ভাষা প্রয়োগ ঠিক নয়। যদি একজন নারী এই সংক্রান্ত অভিযোগ করেন, তাহলে আমাদের কী করা উচিত? যদি কোনও মা অভিযোগ করেন যে তাঁর মেয়ের এক্স বয়ফ্রেন্ড সোশ্যাল মিডিয়াতে তাঁর মেয়েকে উত্ত্যক্ত করছে। তাহলে আমরা কী করব?’

যে কারণে আতংক

ভারতের কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ যেসব শর্তের কথা বলা হয়েছে তাতে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাক্টিভিস্টদের মাঝে আতংক দেখা দিয়েছে।

দ্য হিন্দুকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেছেন, ‘ নতুন এই আইনে মূলত তিনটি বিষয় করতে বলছে, সংস্থাগুলিকে একজন চিফ কমপ্লায়েন্স অফিসার, নোডাল কনট্যাক্ট পার্সন এবং সার্বক্ষণিক গ্রিভ্যান্স অফিসার নিয়োগ করতে হবে। কর্তৃপক্ষের চিহ্নিত করে দেওয়া যে কোনও কনটেন্ট ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রিমুভ করতে হবে সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাগুলিকে। মেসেজিং অ্যাপের ক্ষেত্রে কোনও ভাইরাল মেসেজ প্রথম কে লিখে ছড়াতে শুরু করেছেন, তার হদিস খুঁজে বের করা, অর্থাৎ মেসেজ ট্রেসিংয়ের সুবিধা আনতে হবে।’

হোয়াটসঅ্যাপের সাধারণ ব্যবহারকারীদের ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই উল্লেখ করে রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, আমরা এমন তথ্য খুঁজছি যা থেকে জানা যাবে যে দাঙ্গা, গণপ্রহারের মতো ঘটনা যেসব বার্তার কারণে ঘটছে, সেই বার্তাগুলো কে প্রথম লিখেছে বা ছড়িয়েছে। আমরা তো এটা অস্বীকার করতে পারি না যে দিল্লির দাঙ্গার নেপথ্যে সীমান্ত পারের উস্কানিমূলক অনেক বার্তা দায়ী ছিল।’

এ আইনের কারণে সরকারের বিরোধীমত যে রোষানলে পড়তে পারে তা বলার অবকাশ রাখে না।


শর্টলিংকঃ