৭০ বছর পর পুঠিয়া রাজাদের ব্যবহার্য প্রত্নত্ত্বাতিকের খোঁজে প্রশাসন


আবু হাসাদ কামাল,পুঠিয়া:
রাজশাহীর পুঠিয়ায় বৎসাচার্য্যরে পূত্র পিতাম্বর পুঠিয়া রাজবংশের গোড়াপত্তন করেন ১৫৫০ সনে। পিতাম্বরের অনুজ নীলাম্বর পুঠিয়া রাজবংশের প্রথম রাজা অধিষ্ঠিত হন। চতুর্থ ধনপতি চাঁদ সওদাগর থেকে শুরু করে পরেশ নারায়ণ ও নরেশ নারায়ন বাহাদুর পর্যন্ত প্রায় ৪শ’ বছর শাসন করে পুঠিয়া রাজবংশ।

রাজপ্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পর রাজ পরগনার উত্তরাধিকাররা স্বপরিবারে ভারত বর্ষে গমন করেন। রাজা নেই রাজ্যও নেই সমস্ত রাজপরগনা জুড়ে এখন পড়ে আছে অনেক স্মৃতি বিজড়িত পূরাকীর্তি সমুহ। আবার দিনে দিনে রাজ পরগনা থেকে হারিয়ে গেছে অনেক মহামূল্যেবান নিদর্শন সমূহ। প্রায় ৭০ বছর পর সেই স্মৃতি রাজ পরিবারের ব্যবহার্য প্রত্নত্ত্বাতিক সংগ্রহ ও সংরক্ষনের উদ্যোগ নিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।

গত ১ আগষ্ট রাজবাড়ীর স্মৃতিবিজড়িত প্রত্নত্ত্বাতিক সংগ্রহের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওলিউজ্জামানের স্বাক্ষরিত এক পরিপত্র জারি করা হয়েছে। পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে রাজ পরিবার অথবা রাজ পরগনার ব্যবহার্য কোনো নির্দশন কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যাক্তিগত ভাবে কোথাও সংরক্ষন থাকলে তা প্রশাসনের নিকট হস্তান্তর করতে বলা হয়েছে। এছাড়া যে প্রতিষ্ঠান বা ব্যাক্তি প্রত্নত্ত্বাতিক সামগ্রী হস্তান্তর করবেন তার নাম ঠিকানাও স্বর্ণক্ষরে সংরক্ষন থাকবে বলেও পত্রে উল্লেক করা হয়েছে।


অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে রাজপরিবারের ব্যবহৃত ও দানকৃত মহামূল্যেবান নিদর্শন রয়েছে। এর মধ্যে লস্করপুর ডিগ্রী কলেজ, পুঠিয়া পিএন উচ্চ বিদ্যালয়, তহসিল অফিস, উপজেলা ভূমি অফিসে ব্যবহার ও সংরক্ষনে রয়েছে। এছাড়া রাজপরগনা এলাকায় কয়েকজন বাসিন্দা ও একটি প্রভাবশালী পরিবারে কাছে রাজ পরিবারের অনেক প্রত্নত্ত্বাতিক সামগ্রী রয়েছে বলে জনশ্রুত রয়েছে।


নাট্যব্যক্তিত্ব কাজী সাইদ হোসেন দুলাল বলেন, আরো আগে রাজ পরিবারের ব্যবহৃত নিদর্শন সমূহ সংগ্রহ করা প্রয়োজন ছিল। ইতিমধ্যে অনেক কিছু নির্দশন হারিয়ে অথবা ধ্বংশ হয়ে গেছে। আবার স্থানীয়রা রাজাদের অনেক সামগ্রী ব্যাক্তিগত ভাবে সংরক্ষনে রেখেছেন। যেহুতু বর্তমানে প্রশাসন সংরক্ষনের একটা উদ্যোগ নিয়েছেন, তাই সকলের উচিৎ তাদের সংগ্রহিত সামগ্রী গুলো হস্তান্তর করে প্রশাসনকে সহযোগিতা করা।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওলিউজ্জামান বলেন, কিছুটা দেড়িতে হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রায় সাড়ে চারশত বছরের পুরনো রাজ পরগনার ঐতিয্য সংরক্ষনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে যে সকল প্রতিষ্ঠানে রাজপরগনার ব্যবহৃত নিদর্শন রয়েছে তা হস্তান্তর করতে চিঠি দেয়া হয়েছে। আর আলোচনার মাধ্যমে ব্যক্তিগত ভাবে থাকা সামগ্রী গুলো সংগ্রহ করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।


শর্টলিংকঃ