সিফাতের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধনে পুলিশের লাঠিচার্জ, আহত ১০


ইউএনভি ডেস্কঃ

পুলিশের গুলিতে নিহত মেজর সিনহার সঙ্গে থাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সাহেদুল ইসলাম সিফাতের মুক্তির দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে পুলিশ লাঠিচার্জ করে ব্যানার ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। লাঠি চার্জে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। শনিবার দুপুর ১২টায় সিফাতের নিজ এলাকা বরগুনার বামনা উপজেলা শহরে বিএনপি অফিসের নিকটে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।

তবে পুলিশ বলছে, বিএনপি অফিসের সামনে কিছু লোকজন জড়ো হয়ে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা রাস্তা খুলে দিতে গেলে পুলিশের উপর ওই স্থান থেকে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ কোনো লাঠিচার্জ করেনি। ঘণ্টাব্যাপী চলা মানববন্ধনে সিফাতের নানা সাবেক চেয়ারম্যান আইউব আলী, শিক্ষক, সহপাঠি, স্বজন ও এলাকাবাসী অংশগ্রহণ করেন।

সিফাতের সহপাঠি রুবেল বলেন, সিফাত অত্যন্ত ভাল ছেলে। আর যাই হোক সিফাতের বিরুদ্ধে মাদকের অভিযোগ কোনোভাবেই মানা যায় না। মিথ্যে মামলায় নির্দোষ সিফাত জেলে রয়েছে। তার মুক্তির জন্য মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেছি। এ সময় পুলিশ প্রথমে আমাদের মানববন্ধনের ব্যানার-ফেস্টুন ছিনিয়ে নেয়। এরপরও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করি। পরে বামনা থানার ওসি এসে আমাদের ওপর নির্বিচারে লাঠিচার্জ করে। এতে ১০ জন আহত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সিফাতের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করায় পুলিশ আমাদের দুষ্কৃতকারী বলে আখ্যা দিয়েছে। এছাড়াও নাতির মুক্তির দাবিতে মানববন্ধনে আসায় সাংবাদিকদের সামনে সিফাতের নানা আইউব আলী হাওলাদারকে গালমন্দ করার পাশাপাশি হুমকি দিয়েছে পুলিশ।

রুবেল আরও বলেন, মানববন্ধন চলাকালীন পুলিশের একটি দল প্রথমে শিক্ষার্থীদের হাতে থাকা ব্যানার-পোস্টার ছিনিয়ে নেয়। এর ১০ মিনিট পরে বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইলিয়াস আলী তালুকদার মানববন্ধনে থাকা শিক্ষার্থীদের লাঠিচার্জ শুরু করে অকথ্য ভাষায় সিফাতের স্বজনদের গালমন্দ করেন। পুলিশের লাঠিচার্জে অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।

সিফাতের নানা সাবেক চেয়ারম্যান আইউব আলী যুগান্তরকে বলেন, সিফাতের সহপাঠিরা শান্তিপূর্ণভাবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আমার নাতি সিফাতের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করতে থাকে। হঠাৎ পুলিশ আমাদের ব্যানার ছিনিয়ে নিয়ে লাঠিচার্জ শুরু করে।

বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইলিয়াস আলী তালুকদার যুগান্তরকে বলেন, শনিবার ছিল একটি বিশেষ দিন। বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছার জম্মদিন। আমরা সবাই সেই কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। স্থানীয় জনগণ আমাকে ফোনে জানায় বিএনপি অফিসের সামনে কিছু লোকজন জড়ো হয়ে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা রাস্তা খুলে দিতে গেলে পুলিশের উপর ওই স্থান থেকে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ কোনো লাঠিচার্জ করেনি।

উল্লেখ্য, ৩১ জুলাই রাতে মেজর (অব.) সিনহা ও সিফাত টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ সড়ক ধরে যাচ্ছিলেন। বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সিনহা মো. রাশেদ খান। সে সময় ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করা হয় সাহেদুল ইসলাম সিফাতকে।


শর্টলিংকঃ