খালেদার মুক্তি আন্দোলনে নড়চড় নেই বিএনপিতে


ইউএনভি ডেস্ক নিউজ:

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারাবাসের একবছর পূর্ণ হচ্ছে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি। দীর্ঘ এই সময়ে কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুক্তির দাবিতে তীব্র কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি বিএনপির নেতাকর্মীরা। গত তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে কোনো কর্মসূচিই দেয়নি দলটি। এমতাবস্থায় চেয়ারপারসনের মুক্তির দাবিতে ফের সোচ্চার হতে কেন্দ্রের প্রতি তৃণমূলের চাপ বাড়ছে।

 

খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি।

দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেয়ার পর থেকে বেশ কিছু অহিংস কর্মসূচি পালন করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। চেয়ারপারসনের মুক্তির দাবিতে তারা মানববন্ধন, কালো পতাকা প্রদর্শন, অবস্থান কর্মসূচি, অনশন, স্মারকলিপির মতো দুর্বল কর্মসূচি দিয়েছে দলটি।

তবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এই দাবিতে আর কোনো কর্মসূচি দেয়নি বিএনপি।নির্বাচনের পরও এখন পর্যন্ত কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়নি। নির্বাচন পরবর্তী বিএনপির বিভিন্ন আলোচনা সভা বা সংবাদ সম্মেলনেও খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে কোনো ধরনের কর্মসূচির ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।

সম্প্রতি বগুড়ায় এক মতবিনিময় সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের চেয়াপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বগুড়া থেকে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও নয়াপল্টনের প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি জানান। কিন্তু সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর মুক্তির দাবিতে রাজপথের কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করেননি তারা।

এমনকি গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ভোট ডাকাতি হয়েছে দাবি করলেও বিএনপি তার প্রতিবাদে কোনো আন্দোলনের ডাক দেয়নি। খালেদা জিয়ার মুক্তি বা একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির বিরুদ্ধে বিএনপি কোনো কর্মসূচি ঘোষণা না করায় ২০ দলীয় জোটের শরিকরাও এর তীব্র সমালোচনা করেছেন।

গত শনিবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদ। বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ঘরে বসে থেকে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারবেন না। রাজপথে নামুন, আমরা ছোট দল, শক্তি জোগাতে পারব না, তবে আন্দোলন-সংগ্রামে আপনাদের পাশে থাকব।

এছাড়া ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে ভোট মহাডাকাতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বীরপ্রতিক। এরপরও বিএনপি আন্দোলনের ডাক না দেয়ার সমালোচনা করেন তিনি। তবে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের ভাষ্য, যে মামলায় খালেদা জিয়া কারাবন্দি, সেই মামলায় তিনি জামিন পাওয়া সত্ত্বেও কেবলমাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাকে দীর্ঘসময় ধরে বন্দী করে রাখা হয়েছে।

বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল জানিয়েছেন, কেবল সরকারের অবৈধ হস্তক্ষেপে তিনি কারামুক্ত হতে পারছেন না। তাকে অন্যায়ভাবে আটকে রাখা হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ বিষয়ে বলেন, জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। এর জন্য আইনি লড়াই যেমন চলবে, তেমনি সাংগঠনিক কর্মসূচিও অব্যাহত থাকবে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি আবারো জোরালো করতে নতুন কর্মসূচি দেয়ার চিন্তা করছে বিএনপির হাইকমান্ড। সেক্ষেত্রে ৮ ফেব্রুয়ারির আগেই শান্তিপূর্ণ কিছু প্রতিবাদী কর্মসূচি দেয়া হতে পারে।

প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছর দণ্ডিত হয়ে কারাগারে বন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি তাকে গ্রেফতার করা হয়।

সূত্র: যুগান্তর


শর্টলিংকঃ