অন্যের সনদে চিকিৎসক হওয়া সেই মাসুদ গ্রেফতার


মানিক হোসেন, ভাঙ্গুড়া প্রতিনিধি :

অন্যের সনদে চিকিৎসক সেজে মাসুদ রানা মাসিক এক লাখ ১৫ হাজার টাকা বেতনে  ক্লিনিকে চাকরি করছিলেন। তিনি  বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ)-এর পাবনা জেলা শাখার আজীবন সদস্যও হন।  বিভিন্ন ক্লিনিকে দীর্ঘদিন চাকরি করেছেন তিনি।

গ্রেফতার হওয়া ভুয়া চিকিৎসক মাসুদ রানা

অন্যের সনদ ও বিএমডিসি’র নিবন্ধন নম্বর ব্যবহার করে নিজেকে চিকিৎসক পরিচয় দেয়া মাসুদ রানাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।সোমবার সকালে নীলফামারীর সৈয়দপুর থেকে  তাকে গ্রেফতার করা হয়। মাসুদ রানা সৈয়দপুরের হাতিখানা গ্রামের শেখ মোঃ আব্দুল হান্নানের ছেলে তিনি পাবনার ভাঙ্গুড়ার হেলথ কেয়ার ক্লিনিকে রোগীদের চিকিৎসা দিতেন।

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস জানান,মাসুদ রানা দীর্ঘ ৭ বছর ধরে ভাঙ্গুড়া হেলথ কেয়ার নামে একটি ক্লিনিকে লক্ষাধিক টাকা বেতনে কর্মরত থেকে চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন। তিনি ঢাকার ডা. মাসুদ করিমের নাম, বিএমডিসির নিবন্ধন নম্বর ও সনদ ব্যবহার করে আসছিলেন। নিজের নাম মাসুদ রানা হলেও তিনি ডা. মাসুদ করিম নাম ব্যবহার করে আসছিলেন।

তিনি আরও জানান, প্রকৃত চিকিৎসক মাসুদ করিম ১৯৯০-৯১ সেশনে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। তিনি ছিলেন ২৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। এমবিবিএস শেষ করে নিবন্ধন পান বিএমডিসির,যার নিবন্ধন নং ৩৩৩৬০। বর্তমানে ঢাকার খিলগাঁওয়ে নিজস্ব ডক্টরস চেম্বারে প্রাইভেট চিকিৎসা দেন। স্থায়ী ঠিকানা ফেনীর সোনাগাজী। বাবা’র নাম আব্দুস শাকুর। বন্ধু চিকিৎসকদের মাধ্যমে জানতে পারেন, মাসুদ রানা নামে একব্যক্তি তার সনদ ও বিএমডিসির নিবন্ধন ব্যবহার করছেন। পাবনায় এসে এর সত্যতাও পান। এরপর তিনি বিষয়কে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন শাখায় এবং পাবনা সিভিল সার্জনকে লিখিত অভিযোগ দেন।

ভাঙ্গুড়া উপজেলা পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হালিমা খাতুন জানান, চিকিৎসক দাবিদার মাসুদ রানা মূলকাগজপত্র দেখাতে পারেন নি। তবে প্রকৃত মাসুদ করিম সশরীরে আমার কাছে এসে অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি সিভিল সার্জন, ইউএনও এবং বিএমডিসি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কথিত চিকিৎসক মাসুদ রানা যে ভুয়া তা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু এতদিন আমরা সে যে ভুয়া তা বুঝতে পারি নি’।

অভিযুক্ত মাসুদ রানার বিষয়ে হেলথ কেয়ার লিমিটেড ক্লিনিকের পরিচালক আবদুল জব্বার জানান, তিনি মাসিক ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা বেতনে  ক্লিনিকে চাকরি করছিলেন। মাসুদ রানা পাবনা জেলা বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) আজীবন সদস্য। পাবনার বিভিন্ন ক্লিনিকে দীর্ঘদিন চাকরি করেছেন। আমাদের কাছে তার সনদের ফটোকপি জমা দিয়েছিলেন। তবে এখন শুনছি তিনি ভুয়া চিকিৎসক।

পাবনা বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদক ডা. আনন জানান, কথিত ডা. মাসুদ রানা ২০১২ সালের দিকে মাসুদ করিম পরিচয়ে বিএমডিসি  নিবন্ধন নাম্বার দিয়ে  বিএমএ’র আজীবন সদস্য হন।


শর্টলিংকঃ