ছাত্রলীগ পরিচয়ে রাবির দুই ছাত্রকে জিম্মি করে চাঁদা দাবি


রাবি প্রতিনিধি:

স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা পরিচয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দুই শিক্ষার্থীকে জিম্মি করে চাঁদা দাবির অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর বাজারের ব্যাতিক্রম লাইব্রেরির পাশের একটি দোতলা ভবনে এ ঘটনা ঘটে।

জিম্মি শিক্ষার্থীদের ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার করে পুলিশ

ভুক্তভোগীদের মধ্যে আবু ইউসুফ সাজিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং কামারুজ্জামান সুমন গণিত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী সাজিদ জানান, তিনি এবং সুমন নামে তার একজন বড় ভাই বিনোদপুর বাজারের একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় দু’টি রুম ভাড়া নিয়ে প্রাইভেট পড়াতেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কয়েকজন যুবক সেখানে গিয়ে নিজেদের ছাত্রলীগ নেতা বলে পরিচয় দিয়ে বলতে শুরু করেন, ওই ভবনে মাদকে ব্যবসা করা হয়। তাদের কথা সত্য নয় বললে সাজিদকে মারধর করে ওই যুবকরা।

একপর্যায়ে সাজিদের কাছে থাকা মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ কেড়ে নেয় এবং ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। তিনি টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তারা সাজিদের বড় ভাই সুমনকে কল দিতে বলে। সাজিদ, সুমনকে কল দিয়ে ডেকে আনেন।

সুমন ঘটনাস্থলে আসার পর ওই যুবকরা তাৎক্ষণিক দুই হাজার টাকা দাবি করে। পরে সুমনকে আটকে রেখে সাজিদকে টাকা আনতে পাঠায় ওই যুবকরা। সাজিদ বের হয়ে বিষয়টি তার পরিচিত আকে বড় ভাইকে জানান। তিনি পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলে ওই যুবকরা পালিয়ে যায়।

সাজিদের অভিযোগ ওই যুবকরা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তারা নিজেদের ছাত্রলীগের ‘বড় নেতা’ বলে পরিচয় দিয়েছে। একজনের নাম দিনার বলেও জানান তিনি।

সাজিদের বড় ভাই সুমন বলেন, আমি সাজিদের কল পেয়ে দ্রুত প্রাইভেট সেন্টারে আসি। রুমে আসতে কয়েকজন যুবক আমার সঙ্গে উচ্চবাচ্য করে এবং এখানে মাদকের ব্যবসা হয় বলে অভিযোগ করে চাঁদা দাবি করেন।

তিনি বলেন, পরে আমরা বাধ্য হয়ে টাকা দিতে রাজি হলে তারা আমাকে আটকে রেখে সাজিদকে টাকা আনার জন্য বাহিরে পাঠায়। সাজিদ কৌশলে পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে আসে। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মোবাইল দিয়ে তারা দ্রুত চলে যায়। এসময় তারা একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে যায়। টানা জোগাড় হলে ওই নম্বরে কল দিতে বলে।

ওই নম্বরে যোগাযোগ করা হলে দিনার পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি বলেন, ‘আজ আমার বাবার মৃত্যুবার্ষিকী ছিলো। আমি বাসা থেকে বেরই হয়নি। এটি একটি মিথ্যা অভিযোগ।’ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত কিনা জানতে চাইলে তিনি নিজেকে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সদস্য বলে পরিচয় দেন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত মির্জাপুর পুলিশ ফাঁড়ি উপ-পরিদর্শক সিদ্দিক হুসাইন বলেন, ‘ঘটনাটি শুনে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। তবে দুস্কৃতিকারিরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়। ভুক্তভোগীদের থানায় লিখিত অভিযোগ করতে বলেছি। তারা লিখিত অভিযোগ করলে আমরা ব্যবস্থা নেব।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান বলেন, ‘একজন সংবাদ কর্মীর মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক মতিহার থানা পুলিশকে জানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই শিক্ষার্থীকে মুক্ত করেছে। তারা লিখিত অভিযোগ দিলে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’


শর্টলিংকঃ