নাটোরে চাষীদের সুগার মিল অবরোধের ঘোষণা


ইউএনভি ডেস্ক:

চরম অর্থ সংকটে সময় পার করছে নাটোর সুগার মিল। আখচাষীরা আগামী ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাদের পাওনা আখের মূল্য না পেলে মিলের আটটি সাবজোনে তালা লাগিয়ে দিয়ে মিল অবরোধের ঘোষণা দিয়েছেন।


নাটোর সুগার মিলের আখচাষী ও সিবিএ সূত্রে জানা গেছে, গত এপ্রিল মাসের পর থেকে আর কোনো বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না মিলে কর্মরতরা। এর আগে শ্রমিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকে ১৮ কোটি টাকার ধার নিয়ে বেতন-ভাতা দেয়া হয়েছিল। মিলের গত মৌসুমে কেনা ২৬ কোটি টাকার আখের মধ্যে এখনও চাষীদের পাওনা রয়েছে ১০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

শ্রমিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসর ভাতার বকেয়া পাওয়া রয়েছে ২৩ কোটি টাকা। তিন যুগের পুরাতন মিলের কারখানা মেরামতসহ নানা কাজে মিল চালু করতে প্রয়োজন আরও প্রায় ৫ কোটি টাকা। এর ওপরে আবার ব্যাংক লোনের বিশাল বোঝা তো রয়েছেই। গত বছর চার মাস মাড়াই মৌসুম থাকলেও এবার আখের অভাবে দুই মাসের বেশি মিল চালু রাখা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

পানিতে ডুবে যাওয়ায় এবার আখের ফলন ভালো হওয়ার কোনো সম্ভাবনা যেমন নেই, তেমনি টাকা পরিশোধ না করায় চাষীরা মিলে আখ সরবরাহের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। প্রতি বছরই কমছে আখচাষের পরিমাণ। চাষীরা মিলে আখ সরবরাহ না করে গুড় তৈরিকেই বেশি লাভজনক মনে করছেন। গত কয়েক বছরে উৎপাদিত প্রায় ৪৮ কোটি টাকা মূল্যের আট হাজার টন চিনি অবিক্রীত পড়ে থাকলেও সেগুলো বিক্রি না করে বিদেশ থেকে চিনি আমদানি করা হচ্ছে। চাষীরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে নাটোর সুগার মিল স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যেতে আর বেশি দিন বাকি নেই।

আখচাষী ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মো. মোসলেম উদ্দিন বলেছেন, দীর্ঘদিন থেকে নাটোর সুগার মিল কর্তৃপক্ষ চাষীদের পাওনা পৌনে ১১ কোটি টাকা পরিশোধ না করায় আগামী ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাদের পাওনা আখের মূল্য না পেলে মিলের আটটি সাবজোনে তালা লাগিয়ে দিয়ে মিল অবরোধ করে জনসমাবেশ করবেন।

মিলের সিবিএ সভাপতি ফিরোজ আলী বলেছেন, গত এপ্রিল মাসের পর থেকে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না মিলে কর্মরতরা। এই করোনাকালে বেতন-ভাতা না পেয়ে মিলের শ্রমিক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা খুবই সংকটে রয়েছেন। কেউ অবসরে গেলেও টাকা না দিয়ে সমমূল্যের চিনি নিতে বলা হচ্ছে; যা খুবই কষ্টকর।

নাটোর সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম আখচাষীর পাওনা, অবসর ভাতা না পাওয়াসহ এসব ঘটনার সতত্যা স্বীকার করলেও বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান সনৎ কুমার সাহা এসব বিষয়ে কোনো কিছুই জানেন না বলে জানান।


শর্টলিংকঃ