নিয়োগের শর্ত মানেন নি টিসিবি’র ৮৩ ডিলার


জিয়াউল গনি সেলিম :

বাণিজ্যিক অডিট অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ‘ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবি’র ডিলারশীপ নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন রাজশাহী বিভাগের ৮৩ ডিলার। গত কয়েক বছর হতে তারা আর পণ্য তুলছেন না’। আর ইউনিভার্সাল২৪নিউজের অনুসন্ধানে ধরা পড়েছে, এসব ডিলারের বেশির ভাগই নিয়োগ পেয়েছিলেন শর্ত না মেনেই ।

 রাজশাহী নিউ মার্কেটের গার্মেন্ট ব্যবসায়ী আবু সালেক খান মেসার্স কিডস্ পার্কের মালিক। মার্কেটের দ্বিতীয় তলার ১০৬ নম্বর দোকানে তার এই ব্যবসা। এই গার্মেন্ট দোকানের নামেই ২০০৯ সালে ২০ মে টিসিবি’র ডিলার হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হন সালেক খান। ২০১৫ সালের ১৯ মে তার চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে। কিন্তু কয়েক বছর ধরে পণ্য না তুললেও টিসিবির তালিকায় এখনো ডিলার তিনি। টিসিবির ডিলারশীপ নিয়োগের প্রধান শর্ত, মুদিখানার দোকান থাকতে হবে। কিন্তু এখানে মুদি দোকানের কোনো নিশানাও নেই।

আবু সালেক খান অবশ্য স্বীকার করেছেন, তিনি মুদি ব্যবসা করেন না। ডিলারশীপ নেয়ার পর দোকান ভাড়া নিয়ে তিনি টিসিবির পণ্য তুলেছিলেন কয়েকবার। কিন্তু লাভ  না হওয়ায় আর পণ্য তুলেন  না। টিসিবির সঙ্গে  আর ব্যবসা করতে চান না তিনি।

কেবল সালেক খানই নয়।  অনুসন্ধানে বেরিয়ে এলো নগরীর বালিয়াপুকুর বটতলা এলাকায় ডিলারশীপ রয়েছে রিপন ভ্যারাইটিজ স্টোরের নামে। দোকানের মালিক নাজির হোসেন মন্টু। অথচ শর্ত ভেঙে এই দোকানের নামে ২০০৯ সালে টিসিবি’র ডিলারশীপ নিয়েছেন ভিন্ন সংসারে থাকা তার ভাই রড-সিমেন্ট ব্যবসায়ী মজনুর রহমান মানিক। তিনিও কয়েক বছর ধরে আর পণ্য তোলেন না। মানিক এখন মূল ব্যবসাই ছেড়ে দিয়েছেন-জানালেন তার ভাই। নাজির হোসেন মণ্টু।

ফলে এসব মওসুমী ডিলারের কারণে কম দামে সরকারী পণ্য কেনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে নিম্নআয়ের মানুষ। বছরের পর বছর ধরে চলছে এ অবস্থা।  এরকম শর্ত ভেঙে গা ঢাকা দেয়া অন্তত ৮৩জন ডিলারকে শনাক্ত করেছে বাণিজ্যিক অডিট অধিদপ্তর। এসব ডিলারের মেয়াদ শেষ হয়ে হয়েছে ২০১৩ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে। খেলাপিদের ডিলারশীপ বাতিলের সুপারিশ করে গত বছরের২৮ আগস্ট টিসিবিকে চিঠিও দিয়েছে তারা। এর প্রায় সাত মাস পর চলতি বছরের মার্চে খেলাপিদের কারণ দর্শানোর চিঠি পাঠিয়েছে টিসিবি।  ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, জবাব সন্তোষজনক না হলে বাতিল হবে ডিলারশীপ।

এ বিষয়ে টিসিবির রাজশাহী আঞ্চলিক প্রধান প্রতাপ কুমার ইউনিভার্সাল২৪নিউজকে জানান, খেলাপি ডিলাররা কখনো নিজেদের সমস্যা কী তা আমাদের জানান নি।  তারা কেন পণ্য তুলছেন না তাও আমাদের জানা নেই। তবে আইন অনুযায়ী এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে


শর্টলিংকঃ